সংক্ষিপ্ত

  • পরিবারের সদস্যের মৃত্যু করোনায়
  • আতঙ্কে বাড়ি ছেড়ে পালাল বাকি সদস্যরা
  • ৪৮ ঘন্টা ধরে পড়ে রইল দেহ
  • প্রশাসনের তৎপরতায় সৎকার সম্পন্ন

করোনা আতঙ্কে জেরবার সাধারণ মানুষ। এমন পরিস্থিতি, আপনজনের কাছেও যেতে চাইছেন না কেউ। এমনই মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী থাকল বজবজ। করোনায় মৃত্যু হয়েছে শুনেই বাড়ি থেকে পালিয়ে গেল মৃতের নিজের পরিজনেরা। সাতগাছিয়া বিধানসভার অন্তর্গত বজবজ দুই নম্বর ব্লকের চড়ারায়পুরের বাসিন্দা বছর সাঁইত্রিশের সঞ্জয় ভক্ত করোনায় আক্রান্ত হন। 

করোনা আক্রান্ত সঞ্জয় আমতলার সেফহোমে এসে থাকতে শুরু করেন। কিন্তু সোমবার রাত আড়াইটে নাগাদ সঞ্জয়ের মৃত্যু হয়, আর এই খবর সঞ্জয়ের পরিবারের লোককে দেওয়া মাত্রই তারা ঘর ছেড়ে পালিয়ে যান। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় সঞ্জয়ের কোভিড টেস্ট রিপোর্টের জন্য। পজেটিভ টেস্ট রিপোর্ট ছাড়া মৃতের সৎকার করা যাবে না বলে জানানো হয়। ফলে দেহ পড়ে থাকে  আমতলার সেফ হোমেই। 

প্রায় ৪৮ ঘন্টা কেটে গেলেও সেফহোম কর্তৃপক্ষ পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কোনভাবেই যোগাযোগ করতে পারেননি। অবশেষে বজবজ ২ নম্বর ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক ও বজবজ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি বুচান ব্যানার্জীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কারণ সঞ্জয়কে এই দুজনের তদারকিতেই সেফ হোমে ভর্তি করা হয়েছিল। বুচান ব্যানার্জি এই খবর পাওয়া মাত্রই সঞ্জয়ের ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সঞ্জয়ের ভাই এক আত্মীয়ের বাড়িতে ছিলেন বলে জানা যায়। 

তাকে সঙ্গে নিয়ে এসে অবশেষে বুচান ব্যানার্জীর উদ্যোগেই বজবজ কালীবাড়ি সংলগ্ন বজবজ পৌরসভার চিত্রগঞ্জ শ্মশানে তার দেহ সৎকার করা হয়। সঞ্জয়ের পরিবারে তাঁর স্ত্রী, এক সন্তান, সঞ্জয়ের মা এবং ভাই বর্তমান। সঞ্জয়ের বাবা অনেকদিন আগেই মারা গিয়েছেন।

এদিকে, মঙ্গলবার ভারতে কোভিড-১৯ ভাইরাসজনিত কারণে একক দিনের মৃত্যুর সংখ্যার সর্বকালীন রেকর্ড হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। বুধবার সকালে, তাদের পরিসংখ্যান বলছে, গত ২৪ ঘন্টায় ভারতে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৪,২০৫ জন নাগরিকের।

মঙ্গলবার বিকালেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণ দাবি করেছিলেন ভারতে করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গের শক্তি কমার প্রাথমিক প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। 

তবে, এদিনও ভারতের নতুন সংক্রমণের সংখ্যা ৪ লক্ষের নিচেই রয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় ৩,৪৮,৪২১টি নতুন সংক্রমণের ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে ভারতে। ফলে দেশের সামগ্রিক করোনা সংক্রমণের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২,৩৩,৪০,৯৩৮-এ। মঙ্গলবার সারাদেশে হাসপাতাল ও অন্যান্য চিকিৎসা সুবিধা থেকে ৩,৫৫,৩৩৮ জনকে করোনা মুক্ত হিসাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।