সংক্ষিপ্ত
দিল্লিতে তাবলিগী জামাত সম্প্রদায়ের ধর্মীয় সমাবেশে জড়ো হয়েছিলেন হাজার হাজার লোক
আপাতত সেটি দেশের শীর্ষস্থানীয় করোনভাইরাস হটস্পট
এদিন পুলিশের পক্ষ থেকে জামাত প্রধান মৌলানা সাদ ও আরও ছয়জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে
কিন্তু মৌলানার কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না
দিল্লিতে তাবলিগী জামাত সম্প্রদায়ের সদর দফতরে ধর্মীয় সমাবেশের পরে আপাতত দেশের শীর্ষস্থানীয় করোনভাইরাস হটস্পট হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে নিজামুদ্দিন মার্কাজ। জানা গিয়েছে, সরকারের পক্ষ করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে যে সতর্কতা জারি করা হয়েছিল, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা বলা হয়েছিল, তাকে তাবলিগী জামাত-এর প্রদান আলেম মৌলানা সাদ মুসলিমদের বিচ্ছিন্ন করার চক্রান্ত বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। এদিন সেই মৌলানা ও তাঁর ছয় সাগরেদ-এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। কিন্তু, দেশকে ডুবিয়ে আপাত বেপাত্তা মৌলানা সাদ।
মার্চ মাসে করোনভাইরাস সতর্কতা উপেক্ষা করেই বাইরের বেশ কয়েকটি দেশ ও ভারতের অনেকগুলি রাজ্য থেকে, হাজার হাজার তাবলিগী জামাত সদস্য এই ধর্মীয় সমাবেশে জড়ো হয়েছিলেন। এরপরে অনেকেই বিভিন্ন রাজ্যে ফিরে গিয়ে ভারতে করোনাভাইরাস সংক্রমনের পথ প্রশস্ত করেছেন। গত তিন দিনে মারকাজ নিজামউদ্দিন থেকে প্রায় ২ হাজারেরও বেশি সদস্যকে সরানো হয়েছে। দেশজুড়ে, ইতিমধ্যেই এই সমাবেশে যোগ দেওয়া ১২৮ জন করোনাভাইরাস পজিটিভ রোগীর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এই সংখ্যাটা দিন দিন আরও বাড়বে, এবং এদের থেকে আরও অনেক মানুষ আক্রান্ত হবেন, বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এরপরই এদিন ওই সাতজনের বিরুদ্ধে মহামারী আইনে অভিযোগ আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দিল্লির পুলিশ কমিশনার এসএন শ্রীবাস্তব। তবে সূত্রের খবর বলছে, মৌলানা সাদ আপাতত নিখোঁজ। তাঁকে শেষবার দেখা গিয়েছিল গত শনিবার। ওই দিনই নিজামুদ্দিন মার্কাজে জড়ো হওয়া ব্যক্তিদের দেহে করোনাভাইরাস ধরা পড়া শুরু হয়েছিল। মৌলানা সাদ ছাড়া দিল্লি পুলিশের এফআইআর-এ নাম রয়েছে, জিশান, মুফতি শেহজাদ, এম সফি, ইউনুস, মহম্মদ সলমন এবং মহম্মদ আশরাফের। এই সাতজনকেই এই জমায়েতের জন্য দায়ি করা হয়েছে।
গোষ্ঠী সংক্রমণ থেকে আর রক্ষে পেল না দিল্লি, হাসপাতালে ভর্তি তাবলিগ জামাতে অংশ নেওয়া ৩০০ জন
লকডাউনের ৮ম দিনে করোনাভাইরাসের ভয়ঙ্কর ছবি, ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৩৮৬
করোনার ধাক্কায় ইউরোপ-আমেরিকার হাল হবে না ভারতের, উদ্বেগের মধ্যে এল সুখবর
দিল্লি পুলিশ অপরাধ দমন শাখার হাতে 'দিল্লি মারকাজ' নামে একটি ইউটিউব চ্যানেলে পোস্ট করা মৌলানা সাদ-একটি অডিও রেকর্ডিং এসেছে। যেখানে মৌলানাকে বলতে শোনা গিয়েছে, সরকারের পরামর্শ মেনে সামাজিক দূরত্ব রাখার কোনও দরকার নেই। এই সতর্কতা 'মুসলিমদের বিচ্ছিন্ন রাখার ষড়যন্ত্র' বলে জানানো হয়। বলা হয় মৃত্যুর থেকে পালিয়ে লাভ নেই, সে সবসময় মাথার উপর নাচছে। এটা ঈশ্বরের তপস্যা করার সময়। ডাক্তারদের কথায় নামাজ বন্ধ করে দেওয়ার সময় নয়। ভাইরাস যে ছড়াচ্ছে তা মেনেও বলা হয়, তাঁদের সঙ্গে ৩০হাজার ফেরেস্তারা আছেন। বাঁচালে তাঁরাই বাঁচাবেন। এই সময় বিচ্ছিন্ন তো নয়ই বরং আরও বেশি করে একত্রিত হতে হবে। এক থালায় খাবার খেতে হবে। সামাদজিক বিচ্ছিন্নতা আসলে মুসলমানদের ঐক্য ভাঙার পরিকল্পনা বলে দাবি করা হয়।
পুলিশ এবং দিল্লি সরকারের দাবি, এই ধর্মীয় সমাবেশ নিয়ে আগেই আয়োজকদের সতর্ক করা হয়েছিল এবং কোভিড-১৯ সংক্রমণের ভয়ে মার্কাজ নিজামউদ্দিন খালি করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। কিন্দতু, সেই সময় তাবলিগী জামাত-এর নেতারা জানিয়েছিলেন, লকডাউন-এর আগেই মানুষ সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন। আর লকডাউনের ঘোষণার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সবাইকে যেখানে আছেন সেখানেই থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। তাই তাঁরা সেখান থেকে যাবেন না।