সংক্ষিপ্ত

রাজ্যে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার পর অনেকদিন এই ট্রেন পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছিল। পরে পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হওয়ার পর আবার ট্রেন চালু করা হয়। আর রাজ্যে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার ফলে আবার ট্রেন চলাচলের উপর বিধিনিষেধ জারি হয়েছে। 

রাজ্যে নতুন করে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে করোনার গ্রাফ (Corona Graph)। বড়দিনের (Christmas) পর থেকেই সেই গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। প্রতিদিনই লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ। আক্রান্ত হচ্ছেন চিকিৎসক (Doctor) ও পুলিশকর্মীরাও (Police)। আগামীদিনে সংক্রমণ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। আর এই পরিস্থিতিতে সংক্রমণের উপর রাশ টানতে রাজ্যে ফের নতুন করে একগুচ্ছ বিধিনিষেধ (Corona Restriction) আরোপ করল রাজ্য সরকার (State Government)। সোমবার থেকে সেই বিধিনিষেধ লাগু হবে। জারি থাকবে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। আর এই নিষেধাজ্ঞাগুলির মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল লোকাল ট্রেন (Local Train) চলাচল বন্ধ রাখা। 

রাজ্যের অন্যতম প্রাধন লাইফ লাইন হল লোকাল ট্রেন। এই ট্রেনগুলির উপর নির্ভর করেন বহু মানুষ। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত লোকাল ট্রেনের উপর ভরসা করে অনেকে জীবিকা নির্বাহ করেন। তবে রাজ্যে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার পর অনেকদিন এই ট্রেন পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছিল। পরে পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হওয়ার পর আবার ট্রেন চালু করা হয়। আর রাজ্যে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার ফলে আবার ট্রেন চলাচলের উপর বিধিনিষেধ জারি হয়েছে। সোমবার সন্ধে ৭টার পর থেকে আর কোনও লোকাল ট্রেন চালানো যাবে না বলে জানানো হয়েছে। তবে সকালের দিকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও সেখানে ইচ্ছে মতো চাপা যাবে না। করোনা বিধি মেনে লোকাল ট্রেনে ৫০ শতাংশ যাত্রী সফর করতে পারবেন। লোকাল ট্রেনের প্রতিটি বগিতে যতগুলি আসন থাকে তার অর্ধেক যাত্রী উঠতে পারবেন। পাশাপাশি সব আসনে বসে সফর করতে পারবেন না যাত্রীরা। একটি করে আসন ছেড়ে বসতে হবে ট্রেনে। রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী জানিয়েছেন, কোনও প্রান্তিক স্টেশন থেকেই সন্ধে ৭টার পরে আর কোনও লোকাল ট্রেন ছাড়বে না।

আরও পড়ুন- কলকাতা মেট্রোর সময়সীমায় বদল, নয়া সিদ্ধান্ত জারি

তবে এই বিধিনিষেধ জারি করা নিয়ে রেলের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করা হয়নি। এদিকে খুব প্রয়োজন ছাড়া যাতে কেউ ট্রেনে যাত্রা না করেন সেই বিষে রাজ্য সরকারের তরফে আর্জি জানানো হয়েছে। শুধুমাত্র লোকাল ট্রেনই নয়, মেট্রো রেলও চলবে ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে। এদিকে সরকারের এই সিদ্ধান্তে খুশি নন নিত্যযাত্রীদের অনেকেই। তাঁদের মতে, সন্ধে ৭টার পর অফিস ছুটি হলে বাড়ি ফিরবেন কীভাবে? সেক্ষেত্রে বাসের উপর ভিড় অনেকটাই বাড়বে। সেখান থেকেও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া যখন ট্রেন চলবে তখন তার উপরও যাত্রীদের চাপ অনেকটাই বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে সেক্ষেত্রে রাজ্যের বক্তব্য, সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে এই মুহূর্তে ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ হবে। পাশাপাশি স্কুল, কলেজও বন্ধ থাকবে। এর ফলে লোকাল ট্রেনের উপরে যাত্রীদের চাপও কমবে।

আরও পড়ুন- এক সপ্তাহের মধ্যে ৪৩৯ থেকে ৬১৫৩, রাজ্যে লাফিয়ে বাড়ছে করোনার দৈনিক সংক্রমণ

এদিকে এই পরিস্থিতিতে কাটছাঁট করা হয়েছে কলকাতা মেট্রোর সময়সীমাতেও। মেট্রো রেল সূত্রে খবর, রাতের পরিষেবা আধ ঘণ্টা এগিয়ে এনেছে তারা। মেট্রো রেল জানিয়েছে সকালে পরিষেবা স্বাভাবিক রাখা হবে। তবে রাতে দমদম ও কবি সুভাষ থেকে শেষ মেট্রো পাওয়া যাবে ৯টায়। এবং রাত ৮টা ৪৮মিনিটে শেষ ট্রেন ছাড়বে দক্ষিণেশ্বর থেকে। রাত সাড়ে ৯টায় শেষ ট্রেন। কারণ রাত ১০টা থেকে নাইট কারফিউ বলবৎ হবে। এই কারণেই ট্রেনের সময়ের পরিবর্তন করা হয়েছে।