সংক্ষিপ্ত
৩.১ ট্রিলিয়নের অর্থনীতিতে শিক্ষাক্ষেত্রে কী কী বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হতে পারে, তার দিকেই তাকিয়ে রয়েছে শিক্ষক থেকে পড়ুয়া ও অভিভাবক মহল।
অতিমারি কোভিড পরিস্থিতিতে (Covid 19) পড়াশুনার চালচিত্র একেবারেই বদলে গিয়েছে। ছোট থেকে বড় সকলেরই এখন ভরসা অনলাইন এডুকেশন (Online Education)। বিগত দুই বছর ধরে করোনার দাপট অব্যাহত। স্বাভাবিকভাবেই অন্যান্য ক্ষেত্রর মত শিক্ষাক্ষেত্রেও করোনার প্রভাব পড়েছে। অনলাইন ক্লাসের জন্য বেড়েছে খরচের পরিমানও। পড়ুয়ারা এখন একপ্রকার গৃহবন্দিই বলা চলে। শারীরিক ক্লাস বন্ধ থাকার দরুণ পঠনপাঠনের অন্যতম ভরসা অনলাইন ক্লাস। সেই জন্যই তাই আসন্ন ইউনিয়ন বাজেটে শিক্ষাক্ষেত্রের ওপর দেওয়া হবে বিশেষ নজর। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ সংসদে পেশ করবেন ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের বাজেট। ৩.১ ট্রিলিয়নের অর্থনীতিতে শিক্ষাক্ষেত্রে কী কী বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হতে পারে, তার দিকেই তাকিয়ে রয়েছে শিক্ষক থেকে পড়ুয়া ও অভিভাবক মহল।
ই-লার্নিং-এ ফোকাস (E-Learning)
অতিমারি পরিস্থিতিতে ই-লার্নিং -এর ওরপর বিশেষভাবে জোড় দেওয়া হবে। বর্তমানে গোটা শিক্ষাক্ষেত্রই অনলাইন নির্ভর হয়ে পড়েছে। তাই ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের বাজেট থেকে শিক্ষাক্ষেত্র আসা করছে শিক্ষাক্ষেত্রে বিনিয়োগের পরিমান বৃদ্ধি করা হবে এবং করের ওপর ছাড় দেওয়া হবে। উল্লেখ্য, ২০২১ সালে অতিমারি পরিস্থিতির জন্য অন্যান্য খাতে বেশি বিনিয়োগের জন্য শিক্ষাক্ষেত্রে বিনিয়োগ প্রায় ৬ কোটি পর্যান্ত কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মহামারি আজ যেন মানুষের জীবনের একটা অঙ্গ হয়ে উঠেছে। আর তার ফলে অনলাইন পড়াশুনা বা ই-লার্নিং-এর মেয়াদও ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই জন্যই কেন্দ্রের তরফে ন্য়াশনাল ডিজিটাল এডুকেশনাল আর্কিটেকচারও তৈরি করা হচ্ছে। এটি জাতীয় শিক্ষা নীতিকে আরও উন্নত করার জন্য ডিজিটাল পরিকাঠামোকে শক্তিশালী করে তুলতে সাহায্য করবে।
জিএসটি-তে ছাড়ের আবেদন (GST Discount)
শিক্ষাক্ষেত্রে জিএসটি এখনও অব্যাহত। স্কুল গুলো জিএসটি-র আওতা থেকে মুক্ত কিন্তু আধুনিক প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী শক্তি ভিত্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে এখনও ১৮ শতাংশ পর্যন্ত জিএসটি দিতে হয়। বর্তমানে অনলাইন শিক্ষা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। তাই অনলাইন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির দাবি করা হয়েছে, যাতে শিক্ষাখাতে করের বোঝা কমানো হয়। করের বোঝা কমলে অনেকটা কম খরচে শিক্ষাক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নানান পণ্য ও পরিষেবা প্রদাম করা সম্ভব হবে। সেই সঙ্গে সমাজের সব স্তরের পড়ুয়াদের মধ্যে অনলাইন শিক্ষা পৌঁছে দেওয়া যাবে এবং শিক্ষার্থীরাও ই-লার্নিং-এ অনেক বেশী আগ্রহী হয়ে উঠবে।
হাইব্রিড শিক্ষা ব্যবস্থা তৈরির আর্জি (Hybrid education Model)
২০২০ সালেই জাতীয় শিক্ষানীতিতে উচ্চশিক্ষায় অনলাইন বা হাইব্রিড মডেলের সংযোজনের কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। অতিমারি পরিস্থিতি পরবর্তী সময়ও এই মডেল অব্যাহত থাকবে বলে জানান হয়েছিল। কিন্তু হাইব্রিড মডেল সংযোজনের ক্ষেত্রে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে স্লো নেটোয়ার্ক। এর ফলে অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থা বেশ কিছুটা ব্যহত হচ্ছে। সেই সঙ্গে ক্রমশ বাড়ছে মোবাইল ডাটার খরচ। তাই কম খরচে হাইস্পিড ইন্টারনেট পরিষেবা দেওয়ার দিকেও নজর দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের ইউনিয়ন বাজেটে।
সাইবার সুরক্ষার দিকে নজর দেওয়ার আবেদন (Cyber Security)
অতিমারি পরিস্থিতির জেরে এখন সব বয়সের পড়ুয়াদের হাতে রয়েছে স্মার্টফোন আর ইন্টারনেট। পড়ুয়ারা যাতে কোনওভাবেই অভিভাবকদের চোখের আড়ালে ইন্টারনেটের অপব্যবহার করতে না পারে সেই জন্য শক্তিশালী সাইবার সিকিউরিটির প্রয়োজন। ইন্টারনেটের হাত ধরে উঠতি বয়েসের বাচ্চারা কীভাবে অন্ধকার জগতে প্রবেশ করে সেই নজির নেহাতই কম নয়। তাই অনলাইন শিক্ষার যুগে সাইবার সিকিওরিটি অত্যাবাশ্যক। সেই জন্যই ইউনিয়ন বাজেটে সাইবার সিকিওরিটির খাতে টাকা বরাদ্দের জন্য আবেদন জানান হয়েছে।
স্টার্টআপ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির বিশেষ ফান্ডের আশা (Startup Education Organization)
করোনা পরিস্থিতি যেহেতু অব্যাহত সেই জন্য কেন্দ্রের কাছে প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির জন্য একটি নিয়ামক সংস্থা গঠনের আবেদন জানিয়েছে। এই সংস্থা শিক্ষার মান থেকে খরচ, সমস্ত বিষয়ের উপরই নজর রাখবে। অন্যদিকে শিক্ষাক্ষেত্রের স্টার্টআপ সংস্থাগুলি কেন্দ্রের কাছে বিশেষ ফান্ডেরও একটা আশা রাখছে, যা ছোট সংস্থাগুলিকে আর্থিক প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে।