সংক্ষিপ্ত
গতবছর করোনা পরিস্থিতিতে প্রায় ২৬ হাজার ৩৩৮ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে ভারতীয় রেলের। ইউনিয়ন বাজেটে এই বিরাট ঘাটতি মেটানোর জন্য একটা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। মালবাহী ট্রেনের জন্য ফ্রেট করিডর যাতে বাড়ানো যায় সেই দিকেও ফোকাস করা হবে।
আর মাত্র কয়েকদিনের অপেক্ষা। তারপরই সংসদে পেশ হবে কেন্দ্রের ইউনিয়ন বাজেট (Union Budget)। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ 9Nirmala sitaraman) ১ ফেব্রুয়ারি পেশ করবেন ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের ইউনিয়ন বাজেট। অতিমারি পরিস্থিতিতে (Covid 19) পেশ হতে চলা আসন্ন বাজেটকে ঘিরে বিভিন্ন মহলের উদ্বেগ ক্রমশ বাড়ছে। ঠিক সেই রকমই রেল বাজেটকে (Rail Budget) ঘিরেও তৈরি হচ্ছে নানান রকম প্রত্যাশা। বিভিন্ন সেক্টেরের মধ্যে রেলও যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সেক্টর সে কথা নিশ্চই বলার অপেক্ষা রাখে না। সাধারণ মানুষের জীবনের সঙ্গে ওতোপ্রতোভাবে জড়িয়ে রয়েছে রেল। তাই রেলযাত্রীদের সুবিধা-অসুবিধার দিকটি বিবেচনা করেই ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে রেল বাজেটে একাধিক পদক্ষেপ গৃহিত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, আগে সাধারণ বাজেট ও রেল বাজেট পৃথকভাবে পেশ করা হত। তবে বর্তমানে সেই নিয়মের বদল ঘটেছে। ইউনিয়ন বাজেটের সঙ্গে রেল বাজেটও পেশ করা হয়ে থাকে। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে রেল বাজেটের জন্য কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণের ঝুলিতে কী রয়েছে সেটা তো সময়ই বলবে।
অতিমারি পরিস্থিতিতে গত বছর আর্থিকভাবে চূড়ান্ত ক্ষতি হয়েছে (Financial Loss) রেলের। প্রায় ২৬ হাজার ৩৩৮ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে ভারতীয় রেলের (Loss Recovery)। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের ইউনিয়ন বাজেটে এই বিরাট ঘাটতি মেটানোর জন্য (To Recover Loss) একটা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। তবে রেলের ভাড়া বৃদ্ধি করার কোনও পরিকল্পনা আপাতত নেই বলেই সুত্রের খবর। রেলযাত্রীদের পকেটে চাপ না বাড়িয়ে কী করে (Ticket Fair may Not Hike) গত বছরের ঘাটতি মেটানো সম্ভব সেই বিষয়টি নিয়েই ভাবনাচিন্তা করছে রেল। উল্লেখ্য, কোভিড পরিস্থিতির জেরে একটানা দীর্ঘদিন রেল পরিষেবা বন্ধ ছিল। লোকাল ট্রেন থেকে দূরপাল্লার ট্রেন, সব পরিষেবাই বন্ধ ছিল। সেক্ষেত্রে খুব স্বাভাবিকভাবেই একধাক্কায় রেলের আয়ও অনেকটা কমে গিয়েছে। অতিমারি পরিস্থিতিতে রেলের আয়ের একমাত্র উৎস ছিল মালবাহী ট্রেন। সেই জন্যই রেল বাজেটে মালবাহী ট্রেনের জন্য ফ্রেট করিডর (Frick Coridoor) যাতে বাড়ানো যায় সেই দিকে বিশেষভাবে ফোকাস করা হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ। ট্রেন চালানোর ক্ষেত্রে সৌরশক্তির ব্যবহার বাড়ানো হতে পারে। মনে করা হচ্ছে, ডিজেল বা বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে সৌরশক্তির সাহায্য নেওয়ার কথা উল্লেখ করা হতে পারে বাজেটে। বলা বাহুল্য, এর ফলে দূষণের পরিমানও অনেকটা কমবে।
আরও পড়ুন-রেলযাত্রী থেকে কর্মী, যাত্রী সুবিধার্থে রাত ১০ টার পর একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করল ভারতীয় রেল
ভোচমুখী পাঁচ রাজ্যগুলোর জন্য রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও দৃঢ় করা হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। মেট্রো শহরগুলোতেও রেল পরিষেবার ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করা হতে পারে। আরও একটি বিষয় আসন্ন বাজেট থেকে অনুমান করা হচ্ছে, সেটি হল রেলের বেশ কিছু প্রকল্প মোদী সরকার বেসরকারীকরণের মাধ্যমে বাস্তবায়িত করতে পারে। চলতি অর্থবর্ষের রেল বাজেটে রেল ডেভেলপমেন্ট অথরিটি তৈরি করতে পারে মোদী সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারকে রেল সংক্রান্ত সঠিক পরামর্শ দেওয়ার জন্যই এই অথরিটি তৈরি করতে পারেন। দেশের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রগুলির সঙ্গে রেলের সংযোগ বৃদ্ধি করার ব্যাপারেও বাজেটে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহন করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রের ইউনিয়ন বাজেটে ৫০০ টি মত রেলওয়ে স্টেশনকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর কথা উল্লেখ থাকতে পারে। এছাড়াও অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি কোচ যুক্ত করা হতে পারে ট্রেনগুলোতে। আসন্ন ইউনিয়ন বাজেটে ১০টি নতুন ট্রেনের ঘোষণাও করা হতে পারে। এছাড়াও ইউনিয়ন বাজেটে হাই স্পিড রেল নেটওয়ার্ককে নিয়েও বড় ঘোষণা করা হতে পারে।