সংক্ষিপ্ত

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার (Oxford- AstraZeneca) তৈরি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন (Coronavirus Vaccine) নিয়ে কারো কারো রক্ত ​​​​জমাট বেঁধে গিয়েছে। কেন এমন ঘটছে, অবশেষে জানতে পারলেন বিজ্ঞানীরা। 
 

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন (Coronavirus Vaccine) নিয়ে কিছু কিছু ক্ষেত্রে রক্ত ​​​​জমাট বেঁধে যাওয়ার সমস্যা দেখা গিয়েছে। ঠিক কীসের জন্য এই ঘটনা ঘটছে, তা অবশেষে বোঝা গিয়েছে বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার (Journalist Association of India) রিপোর্টার জেমস গ্যালাঘের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যের কার্ডিফ (Cardiff) এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক যৌথ গবেষণা দল, আবিষ্কার করেছেন, রক্তের একটি প্রোটিন, ভ্যাকসিনের একটি মূল উপাদানের প্রতি আকৃষ্ট হয়। আর তা থেকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার সঙ্গে জড়িত একটি চেইন প্রতিক্রিয়া শুরু হয়, এই কারণেই বিপজ্জনকভাবে রক্ত জমাট বেঁধে যাচ্ছে (Blood Clots)।

এখনও পর্যন্ত কোভিডের হাত প্রায় ১০ লক্ষ মানুষকে থেকে রক্ষা করেছে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেরা কোভিড ভ্যাকসিন, কোভিশিল্ড (Covishield)। তবে, অত্যন্ত বিরল ঘটনা হলেও, কোভিশিল্ড নিয়ে রক্ত ​​​​জমাট বাঁধা নিয়ে বিশ্বজুড়েই উদ্বেগ রয়েছে। যুক্তরাজ্যে তো অনূর্ধ্ব-৪০ বথর বয়সীদের বিকল্প টিকা দেওয়ার প্রস্তাব পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে। এরপরই এটা কেন ঘটছে, এবং একে প্রতিরোধ করা যায় কিনা - তা নির্ধারণের জন্য জরুরি সরকারি তহবিল ব্যবহার করে এটি একটি বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান শুরু করা হয়েছিল। কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ দলের সঙ্গে যোগ দেন অ্যাস্ট্রাজেনেকা সংস্থার নিজস্ব বিজ্ঞানীরাও। তাঁরা জানিয়েছেন, কেন এটা ঘটে তার সম্পূর্ণ ব্যাখ্যা এখনও না পাওয়া গেলেও, জানা গিয়েছে, টিকা নয়, কোভিড সংক্রমণের কারণেই রক্ত জমাট বেঁধে যাচ্ছে। 
 
দেখা গিয়েছে কোভিশিল্ড নিয়ে যাদের রক্ত জমাট বেঁধে গিয়েছে, তাদের শরীরে অস্বাভাবিক অ্যান্টিবডি ছিল। যা তাদের রক্তে প্লাটিলেট ফ্যাক্টর ফোর নামে একটি প্রোটিনকে আক্রমণ করে। যুক্তরাজ্যে ব্যবহৃত ভ্যাকসিনগুলি সমস্তই কোভিড-ভাইরাস এর জেনেটিক কোডের একটি স্নিপেট শরীরে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করে ইমিউন সিস্টেম জাগিয়ে তোলার জন্য। এই কোড মানব দেহে পাঠানো হয় একটি অ্যাডেনোভাইরাসের মাধ্যমে। এই অ্যাডেনোভাইরাসের সঙ্গে বিরল রক্ত জমাট বাঁধার সংযোগ থাকতে পারে, সন্দেহ করে তারা আণবিক-স্তরে অ্যাডেনোভাইরাসের ছবি তুলতে ক্রায়ো-ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপি নামে একটি কৌশল ব্যবহার করেছেন। সায়েন্স অ্যাডভান্সেস জার্নালে প্রকাশিত তাদের গবেষণায় দেখা গেছে, অ্যাডেনোভাইরাসের বাইরের পৃষ্ঠটি প্লেটলেট ফ্যাক্টর ফোর প্রোটিনকে চুম্বকের মতো আকর্ষণ করে।

কার্ডিফ ইউনিভার্সিটির গবেষক প্রফেসর অ্যালান পার্কার বিবিসি নিউজকে বলেছেন: অ্যাডেনোভাইরাসের একটি অত্যন্ত নেতিবাচক পৃষ্ঠ রয়েছে এবং প্লেটলেট ফ্যাক্টর ফোর অত্যন্ত ইতিবাচক। তাই দুটি জিনিস একসাথে বেশ ভালভাবে ফিট করে। অ্যাডেনোভাইরাস এবং প্লেটলেট ফ্যাক্টর ফোর-এর মধ্যে সংযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হলেও, ছিক কেন এটা ঘটছে, তা জেনে বিষয়টি প্রতিরোধ করার আগে আরও অনেকগুলি পদক্ষেপ সম্পাদন করতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।