সংক্ষিপ্ত
করোনাভাইরাসের টিকাকরণ (Coronavirus Vaccine) বাধ্যতামূলক করার প্রতিবাদে কি গণ চুম্বনে (Mass Kissing) মাতল জার্মানরা (Germany)। ভাইরাল হল এই খবর, কিন্তু তা সত্যি তো?
করোনাভাইরাসের ওমিক্রন (Omicron) ভেরিয়েন্টে উত্থানের প্রেক্ষিতে জার্মানিতে (Germany) এখনও যাঁরা কোভিড-১৯ টিকা (Coronavirus Vaccine) নেননি, তাদের জন্য কঠোর কোভিড বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এমনকী ক্রমবর্ধমান সংক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে কোভিড টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক করার কথাও ভাবা হচ্ছে। এক সাম্প্রতিক সমীক্ষা অনুসারে, জার্মানির জনসংখ্যার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ কোভিড টিকাকরণ বাধ্যতামূলক করার বিষয়টিকে সমর্থন করছেন। তবে, একই সময়ে, নতুন করে এই বিধিনিষেধ আরোপের বিরুদ্ধে বিক্ষোভও ছড়াচ্ছে জার্মানিতে। তাই বলে, বাধ্যতামূলক টিকারণের বিরোধিতা করতে, মহামারির মধ্যেই কি গণ চুম্বনে (Mass Kissing) মাতল জার্মানরা?
অন্তত, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ছবি, তাই বলছে৷ ছবিটি, প্রথম সারির জার্মান সংবাদ ওয়েবসাইট 'ডয়েচে ভেল'এর একটি নিবন্ধের একটি স্ক্রিনশট বলে দাবি করা হচ্ছে। সেই স্ক্রিনশটে একটি 'গণ চুম্বন'এর ঘটনার ছবি রয়েছে। সঙ্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এভাবেই জার্মানিতে টিকাকরণের বিরোধীরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। নিবন্ধটির শিরোনাম যা রয়েছে, তার বাংলা করলে হয়, 'হাজার হাজার মানুষ একে অপরকে চুম্বন করতে জড়ো হওয়ায়, জার্মান অ্যান্টি-ভ্যাকসিন বিক্ষোভে জনস্বাস্থ্য আধিকারিকরা ক্ষুব্ধ'। পরের অংশে লেখা আছে, আইন প্রণেতারা প্রকাশ্যে চুম্বনকে অপরাধ হিসেবে বিবেচনা বিষয়ে আইন করার কথা ভাবছেন।
সত্যিই কি জার্মানিতে গণচুম্বনের মাধ্যমে টিকাকরণ বাধ্যতামূলক করার প্রতিবাদ জানানো হল? এশিয়ানেট নিউজ বাংলার পক্ষ থেকে 'ডয়চে ভেলে' এবং অন্যান্য জার্মান সংবাদ ওয়েবসাইটে এই বিষয়ক কোনও সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি। তবে, জার্মানদের একটা অংশ যে টিকাকরণ বাধ্যতামূলক করার বিরোধী, সেই বিষয়ে বেশ কয়েকটি প্রতিবদন রয়েছে। এরপর ভাইরাল হওয়া ওই স্ক্রিনশটে থাকা ছবিটি নিয়ে গুগল সার্চে বিপরীত চিত্র অনুসন্ধান করা হয়। তাতে দেখা যায়, ছবিটি জার্মানির টিকা বিরোধী কোনও প্রতিবাদের ছবি নয়। ছবিটি, ২০১১ সালের। ওই বছর ১ সেপ্টেম্বর, চিলির সান্তিয়াগোতে 'ওয়ার্ল্ড কিস ম্যারাথন ফর এডুকেশন' নামে একটি গণচুম্বনের ইভেন্ট আয়োজন করা হয়েছিল। তারই ছবি এইটি।
আরও জানা গিয়েছে, ছবিটি চিলির সান্তিয়াগোর একটি স্কোয়ারে তোলা হয়েছিল। ইউরোপীয় প্রেসফটো এজেন্সি বা ইপিএ-র হয়ে ছবিটি তুলেছিলেন ফটোগ্রাফারের ফেলিপ ট্রুবা। ইপিএ-র অফিসিয়াল ওয়েবসাইটেও এই ছবিটি মিলেছে। সেখানে ছবির সঙ্গে দেওয়া তথ্য, এই অভিনব বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা তাদের দেশে উন্নত শিক্ষার সুযোগের দাবি জানিয়েছিলেন। তবে, কোভিড-১৯ জনিত বিধিনিষেধের প্রতিবাদে গণচুম্বন দেখা গিয়েছিল রাশিয়ায়। ঘটনাটি ঘটেছিল গত বছর। বেশ কিছু সাবওয়েতে ভিড় জমিয়ে তাদের সঙ্গীদের চুম্বন করে কোভিড বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন।