সংক্ষিপ্ত
কোভিড আতঙ্ক আরও বাড়ল
আগেই মিলেছিল করোনার ডাবল ও ট্রিপল মিউট্যান্ট
এবার অন্ধ্রপ্রদেশে মিলল আরও একটি নতুন স্ট্রেন
যাকে নিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন গবেষকরা
ভারতে কোভিড আতঙ্ক আরও বাড়ল বলা চলে। মাসখানেক আগেই ভারতে মিলেছিল সার্স-কোভ-২'এর একটি ডাবল মিউট্যান্ট, তারপর পশ্চিমবঙ্গ থেকেই পাওয়া গিয়েছিল একটি ট্রিপল মিউট্যান্ট। দুটিই করোনার আগের রূপের থেকে অনেক বেশি সংক্রামক বলে জানা গিয়েছিল। এবার অন্ধ্রপ্রদেশে মিলল আরও একটি নতুন স্ট্রেন। যা বি১.৬১৭ (B1.617) এবং বি১.৬১৮ (B1.618) - অর্থাৎ, করোনার আগের ভারতীয় রূপভেদগুলির তুলনায় অন্তত ১৫ গুণ বেশি শক্তিশালী, বলে মনে করা হচ্ছে।
সেলুলার অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি সেন্টার বা সিসিএমবি (CCMB) করোনার এই নতুন রুপভেদটি আবিষ্কার করেছে। এর বৈজ্ঞানিক নাম এন৪৪০কে (N440K) হলেও, একে এপি স্ট্রেন বা অন্ধ্র স্ট্রেনও বলা হচ্ছে। প্রথম এই নয়া রুপভেদটি পাওয়া যায় অন্ধ্রপ্রদেশের কুর্নুল এলাকার এক ব্যক্তির নমুনা থেকে। বিশাখাপত্তনম এবং অন্ধ্রের অন্যান্য অংশে বর্তমানে যে করোনা বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে, তার জন্য এই নতুন রুপভেদ বা মিউট্যান্টটিকেই সম্ভাব্য দায়ী বলে মনে করছেন সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়াটা খুব তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে। কিন্তু, তারপরেও এপি স্ট্রেন যে এই রাজ্যের অন্তত কিছু অংশে ব্যাপক সংক্রমণের কারণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
বর্তমানে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া রুখতে, সম্ভাব্য আক্রান্তদের যেমন ব্যাপকহারে পরীক্ষা করা হচ্ছে, তার সঙ্গে সঙ্গেই তাদের নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং-এর জন্য তা পাঠানো হচ্ছে সিসিএমবিতে। সেখানেই দেখা গিয়েছে, বর্তমানে বিশাখাপত্তনমে করোনার যে রূপটি দেখা যাচ্ছে, তা গত বছরে করোনার প্রথম তরঙ্গের সময়ের রূপের থেকে অনেকটাই আলাদা। দেখা গিয়েছে, করোনার নতুন রূপটি ইনকিউবিশন পিরিয়ড, অর্থাৎ নিজের প্রতিরূপপ গঠনের সময় অনেকটাই সংক্ষিপ্ত। তাই রোগের অগ্রগতিও ঘটে অনেক দ্রুত। এর আগে যেখানে কোভিড-১৯ আক্রান্তদের রোগ গুরুতর আকার নিতে কমপক্ষে এক সপ্তাহ সময় লাগত, সেখানে এখন তিন বা চার দিনেই রোগীদের অবস্থা খারাপ হচ্ছে। ফলে অক্সিজেন থেকে আইসিইউ শয্যা - স্বাস্থ্য বিভাগের উপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি হচ্ছে।
এখানেই শেষ নয়, নতুন রূপভেদটি খুব সহজেই এক আক্রান্তের থেকে অন্য কোনও সুস্থ ব্যক্তির দেহে সংক্রমিত হচ্ছে। সিসিএমবি-র গবেষকরা জানাচ্ছেন, নতুন রূপে করোনা এক রোগীর থেকে অল্প সময়ের মধ্যেই চার থেকে পাঁচ জনকে সংক্রামিত করতে পারে। সবচেয়ে ভয়ের বিষয় হল, করোনার এই রূপটি সম্পর্কে কোনও ধারণাই করতে পারছেন না বিজ্ঞানীরা। এর আগে দেখা যাচ্ছিল, যাদের শরীরে অনাক্রম্যতা কম, তাদেরই আক্রান্ত হওয়ার বেশি ঝুঁকি ছিল। কিন্তু, এইবার আর কেউ বাদ যাচ্ছে না। তরুন জনগোষ্ঠী, এমনকী যারা ফিটনেস সচেতন, যাদের অনাক্রম্যতা উচ্চস্তরের - তারাও আক্রান্ত হচ্ছেন। এঁদের মধ্যে কেউ কেউ চিকিত্সায় সাড়া দিচ্ছেন এবং কারোর ক্ষেত্রে কিছুই করা যাচ্ছে না।