সংক্ষিপ্ত
অর্থনীতিকে বাঁচাতে পুরো লকডাউন করা হয়নি
আংশিক লকডাউনেই কাজ হারালেন ৭০ লক্ষ
বেকারত্বের হার পৌঁছল চরমে
আগামী কয়েক মাসে অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে
জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে দেশকে যে করেই হোক লকডাউনের হাত থেকে রক্ষা করার কথা বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বরং, স্থানীয়ভাবে লকডাউন, নাইট কার্ফুর মতো ব্যবস্থার উপর জোর দিতে বলা হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল একটাই, গত বছরের লকডাউন থেকে শিক্ষা নিয়ে, এবার অর্থনীতিকে যে করেই হোক রক্ষা করা। কিন্তু, তাতেও অবস্থা সামাল দেওয়া যায়নি। আংশিক লকডাউনের জেরেই শুধুমাত্র এপ্রিল মাসেই কাজ হারিয়েছেন ৭০ লক্ষেরও বেশি মানুষ। গত চার মাসের মধ্যে বেকারত্বের হার বর্তমানে সবচেয়ে বেশি। চলতি মে মাসের মধ্যেই কোভিড -১৯ পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এখন আর কর্মসংস্থানের হিসাব কষা হয় না। মুম্বই-ভিত্তিক অর্থনৈতিক ওয়াচডগ, সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি বা সিএমআইই (CMIE)-এর পক্ষ থেকে সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানানো হয়েছে, এপ্রিল মাসে দেশে জাতীয় বেকারত্বের হার পৌঁছেছে ৮ শতাংশে। গত মার্চ মাসেই জাতীয় বেকারত্বের হার ছিল ৬.৫ শতাংশ। গত এক মাসের মধ্যেই কোভিডের ধাক্কায় ছবিটা পাল্টে গিয়েছে। আর এর কারণ একমাত্র কোভিড-১৯ সংক্রমণ রুখতে আরোপ করা বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা। সিএমআইই-র এমডি মহেশ ব্যাসের মতে, দেশের কোভিড-১৯ মহামারি যে পরিস্থিতি তৈরী করেছে, তাতে আগামী বেশ কয়েক মাসেও কর্মসংস্থান তৈরির সম্ভাবনা নেই।
সিএমআইই-র দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এই স্থানীয় স্তরের লকডাউনের প্রভাবের ফলে বেকারত্বের হার বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে শহরাঞ্চলেই। এপ্রিল মাসের শেষে গ্রামাঞ্চল যেখানে বেকারত্বের হার ৭.১৩ শতাংশ, সেখানে শহরাঞ্চলে বেকারত্বের হার ৯.৭৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। বেকারত্ব বৃদ্ধির এই বর্তমান তরঙ্গের বেশি প্রভাব পড়েছে অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিক বা দিনমজুরদের উপর। সংগঠিত ক্ষেত্রে এখনও সেভাবে বেকারত্বের প্রভাব না পড়লেও, এপ্রিল মাস থেকে নতুন নিয়োগের কাজকর্ম প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারত কত দ্রুত কোভিড-১৯ এর সংকটের মোকাবিলা করতে পারবে, তার উপরই নির্ভর করবে কত দ্রুত ভারত অর্থনীতিকে ফের আগের জায়গায় নিয়ে যেতে পারবে। এই মুহুর্তে, দেশে প্রতিদিন গড়ে ৩.৫ লক্ষ নতুন সংক্রমণ ধরা পড়ছে এবং গড়ে ৩,৪০০-রও বেশি মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। তাই খুব তাড়াতাড়ি অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের কোনও সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করা হচ্ছে।