সংক্ষিপ্ত

সম্প্রতি বিশ্বস্ত সূত্রে একাধিকবার এই তথ্য সামনে এসেছে যে সরকারি স্বাস্থ্য দফতর থেকে  কোভিড ১৯-এর পরীক্ষার শংসাপত্র চাইতেই বিদেশ থেকে আসা বহু যাত্রী অর্থের বিনিময়ে ভুয়ো শংসাপত্র দেওয়ার কথা বলেছেন। এমনকী, বহু মানুষ এমন শংসাপত্রও দিয়েছেন যেগুলো ভেরিফাই করে দেখা গিয়েছে  তা ভুয়ো। 

কোভিড ১৯ পরীক্ষা নিয়ে কড়াকড়ি শুরু হতেই সক্রিয় হয়ে উঠেছে জালচক্র। যার জেরে শুক্রবার মুম্বই পুলিশ কোভিড ১৯-এর ভুয়ো শংসাপত্র দেওয়া এক জাল চক্রের পর্দা ফাঁস করেছে। গ্রেফতার করা হয়েছে বছর ৩৬-এর যুবককে। যে এই জাল চক্রের মাথা হিসাবে কাজ করছিল বলে পুলিশের দাবি। মাত্র ১ হাজার টাকা দিলেই হাতে হাতে পৌঁছে যাচ্ছিল কোভিড ১৯ পরীক্ষার ভুয়ো শংসাপত্র। মুম্বই পুলিশের ডিসিপি প্রণায়া অশোক জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতে ধারাভি থানা একটি অভিযান চালায়। আর তাতেই জাল শংসাপত্রের ব্যবসা ফেঁদে বসা এই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃত ব্যক্তির নাম ফ্রান্সিস নাদার। সে নিজে কোভিড ১৯ পরীক্ষার এই ভুয়ো শংসাপত্র বেচছিল না অন্যকেউ তার সঙ্গে রয়েছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। 

অতিমারির শুরু থেকেই বারবার সামনে এসেছে কোভিড ১৯ পরীক্ষার শংসাপত্র ঘিরে জালিয়াতি চক্রের বাড়ডবাড়ন্ত। কোথায় ২০০টাকায়, কোথাও আবার ৫০০ টাকাতেও দেদার বিকিয়েছে কোভিড ১৯ পরীক্ষার জাল শংসাপত্র। পরে পুলিশি অভিযানে এই সব জালিয়াতি চক্রের পর্দা ফাঁস হয়েছে বটে, কিন্তু এদের যে পুরো নির্মূল করা যায়নি তা মুম্বইয়ের ঘটনা ফের প্রমাণ করল। বিভিন্ন স্বাস্থ্যকর্মীরাও বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ করেছেন যে সাধারণ মানুষ নিজের কোভিড ১৯-এর সঠিক তথ্য লুকোতে অনেক সময়ই ভুয়ো শংসাপত্র দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু, যেহেতু সরকারি ট্রেসিং সেলের সঙ্গে কোভিড ১৯-এর পরীক্ষা করা রেজিস্ট্রার্ড ল্যাবগুলির সরাসরি যোগ থাকায় সেখানে কোনও সাধারণ মানুষের কোভিড ১৯ পরীক্ষার সার্টিফিকেটের জালিয়াতি সহজেই ধরে ফেলা সম্ভব। কিন্তু, যেখানে কোভিড ১৯ পরীক্ষার শংসাপত্রের ভেরিফিকেশন করা যায় না- সেখানে খুব সহজেই এই জাল শংসাপত্র দিয়েও পার পেয়ে যান এই সব মানুষ। আর এই সব মানুষকে জাল শংসাপত্র জোগান মুম্বইয়ের ফ্রান্সিস নাদারের মতো ব্যক্তিরা। যারা হয় নিছক একটা প্রিন্টিং প্রেস চালান অথবা প্যাথলোজিক্যাল ল্যাবের সঙ্গে যুক্ত। এমনকী গত ২ বছরের কোভিড ১৯ পরীক্ষার যে জাল শংসাপত্রের খবর বারবার সামনে এসেছে তাতে দেখা গিয়েছে এর সঙ্গে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সেন্টার থেকে শুরু করে অনলাইনে কাজ করে দেওয়া বিভিন্ন কিয়স্ক-এর মতো দোকানদারও জড়িত। 

সম্প্রতি বিশ্বস্ত সূত্রে একাধিকবার এই তথ্য সামনে এসেছে যে সরকারি স্বাস্থ্য দফতর থেকে  কোভিড ১৯-এর পরীক্ষার শংসাপত্র চাইতেই বিদেশ থেকে আসা বহু যাত্রী অর্থের বিনিময়ে ভুয়ো শংসাপত্র দেওয়ার কথা বলেছেন। এমনকী, বহু মানুষ এমন শংসাপত্রও দিয়েছেন যেগুলো ভেরিফাই করে দেখা গিয়েছে  তা ভুয়ো। দেশের বেড়ে চলা কোভিড ১৯ সংক্রমণের সুনামির ঢেউ-এর যে ছবিটা এই মুহূর্তে পাওয়া যাচ্ছে তার সঙ্গে এই সব ভুয়ো শংসাপত্রের সংখ্যা জুড়লে তা যে আরও কল্পনাতীত জায়গায় পৌঁছবে তাতে সন্দেহ নেই। তাই প্রতিটি রাজ্য সরকার থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক এবং আইসিএমআর বারবার কোভিড ১৯ পরীক্ষায় মানুষকে সচেতন হতে আহ্বান করে আসছে। এমনকী যাতে সকলে সরকার স্বীকৃত ল্যাব থেকেই থেকেই যাতে কোভিড ১৯ পরীক্ষা করান সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে আসছে। কিন্তু, বিধি বাম যাকে বলে, কিছু মানুষের অসৎ উপায়ের ফায়দা তুলে রমরমিয়ে উঠেছে জালিয়াতি চক্র। যারা কোভিড ১৯-এর মতো অতিমারির সংক্রমণের ভুয়ো শংসাপত্র বানাতেও দ্বিধা করছে না।