সংক্ষিপ্ত

মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় বাজেট ২০২২-২৩'কে (Union Budget 2022) পেশ করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ (Nirmala Sitharaman)। দেড় ঘন্টার বক্তৃতায় কী বললেন তিনি, দেখুন।

অর্থমন্ত্রী হিসাবে, মঙ্গলবার চতুর্থ বাজেট পেশ করলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। সংসদে সকাল ১১টায় তিনি বাজেট বক্তৃতা দেওয়া শুরু করেন। চলমান কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যে নরেন্দ্র মোদী সরকারের দশম বাজেট, দ্বিতীয়বারের জন্য ছিল একেবারে কাগজবিহীন। প্রায় দেড় ঘন্টা ধরে বক্তৃতা দেন নির্মলা সীতারমণ। ব্যক্তিগত আয়করের ক্ষেত্রে কোনও পরিবর্তন না ঘটানো হলেও, শুল্ক থাড়ার মাধ্যমে বেশ কয়েকটি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমানো হয়েছে। একই সঙ্গে গোটা বাজেটে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। ৪০টি পয়েন্টে এক নজরে দেখে নিন বাজেট বক্তৃতায় কী কী ঘোষণা করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী - 

১. চলতি আর্থিক বছরে ভারতের বৃদ্ধি অনুমান করা হয়েছে ৯.২%, যা বিশ্বের বৃহৎ অর্থনীতিগুলির মধ্যে সর্বোচ্চ।

২. আয়কর রিটার্নের (Income Tax returns) ক্ষেত্রে, এখন থেকে বাদ দেওয়া এবং ঘোষিত আয়ের রিপোর্ট না করার মতো ভুল সংশোধন করা যাবে।

৩. ট্যাক্স প্রদানের ক্ষেত্রে মূল্যায়নের বছরের শেষ থেকে পরের দুই বছরের মধ্যে একবার পরিবর্তনগুলি করা যাবে।

৪. যেকোনো দীর্ঘমেয়াদী মূলধনের লাভ স্থানান্তরের উপর সারচার্জ ১৫ শতাশে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে।

৫. কর্পোরেটদের সঙ্গে করের হারে সমতা আনতে সমবায়গুলির জন্য ন্যূনতম বিকল্প করের (Minimum Alternate Tax) হার কমিয়ে ১৮.৫ % করা হয়েছে।

৬. ১-১০ কোটি টাকার মোট আয়ের সমবায়গুলির জন্য সারচার্জ জন্য ১২ % থেকে কমিয়ে ৭ % করা হয়েছে।

৭. বাজেট নতুন কর্পোরেট কর ব্যবস্থার অধীনে প্রাপ্ত সুবিধাগুলির মেয়াদ ৩১ মার্চ, ২০২৪ পর্যন্ত বাড়িয়েছে।

৮. ৩১ মার্চ, ২০২৩ পর্যন্ত তৈরি হওয়া নতুন উত্পাদন সংস্থাগুলির জন্য সরকার ১৫ % হারে কর্পোরেট কর ঘোষণা করেছে।

৯. কর সুবিধা পাওয়ার জন্য স্টার্টআপগুলির অন্তর্ভুক্তির মেয়াদও এক বছর বাড়িয়ে ৩১ মার্চ, ২০২৩ করা হয়েছে।

১০. তালিকাবিহীন শেয়ারের উপর সারচার্জ ২৮.৫ % থেকে কমিয়ে ২৩ শতাংশ করা হয়েছে। এই পদক্ষেপটি স্টার্টআপ এবং ইউনিকর্ন থেকে প্রস্থান সহজ করবে।

১১. লেনদেনের উপর নজর রাখতে ডিজিটাল সম্পদ ব্যবহার করে করা অর্থপ্রদানের জন্য ক্ষেত্রে আরও ১ % টিডিএস কাটা হবে।

১২. ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ থেকে লাভের উপর ৩০% কর ধার্য করা হবে। তবে, লোকসান হতে দেওয়া হবে না।

১৩. কেন্দ্রীয় ও রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের ট্যাক্স ডিডাকশনের সীমা ১০ % থেকে বাড়িয়ে ১৪ % করা হয়েছে।

১৪. এর ফলে রাজ্য সরকারী কর্মচারীদের সামাজিক নিরাপত্তাগত সুবিধাগুলি কেন্দ্রীয় সরকারির কর্মচারীদের সমান হবে৷

১৫. লাইফ ইন্স্যুরেন্স কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া বা এলআইসি আইপিও-র কাজ চলছে এবং শীঘ্রই বাজারে আসবে। 

১৬. ২০২২-২৩ সালের মধ্যে ইলেকট্রনিক চিপ-সহ ই-পাসপোর্ট চালু করা হবে৷ এতে গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা-সম্পর্কিত তথ্য এনকোড করা থাকবে।

১৭. আগামী তিন বছরে ভারতে ৪০০ টি নতুন শক্তিশালী ও দক্ষ বন্দে ভারত ট্রেন তৈরি করা হবে।

১৮. রেল সেক্টরে 'এক স্টেশন এক পণ্য' প্রকল্পের বিকাশ করা হবে। এর ফলে, যা রেলপথে স্থানীয় পণ্য পরিবহনে সুবিধা হবে।

১৯. বুকিং এবং কো-অর্ডিনেশনের জন্য প্রাকৃতিক গ্যাস ট্রান্সমিশন সেক্টরে একটি স্বাধীন সিস্টেম অপারেটর স্থাপন করা হবে।

২০. আরও এক কোটি পরিবারকে উজ্জ্বলা প্রকল্পের সুবিধা দেওয়া হবে।  এলপিজির মাধ্যমে দরিদ্র পরিবারগুলিতে পরিষ্কার রান্নার জ্বালানী সরবরাহ করার লক্ষ্যে এই প্রকল্প চালু করা হয়েছিল৷

২১. মহিলাদের ক্ষমতায়নের জন্য, মিশন শক্তি, সক্ষম অঙ্গনওয়াড়ির মতো প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। সক্ষম অঙ্গনওয়াড়ির আওতায় দুই লক্ষ অঙ্গনওয়াড়ির কর্মীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

২২. বাজেটে বলা হয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষ থেকে আরবিআই ব্লকচেইন এবং অন্যান্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডিজিটাল রুপি চালু করবে। 

২৩. কেন্দ্রীয় বাজেট ২০২২-২৩'এ, সরকারের ব্যয় বরাদ্দ বাড়িয়ে ৭.৫ লক্ষ কোটি টাকা করা হয়েছে। ২০২১-২২ সালে ব্যয় বরাদ্দ ছিল ৫.৫ লক্ষ কোটি টাকা।

২৪. তথ্য কেন্দ্র এবং শক্তি সঞ্চয় ব্যবস্থা পরিকাঠামো ক্ষেত্রকে সুসংগত তালিকার অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এর মধ্যে থাকবে ডেন্স চার্জিং ইনফ্রা এবং গ্রিড স্কেল সিস্টেম।

২৫. উচ্চ-দক্ষ সৌর মডিউল তৈরির লক্ষ্যে উৎপাদন ক্ষেত্রে লগ্নির জন্য অতিরিক্ত ১৯,৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। 

২৬. ডিজিটাল সম্পদ স্থানান্তরের উপর ৩০ % কর ধার্য করা হয়েছে। ডিজিটাল সম্পদ উপহার দিলেও এই কর দিতে হবে। এর মধ্যে ভার্চুয়াল এবং ডিজিটাল সম্পদ বিক্রি বা অধিগ্রহণ থেকে আয়ও অন্তর্ভুক্ত।

২৭. ইন্টারনেট, টিভি, মোবাইল এবং রেডিওর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বিদ্যা যোজনার অধীনে ১-১২ শ্রেণির পরিপূরক শিক্ষার জন্য একটি টিভি চ্যানেল চালু করা হবে।

২৮. পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) এবং পর্যটন ও লজিস্টিকস ব্যবসার উন্নয়নে জাতীয় রোপওয়ে উন্নয়নের অধীনে পার্বতমালা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭টি রোপওয়ে নেটওয়ার্ক তৈরি করা হবে।

২৯. রাসায়নিক মুক্ত-প্রাকৃতিক চাষ, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে বাজরা পণ্যের ব্র্যান্ডিং, ফসল মূল্যায়নের জন্য কিষাণ ড্রোন ব্যবহারের কতা বলা হয়েছে।

৩০. কৃষির জন্য আর্থিক স্টার্টআপ, কেন-বেতওয়া নদী-আন্তঃসংযোগ এবং আরও পাঁচটি নদী-আন্তঃসংযোগ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।

৩১. স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য একটি ওপেন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হবে। আইআইআইটি হায়দ্রাবাদ থেকে প্রযুক্তিগত সহায়তায় এবং নিমহ্যাানস (NIMHANS)-এর সঙ্গে জাতীয় টেলি-মানসিক স্বাস্থ্য প্রোগ্রাম চালু করা হবে।

৩২. উত্তর-পূর্বের জন্য পিএম ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ, যুব ও মহিলাদের জীবিকা অর্জনে সক্ষম করার কার্যক্রমের জন্য ১৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

৩৩. কম জনসংখ্যার সীমান্তবর্তী গ্রামগুলিতে ভাইব্রেন্ট ভিলেজ প্রোগ্রামের আওতায় উন্নয়ন হবে।

৩৪. ১০০ শতাংশ পোস্ট অফিসকে কোর ব্যাঙ্কিং সিস্টেমের আওতায় আনা হবে। গ্রামীণ এলাকায় আর্থিক অন্তর্ভুক্তির জন্য পোস্ট অফিস এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলিকে সংযুক্ত করা হবে।

৩৫. ২০৪৭ সালের কথা মাথায় রেখে নগর পরিকল্পনার সুপারিশ করার জন্য একটি উচ্চ-স্তরের কমিটি গঠন করা হয়েছে। বৈদ্যুতিক যানবাহনের পরিকাঠামো উন্নত করা হবে।

৩৬. প্রতিরক্ষা আমদানি হ্রাস করা হবে। দেশীয় অস্ত্র নির্মাতাদের কাছ থেকেই সেনাবাহিনী ৬৮ শতাংশ সামরিক সরঞ্জাম কিনবে। গত বছরের থেকে এই বরাদ্দ ১০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। 

৩৭. অ্যানিমেশন, ভিজ্যুয়াল এফেক্টস, গেমিং এবং কমিকস সেক্টর-এ দারুণ সম্ভাবনা দেখছে সরকার। এই চারটি ক্ষেত্রকে একত্রিত করে এভিজিসি (AVGC)-র উন্নয়নের জন্য একটি টাস্ক-ফোর্স গঠন করা হবে।

৩৮. রপ্তানি বাড়াতে চিংড়ির উপর শুল্ক কমানো হয়েছে। 

৩৯. সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রকের জন্য ২০২২-২৩ কেন্দ্রীয় বাজেটে ৫০২০.৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। আগের অর্থবছরের থেকে ৬৭৪.০৫ কোটি টাকা বেশি।

৪০. কাটা এবং পালিশ করা হীরা এবং রত্নপাথরের আমদানি শুল্ক 7.5% থেকে কমিয়ে 5% করা হয়েছে।