সংক্ষিপ্ত


পরাধীন ভারতের শেষ ভাইসরয় লর্ড মাউন্টব্যাটেন (Lord Mountbatten) এবং তার স্ত্রী লেডি মাউন্টব্যাটেনের (Lady Mountbatten) ডায়েরি এবং কিছু চিঠিপত্র গোপন রাখতে ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৬ কোটি টাকা খরচ করছে যুক্তরাজ্য। কী এমন আছে সেই নথিপত্রে?

ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৬ কোটি টাকা। পরাধীন ভারতের শেষ ভাইসরয় লর্ড মাউন্টব্যাটেন (Lord Mountbatten) এবং তার স্ত্রী লেডি মাউন্টব্যাটেনের (Lady Mountbatten) ডায়েরি এবং দুজনের মধ্যে চালাচালি হওয়া কিছু চিঠিপত্র গোপন রাখতে এই এত পরিমাণ টাকা খরচ করছে যুক্তরাজ্য। কাগজগুলো যাতে সামনে না আসে তার জন্য মরিয়া তারা। কেন? কী আছে সেই সব নথিপত্রে? শোনা যাচ্ছে, সেইসব সামনে এলে ব্রিটিশ রাজপরিবারের (British Royal Family) বদনাম হতে পারে। এছাড়া, ভারত (India) ও পাকিস্তানের (Pakistan) সঙ্গে তাদের সম্পর্কও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা যুক্তরাজ্য (United Kingdom) সরকারের। 

ব্রিটিশ লেখক অ্যান্ড্রু লোনি (Andrew Lownie) এই দুটি ডায়েরি এবং চিঠিপত্রগুলি প্রকাশের জন্য আইনি লড়াইয়ের পথে গিয়েছিলেন। সেই মামলায় হেরে গিয়ে আদালতে দাঁড়িয়ে সম্প্রতি ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৬ কোটি টাকা দিয়েও, সেই নথিগুলি তারা গোপন রেখেছে। কী থাকতে পারে সেইসব ডায়েরি, চিঠিতে? তা বুঝতে হলে একটু লর্ড এবং লেডি মাউন্টব্যাটেন সম্পর্কে বলা দরকার। 

মাউন্টব্যাটেন ছিলেন ব্রিটেনের রানী ভিক্টোরিয়ার (Queen Victoria) নাতি। অর্থাৎ তিনি ছিলেন ব্রিটিশ রাজ পরিবারেরই একজন সদস্য। রাজ পরিবারের অন্যান্য গর্বিত সদস্যের মতো তিনিও রয়্যাল নেভি-তে যোগ দিয়েছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের (World War II) সময় তিনি ব্রিটিশ নৌবাহিনীর (Royal British Navy) কমান্ডার ছিলেন। পরবর্তীকালে ব্রিটিশ রাজ পরিবারের বিভিন্ন পদে অধিষ্ঠিত হন। তবে তাঁর জীবনের সবথেকে স্মরণীয় ঘটনা হল, তিনিই ছিলেন ব্রিটিশ ভারতের শেষ ভাইসরয়। 

তবে তারও অনেক আগে, ১৯২২ সালেই দিল্লিতে লর্ড মাউন্টব্যাটেনের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল এডউইনা (Edwina) নামে এক তরুণীর। তারপরে তা গড়ায় প্রেমে এবং তাঁরা বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁদের, বিবাহিত জীবনে অনেক উত্থান-পতন ছিল বলে শোনা যায়। দুজনেরই বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল বলে গুজব রয়েছে। অন্য লোকের সাথে সম্পর্ক ছিল।

লেডি মাউন্টব্যাটেনের ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের অন্যতম ছিলেন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু (Jawaharlal Nehru)। ওয়ার্ল্ড ইন ওয়ান নিউজ পোর্টালের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, নেহেরুকে লেখা একটি চিঠিতে লেডি মাউন্টব্য়াটেন লিখেছিলেন, 'আজ সকালে তোমাকে চলে যেতে দেখতে আমার ভাল লাগছিল না। তুমি আমাকে এক অদ্ভুত শান্তির অনুভূতি দিয়ে চলে গেলে। সম্ভবত, আমিও তোমাকে সেটাই দিতে পেরেছি?' আর সেই চিঠির উত্তরে নেহেরু নাকি লিখেছিলেন 'জীবন নিরানন্দেরই হয়'।

লেডি মাউন্টব্যাটেন এবং নেহরুর ঘনিষ্ঠতা বেশ চর্চিত বিষয়। তাছাড়া ব্রিটিশরা বেশি করে গোপন রাখতে চাইছে দেশভাগের সময়কার নথিপত্রগুলি। হয়তো সেথানে কোনো নির্মম সত্য লুকিয়ে রয়েছে। আর এই দুই জীবন রসিক নরনারীর চিঠি-পত্রে হয়তো অনেক কেলেঙ্কারি লুকিয়ে আছে। সব মিলিয়ে এইসব নথি কিন্তু  ঐতিহাসিক সম্পদ।