কোভিডের প্রথম তরঙ্গের গোড়ায় তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়েছিলসংক্রমণের  ভয়ে সামাজিক বয়কটের মুখে পড়তে হয়েছিল ডাক্তার থেকে রোগীদেরদ্বিতীয় তরঙ্গের সময়ও সেই দিন ফিরে এলএবার নদিয়ায় ২৪ ঘন্টার উপর পড়ে রইল কোভিড মৃতের দেহ 

ফের যেন ফিরে আসছে কোভিড মহামারির প্রথম তরঙ্গের একেবারে গোড়ার দিকের ভয়াবহ দিনগুলিয যখন সংক্রমণের আতঙ্কে সামাজিরকভাবে বয়কটের মুখে পড়েছিলেন রোগী, রোগীর পরিবার, মায় চিকিৎসক-নার্সরা। ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও করোনা রোগীর মৃতদেহ পড়ে রয়েছে হাসপাতালেই। কারণ, মৃত করোনা রোগীর দেহ নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স চালাতে রাজি নন কেউ। এরকমই ভয়ঙ্কর অভিযোগ উঠল নদিয়ায়।

ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। জানা গিয়েছে, রবিবার রাতেই ওই করোননা রোগীর মৃত্যু হয়। তারপর সেই মৃতদেহটিকে হাসপাতালের পক্ষ থেকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দেওয়া হয়েছিল। সেই অ্যাম্বুল্যান্সেই তাঁর দেহ শেষকৃত্যের জন্য নিয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু, এলাকাবাসীর অভিযোগ, তারপর ২৪ ঘন্টা পার হয়ে গেলেও ওই করোনা রোগীর দেহ হাসপাতাল চত্ত্বরে অ্যাম্বুল্যান্সের মধ্যেই পড়ে রয়েছে। এদিন হাসপাতাল চত্ত্বরে গিয়ে এশিয়ানেট নিউজ বাংলার প্রতিনিধি দেখতে পান, হাসপাতালের এমার্জেন্সি বিভাগের সামনেই দাঁড় করানো অ্যাম্বুল্যান্সটি। তার ভিতরে পাশ করা অবস্থায় রয়েছে এক মহিলার মৃতদেহ। কোনও বডিব্যাগেও মোড়া নেই দেহটি।

এই সেই অ্যাম্বুল্যান্স, যার ভিতরে রয়েছে কোভিড-১৯'এ মৃত সেই রোগীর দেহ

পরে অবশ্য দমকল কর্মীদের একটি ইঞ্জিন এনে এনার্জেন্সি বিভাগ থেকে শুরু করে ওই অ্যাম্বুল্যান্সের সামনে অবধি স্যানিটাইজ করতে দেখা যায়। তবে, তারপরেও অ্যাম্বুল্যান্সটি ওই এলাকা থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। কেন? সূত্রের খবর, সংক্রমণের ভয়ে কোনও অ্যাম্বুলেন্স চালকই ওই দেহবাহী অ্যাম্বুল্যান্সটি চালাতে চাইছেন না।

Scroll to load tweet…

এই নিয়ে এক অভূতপূর্ব অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আতঙ্কে হাসপাতালে চিকিৎসাই করাতে আসছেন না কেউ। যাঁরা আসছেন, তাঁরাও সব জেনেশুনে হাসপাতাল থেকে একরকম পালাচ্ছেন। এমনকী, যাঁরা ভর্তি রয়েছেন, তাঁরাও সেখান থেকে চলে যেতে চাইছেন।

এই অবস্থায় কী করছেন হাসপাতালের সুপার? জানা গিয়েছে, জেলা স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা হয়েছে তাঁর। ব্যাস এইটুকুতেই দায় সেরেছেন সুপার। প্রশ্ন উঠছে, অসুস্থ মানুষের ভরসার হাসপাতালই যদি করুণা আক্রান্ত হওয়ার আতঙ্কের আখরা হয়ে ওঠে, তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবেন? এই বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সঙ্গে প্রশ্নের মুখে পড়েছে স্বাস্থ্য দফতরের ভূমিকাও।

YouTube video player