সংক্ষিপ্ত

  • রাজ্যের কোভিড যোদ্ধারা জীবনকে বাজি রেখে কাজ করে চলেছেন
  • তাদের ছুটের সুযোগ নেই, টানা চলছে কাজ
  • এমনই দুই কোভিড যোদ্ধার কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় সামনে এল
  • লাল হলুদ এই দুই কোভিড যোদ্ধার কথা এখন সোশ্য়াল মিডিয়ায় ভাইরাল 

দেশের করোনা পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়ঙ্কর হচ্ছে। ভয়ঙ্কর হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে পশ্চিমবাঙলার করোনা পরিস্থিতিও। দেশে দৈনিক করোনা আক্রান্ত ৪ লক্ষ ছাড়িয়েছে, বাংলায় সংখ্যাটা ১৭ হাজার টপকেছে। কোভিড রোগীদের ঢল লেগেছে হাসপাতালগুলিতে। আর ভগবানের দূত হয়ে হাজির চিকিৎসাকর্মীরা। লড়ে চলেছেন কোভিড যোদ্ধারাও।

সোশ্য়াল মিডিয়ায় এমন দুই কোভিড যোদ্ধার কথা এখন ভাইরাল যারা নিজেদের পরিচয় দেন লাল হলুদ সমর্থক হিসেবে। এখন যাদের কাজ গর্বিত করছে গোটা বাংলাকে। 

আরও পড়ুন: আজই আসছে স্পুটনিক ভি, করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারতের তৃতীয় তথা মোক্ষম অস্ত্র

একজন যিনি টানা দু মাস হাসপাতালে ডিউটি করছে PPE ড্রেস পরে। তিনি রাজেশ মণ্ডল। এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে তিনি জানিয়েছেন, তাঁকে এই করোনা কালে তাকে ঠিক কতটা পরিশ্রম করতে হচ্ছে। রোজ ১-২টি মৃতদেহ নামানোর কাজ করছেন তিনি। সুস্থ ব্যক্তিদেরও বের করছেন। এই কাজ টানা দু মাস ধরে করে চলেছেন। তিনি যে যোদ্ধা। যুদ্ধ না থামলে যে যোদ্ধাদের ছুটি হয় না। বাড়ির লোকেদের মুখ কত দিন দেখেননি। এই মৃত্যু-যন্ত্রণা-মহামারী দেখে বারবার তিনি আবেদন করছেন, "ভিড় থেকে দূরে থাকুন। নিজের পরিবারের  কথা মাথায় রাখুন। প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বাইরে বের হবেন না। মাস্ক অবশ্যই পরুন।''

আরও পড়ুন: রাজ্য জুড়ে চলছে আংশিক লকডাউন, সামাজিক দূরত্ব শিকেয় তুলে দোকানে লম্বা লাইন সুরাপ্রেমিদের

কথায় বলে যাঁরা বিপর্যয়ে লড়েন, তাদের সাবধানবাণী কখনই এড়িয়ে যেতে নেই। তাঁর ফেসবুক পোস্টের একেবারে শেষে রাজেশ লিখেছেন, আমার জন্য প্রার্থনা করুন যাতে আমি তাড়াতাড়ি বাড়িতে আমার মুখটা দেখাতে পারি।'' বোঝাই যাচ্ছে, রাজেশদের মত কোভিড যোদ্ধাদের তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরানোর দায় আমাদেরও থাকছে। সঠিক স্বাস্থ্যবিধি পালন করে। 

রাজেশের এই পোস্টের পর নেটিজেনরা তাঁর প্রশংসা করেছেন। 

আরেক ইস্টবেঙ্গল সমর্থক হলেন সোনু। ভাল নাম রণো সরকার। ২৩ বছরের সোনু অ্যাম্বুলেন্স চালক। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এত প্রবল, ওর ঘুমনোর সময় কমে হয়েছে বড়জোড় ৩-৪ ঘণ্টা। বাকিটা সময় শুধু ছুটে চলা, জীবন বাঁচানোর লড়াই। একজন অ্যাম্বুলেন্স চালকের কাজ হল সব সময় প্রয়োজনে সাড়া দেওয়া, সব সময় দ্রুততম গতিতে রোগীকে গন্তব্য পোঁছে দেওয়া। রণো এই কারণে ফোন কখনও বন্ধ করে না।

বাবা-মা না থাকা রণো বড়ো হয়েছে দিদার কাছে। ক্লাস ইলেভেনে পড়ার সময় দিদা মারা যান। তারপরই অ্য়াম্বুলেন্স চালানো শুরু করে সে। সাইরেন বাজিয়ে দিনরাত এক করে রোগীদের নিয়ে চলেছে। সে নয় নয় করে ১৭ জন কোভিড আক্রান্তদের হাসপাতাল বা সেফ হোমে, বা করোনা পরীক্ষার জন্য অ্যাম্বুলেন্স চাপিয়ে নিয়ে গিয়েছে। সোনু জানিয়েছেন, ১৭জন কোভিড আক্রান্তই সুস্থ হয়েছেন। রণোর অ্যাম্বোলুন্সে গিয়ে হাসপাতালে গিয়ে কোভিডে জিতে ফেরা এক ষাটোর্ধ বয়স্ক শিক্ষিকা বললেন, দেশে সোনু সুদ-এর কথা সবাই জানে।  কিন্তু আমাদের কাছে আমাদের এই সোনুই সব।" 

করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময় ১৫২ জন পরিযায়ী শ্রমিকেদর বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে গাড়ি করে পৌঁছে দিয়েছিলেন সোনু। সে সব পরিযায়ী শ্রমিকরা রণো ওরফে সোনুকে নিমন্ত্রণ করেছেন। সোনু বললেন, ''দাদা এই যাত্রায় যদি বেঁচে যাই, এক মাস কাজ বন্ধ রেখে সবার বাড়ি খেতে যাবো।"