সংক্ষিপ্ত
বিশেষজ্ঞদের মতে, আর সাত দিন পরই রাজ্যে আছড়ে পড়বে করোনার তৃতীয় ঢেউ। দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা হবে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার। বুধবার রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের কর্তা এবং চিকিৎসকরা বৈঠকে বসে এই নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
রাজ্যে প্রতিদিনই বাড়ছে করোনা (Daily Corona Cases) আক্রান্তের সংখ্যা। বৃহস্পতিবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের (State Health Department) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। তার সঙ্গে আবার চোখ রাঙাচ্ছে করোনার নতুন রূপ ওমিক্রন (Omicron)। লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ। এই পরিস্থিতিতে তেমন কোনও হেলদোল নেই সাধারণ মানুষের। বর্ষবরণের (New Year Celebration) আনন্দে গা ভাসিয়ে দিয়েছেন অনেকেই। বড়দিনে (Christmas) সাধারণ মানুষের ভিড় নেমেছিল পার্ক স্ট্রিটে (Park Street)। রেস্তরাঁ থেকে রাস্তা সব জায়গাতেই থিকথিক করছিল ভিড়। এরপর আবার বর্ষশেষের রাতেও ভিড় লক্ষ্য করা যাবে বিভিন্ন প্রান্তে। আর তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।
করোনার সংক্রমণ যে হু হু করে বাড়তে পারে তা নিয়ে আগেই সতর্ক করেছিলেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু, করোনার সংক্রমণ একটু কমতেই কিছুটা গা-ছাড়া ভাব লক্ষ্য করা গিয়েছিল সাধারণ মানুষের মধ্যে। মাস্ক থেকে শুরু করে দূরত্ববিধি সবই উঠেছিল শিকেয়। এমনকী, এখনও বহু মানুষকেই মাস্ক পরতে দেখা যায় না। শীতের আমেজ গায়ে মেখে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ভিড় করতে দেখা গিয়েছে সাধারণ মানুষ। আর সেই ভিড়ের মধ্যে কচিকাঁচাদের সংখ্যাও নেহাত কম ছিল না। এই সব কারণের জেরেই সংক্রমণ দ্রুত হারে বেড়ে চলেছে বলে অনুমান বিশেষজ্ঞদের। আর তা নিয়ে এবার আশঙ্কার বাণী শুনিয়েছেন তাঁরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আর সাত দিন পরই রাজ্যে আছড়ে পড়বে করোনার তৃতীয় ঢেউ (Third Wave)। দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা হবে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার। বুধবার রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের কর্তা এবং চিকিৎসকরা বৈঠকে বসে এই নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। ওই বৈঠকে উপস্থিত এক চিকিৎসক আবার গোষ্ঠী সংক্রমণেরও ইঙ্গিত দিয়েছেন। এই মুহূর্তে গোটা দেশের পাশাপাশি রাজ্যেও বহু মানুষ ওমিক্রনে আক্রান্ত হচ্ছেন। বিদেশ ভ্রমণের কোনও ইতিহাস না সত্ত্বেও তাঁদের আক্রান্ত হতে দেখা যাচ্ছে। আর সেই কারণে গোষ্ঠী সংক্রমণের বিষয়টি একেবারেই উড়িয়ে দিচ্ছেন না চিকিৎসকরা। তবে চরম আতঙ্কের মধ্যে আশার কথা হল তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়লেও এপ্রিলে ধীরে ধীরে সংক্রমিতের সংখ্যা কমতে শুরু করবে।
এদিকে রাজ্যে আরও এক ওমিক্রন আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। শিয়ালদা (Sealdah) ডিভিশনের এক রেলকর্মী ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছেন বলে রেল সূত্রে দাবি করা হয়েছে। আক্রান্ত ওই ব্যক্তিকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কলকাতাতেও বাড়ছে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা। আর সেই কারণেই আরও বেশি করে সতর্ক করা হয়েছে বিশেষজ্ঞদের তরফে।
আরও পড়ুন- ভারতে ওমিক্রণ আক্রান্তের প্রথম মৃত্যু, উদ্বেগে সরকার
২০২০ সালের অক্টোবরে রাজ্যে প্রথম ঢেউ আছড়ে পড়েছিল। তখন দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ায় ৪ হাজার ১৫৭। এরপর চলতি বছর মে মাসের মাঝামাঝি সময় রাজ্যে দ্বিতীয় আছড়ে পড়েছিল। তখন দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ২০ হাজারের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল। আর তৃতীয় ঢেউয়ে দৈনিক সংক্রমণ ৩০ হাজার ছাড়িয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।