সংক্ষিপ্ত

২৯০ দিনেরও বেশি সময় লাগল তাঁর কোভিডমুক্ত হতে

এর মধ্যে ৪৩ বার পরীক্ষা করে ফল এসেছে পজিটিভ

৭ বার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, মৃত্যুমুখে ৫ বার

এ এক অসামান্য কোভিড জয়ীর গল্প

 

২৯০ দিনেরও বেশি, সহজ হিসাবে ১০ মাস। এই সময়ে কোভিড-১৯ আক্রান্তরা সুস্থ হয়ে কোভিডের দীর্ঘমেয়াদি সমস্যাগুলিও সারিয়ে ফেলে। কিনতু, কোভিড মুক্ত হতেই এত দীর্ঘদিন লেগেছে যুক্তরাজ্যের বাসিন্দা ৭২ বছর বয়সী ডেভ স্মিথ-এর। আর এতদিনের মধ্যে তাঁর ৪৩ বার  আরটি-পিসিআর পদ্ধতিতে করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে, আর অবাঞ্ছিত রেকর্ড গড়ে প্রত্যেকবারই ফল এসেছে ইতিবাচক। এরমধ্যে ৭ বার হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে তাঁকে, বেশ কয়েকবার ফিরেছেন সাক্ষাত মৃত্যুর মুখ থেকে। এমনকী, ৫ বার তাঁর স্ত্রী, তাঁর শেষকৃত্যের জন্য প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছিলেন। এ এক অসামান্য কোভিড জয়ীর গল্প।

ডেভ প্রথম করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন ব্রিটেনে করোনা মহামারির প্রথম তরঙ্গের সময়। প্রথম, দ্বিতীয় তরঙ্গ পেরিয়ে যখন এই দ্বীপরাষ্ট্র তৃতীয় তরঙ্গের মুখে, তখন অবশেষে করোনা মুক্ত হলেন তিনি। বিবিসি টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে ডেভ বলেছেন, সপ্তাহের পর সপ্তাহ যেত, আর তাঁর করোনা পরীক্ষার ফল ইতিবাচক আসত। আর তাঁর শরীরের শক্তি ক্রমশ কমত। একসময় একটানা ৫ ঘন্টা তাঁর কাশি হয়েছিল। ১১৭ কেজি থেকে কমে তাঁর ওজন ৬৪ কেজিতে এসে দাঁড়িয়েছে।

ডেভ জানিয়েছেন, এই দীর্ঘ সময়ে বহুবার তিনি বাঁচার আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। স্ত্রী লিনকেও সেই কথা জানিয়েছিলেন তিনি। তাঁর অবস্থা যখন যখন খারাপ হতো, তখন খুবই গুরুতর অবস্থা হত। তাঁর স্ত্রীও জানিয়েছেন, বহুবার এমন হয়েছে, তাঁরা আলোচনা করেছেন, ডেভ চলে গেলে কী হবে। বহুবার রাতে তাঁকে শেষ বিদায় জানিয়ে ঘুমোতে গিয়েছেন। অবশেষে এই অবসরপ্রাপ্ত ড্রাইভিং প্রশিক্ষক ফের দীবনের আলোয় ফিরেছেন অ্যান্টিবডি ককটেল-এর সৌজন্যে, যা দিয়ে চিকিৎসা করা হয়েছিল প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। ক্যাসিরিভিমব এবং ইমদেবাইম -  এই দুই অ্যান্টিবডির সমন্বয়ে তৈরি ওষুধটি করোনভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনকে রুখে দিয়ে একে নতুন কোষ সংক্রমণে বাধা দেয়।

তবে এই ওষুধই যে ডেভ স্মিথকে প্রাণে বাঁচিয়েছে এবং করোনা মুক্ত করেছে, সেই বিষয়ে নিশ্চিত নন তাঁর চিকিৎসকরা। তাঁদের দাবি, হয়তো ডেভ নিজে থেকেই সুস্থ হয়ে উঠছিলেন, এই ওষুধ প্রয়োগ একটি কাকতালীয় ঘটনা। আবার হতেও পারে এই অ্যান্টিবডি ককটেলই তাঁর প্রাণভোমরা হিসাবে কাজ করেছে। যথাযথ পরীক্ষা ছাড়া তা প্রমাণ করার উপায় নেই বলে জানিয়েছেন তাঁরা।