সংক্ষিপ্ত

২০২০ সালের জানুয়ারিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাভাইরাসককে আন্তর্জাতিক উদ্বেগের কারণ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছিল। বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য সংকট হিসেবে চিহ্নিত করেছিল। 

মহামারি শেষ হয়েছে (COVID epidemic is over)- এই সিদ্ধান্ত কীভাবে নেওয়া হবে? এখনও পর্যন্ত এই সিদ্ধান্তের আসার কোনও স্পষ্ট সংজ্ঞা নেই। তবে মহামারি কখন শুরু হয়েছে, বিশ্বব্যাপী কাতটা প্রাদুর্ভাব, কতটা হুমকি তৈরি করেছে- এই সমস্ত বিষয়গুলি আলোচনা ও পর্যালোচনা করেই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বর্তমানে কভিড ১৯ মহামারি কোনও পর্যায় রয়েছে তা নিয়ে আলোচনা করেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) জরুরি বিভাগের প্রধান মাইকেল রায়ান বলেছেন কিছু বিষয়ভিক্তিক রায় দেওয়ার জন্য কতজন বর্তমানে আক্রান্ত হচ্ছে শুধু সেই পরিসংখ্যান খতিয়ে দেখলে চলবে না। রোগের তীব্রতা ও প্রভাব সম্পর্কেও আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। 

২০২০ সালের জানুয়ারিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাভাইরাসককে আন্তর্জাতিক উদ্বেগের কারণ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছিল। বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য সংকট হিসেবে চিহ্নিত করেছিল। তারপর থেকেই সংক্রমণ ক্রমশই বাড়তে থাকে। মার্চ মাসে করোনাভাইরাসকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই সময় কোভিড১৯ সংক্রমণ বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই প্রভাব ফেলতে শুরু করেছিল। 

তারপর গত  এক বছর ৯ মাস ধরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ উথাল পাথাল হয় বিশ্ব। স্তব্ধ হয়ে যায় স্বাভাবিক জীবনের ছন্দ। প্রায় গোটা বিশ্বই গৃহবন্দি হয়ে যায়। কম বেশি লকডাউন সব দেশেই কার্যকর করা হয়েছিল । এতদিন পরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভাইরাসটি আর আন্তর্জাতিক উদ্বেগের জরুরি কারণ নয়। একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি প্রতি তিন মাস অন্তর করোনাভাইরাসের গতি প্রকৃতি নিয়ে পর্যালোচনা করছে। সেই কমিটি বর্তমানে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে অধিকাংশ দেশেই সংকটের আবারও বাড়ছে। সেই কথাও মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। 


ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ক্রিস উডস বলেছেন, মহামারি  শেষ হয়ে গেছে- এই কথাটি একটি নির্দিষ্ট দিনে ঘোষণা করা যাবে না। এটি কোনও একটি নির্দিষ্ট দিনের বিষয় নয় বলেও জানিয়েছেন তিনি। কারণ মহামারি শেষের সর্বজনীনভাবে সম্মত ও নির্ধারিত কোনও মানদণ্ড নেই। তবে দেশগুলির ধীরে ধীরে সংক্রমণের সংখ্যা কমছে-এমনটা লক্ষ্য় করেবে। 

তবে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন কোভিড ১৯ বিশ্ব থেকে কখনই পুরোপুরি বিদায় নেবে না।এটি থেকে যাবে, কিন্তু সংক্রমণের তীব্র ও রোগের তীব্রতা অনেকটাই হ্রাস পাবে। আগামী দিনে এটি ফ্লু-র মতই আকার নেবে। তবে এই রোগের প্রাদুর্ভাব এড়াতে মাস্ক পরতে হবে। ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে। মহামারি শেষ হওয়ার পরেও কোভিড আমাদের সঙ্গে থেকে যাবে বলেও জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। 

তবে এরই মধ্যে করোনার নতুন রূপ ওমিক্রন নিয়ে আতঙ্ক বাড়ছে।  বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে ওমিক্রনের সংক্রমণ রুখতে অতিরিক্ত কোভিড ১৯ ভ্যাক্সিনের প্রয়োজন রয়েছে কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়। কিন্তুধনী দেশগুলির ওমিক্রনের সংক্রমণের জন্য টিকা মজুত করতে শুরু করেছে। যা নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে। অসম ভ্যাক্সিনেশ মহামারির প্রাদুর্ভাব আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে বলেও আশঙ্কা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ওমিক্রনের পরিস্থিতি যাই হোক না কেন বিশ্বের সমস্ত দেশে টিকা সরবরাহ করতে হবে বলেও জোর দিয়েছে। ধনী দেশগুলির টিকা মজুত করে মহামারি আরও দীর্ঘায়িত হবে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।

Omicron: কতদ্রুত ওমিক্রন সংক্রমণ ছড়াতে পারে, প্রমাণ দিল হোটেলের সিসিটিভি ক্যামেরা

Covid 19: ২০২২-এ শেষ হবে করোনা মহামারি, তবে বড় চ্যালেঞ্জ টিকার বৈষম্য বলল WHO

COVID 19: করোনার চতুর্থ তরঙ্গে টার্গেট কি শিশুরা, আশঙ্কার কথা শোনালেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিশেষজ্ঞরা