সংক্ষিপ্ত

তাঁর জীবনবোধ বা জীবনের প্রতি মূল্যায়নের ক্ষমতা চমকে দিতে পারে, যে কোনও তাবড় ব্যক্তিত্বকে। ইউপিএসসি পরীক্ষাকে শুধু মাত্র পরীক্ষা হিসেবে দেখেননি ইশা।

অবলীলায় ছেড়েছেন ২০ লক্ষ টাকা প্যাকেজের চাকরি। ফিরেও তাকাননি সেদিকে। নাম করা ল ফার্মে চাকরি করার দারুণ অফার ছিল তাঁর কাছে। তবে যাঁর নজর মাতৃভূমির সেবা করা, তাঁকে যে অর্থ টলাতে পারবে না, তা বলাই বাহুল্য। তিনি ইশা সিং (Isha Singh)। ইউপিএসসি পরীক্ষার (UPSC Exam) এই কৃতী ইতিমধ্যেই সাড়া ফেলেছেন, তাঁর একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়ে। পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (Public Service Commission) বা ইউপিএসসির কড়া গন্ডি টপকে ১৯১তম (Rank 191) স্থান পেয়েছেন ইশা।

তাঁর জীবনবোধ বা জীবনের প্রতি মূল্যায়নের ক্ষমতা চমকে দিতে পারে, যে কোনও তাবড় ব্যক্তিত্বকে। ইউপিএসসি পরীক্ষাকে শুধু মাত্র পরীক্ষা হিসেবে দেখেননি ইশা। তাঁর কাছে এই পরীক্ষা জীবন গঠনে সহায়ক। নিজের চারপাশকে ভালো করে বোঝা থেকে শুরু করে অন্যদের বিশেষ করে সমাজের দুর্বল শ্রেণীর মানুষকে সাহায্য করতে শেখায়। 

ইশা সিং জানাচ্ছেন গুরুত্বপূর্ণ সব কাজ ছেড়ে তিনি ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেননি। বরং সব কাজ করতে করতেই এই পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছেন। এতে মানসিক গঠন থেকে পরীক্ষার জন্য তৈরি হওয়ার পথ অনেক প্রশস্ত হয়েছে তাঁর কাছে। ইশার মতে কোনও কাজ করা আপনার হাতে, ফলাফল সম্পর্কে চিন্তা করবেন না। যখন আপনি আপনার কাজে আগ্রহী হন, তখন এটি আপনার কাছে সংগ্রামের মতো মনে হয় না। আমরা আমাদের কাজের মাধ্যমে সমাজে পরিবর্তন আনতে পারি। যদি আমাদের কাজের ফলে কেউ ন্যায়বিচার পায়, তাহলেই আমরা সফল। 

ইউপিএসসি পরীক্ষার সফল এই কৃতীর মতে সংকীর্ণ মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসলেই জীবন গঠন সম্ভব। এশা সিং ছোটবেলা থেকেই তার বাবার কাজকে ঘনিষ্ঠভাবে দেখেছেন, কিভাবে তার বাবা জনসাধারণের সাথে সম্পর্কিত বিষয়ে আগ্রহ দেখাতেন। কীভাবে সাধারণ মানুষকে ন্যায়বিচার দিতে কাজ করতেন, অক্লান্ত পরিশ্রম করতেন তাঁর বাবা। 

সেখান থেকেই শিখেছিলেন তিনি। ঠিক তখনই তিনি ভারতীয় পুলিশ সার্ভিসে যোগদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তার স্বপ্ন এখন সত্যি হয়েছে। আইন পড়ার পর, তিনি তার মায়ের সাথে আইন অনুশীলন শুরু করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের বিধবাদের অধিকার আদায়ের লড়াই নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছিল। সেই লড়াইয়ে প্রথম থেকে ছিলেন তিনি। 

ইশা মনে করেন সমাজে নারীর ক্ষমতায়ন অত্যন্ত জরুরি। যে কোনও ক্ষেত্রে নারীর প্রতিনিধিত্ব গুরুত্বপূর্ণ, কারণ নারীদের সমস্যা ভিন্ন। কারাগারে যৌন নির্যাতনের সমস্যা রয়েছে। তাদের টাকা নেই। সকল বিভাগকে এগিয়ে এসে তাদের সমস্যা তুলে ধরতে হবে। সেই লক্ষ্যেই কাজ করতে চান ইশা সিং।