সংক্ষিপ্ত
পার্ক স্ট্রিট, বর্ষবরণ, গঙ্গাসাগরের বিরোধিতা করছেন চিকিৎসকরা, কারণ গোষ্ঠী সংক্রমণ প্রায় শুরু হওয়ার মুখে। সেই পরিস্থিতি আটকাতে প্রশাসনকে আরও কড়া হতে হবে।
একদিকে চিকিৎসকরা প্রাণপণে সতর্ক করছেন, অন্যদিকে মানুষ ও প্রশাসন অসাবধানতার একের পর এক রাস্তা নিজেরাই তৈরি করে নিচ্ছে, এটা চলতে পারে না। এসএসকেএম হাসপাতালে সাংবাদিক বৈঠকের সময় এই ভাষাতেই ক্ষোভ প্রকাশ করলেন চিকিৎসকরা। তাঁরা এদিন বলেন বিভিন্ন উৎসবে সামিল হয়ে মানুষ বুঝিয়ে দিচ্ছেন, যা তারা কতটা উদাসীন। অথচ তাঁরা মনে করছেন ভ্যাকসিন নেওয়া থাকলে বা একবার করোনা হয়ে গেলে দ্বিতীয় বার তা হতে পারবে না। কিন্তু এটা ভুল ধারণা।
চিকিৎসকদের দাবি তৃতীয় তরঙ্গে যে হারে সংক্রমণ বাড়ছে, তা রীতিমত ভয়ের। দেখা গিয়েছে প্রথমবার করোনা আক্রান্ত হলেও, দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকছে। কারণ ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কমে আসে। ওমিক্রন বা করোনার নতুন রূপের ভয়াবহতা এখনও সামনে আসেনি। তবে খুব দ্রুত গতিতে এটি ছড়াচ্ছে। ফলে প্রায় প্রতিটা ঘরেই ঢুকে পড়তে পারে করোনা।
তাঁরা বলেন পার্ক স্ট্রিট, বর্ষবরণ, গঙ্গাসাগরের বিরোধিতা করছেন চিকিৎসকরা, কারণ গোষ্ঠী সংক্রমণ প্রায় শুরু হওয়ার মুখে। সেই পরিস্থিতি আটকাতে প্রশাসনকে আরও কড়া হতে হবে। এদিন চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন তৃতীয় ঢেউ ইতিমধ্যেই দেশ জুড়ে চলে এসেছে। এর চরিত্র বুঝতে আরও দু সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে। তাঁরা সতর্ক করেন ওমিক্রনের ক্ষমতা কিছুটা কম দেখা যাবে মানব শরীরে। কারণ ইতিমধ্যে দুডোজের ভ্যাকসিন প্রায় সবার নেওয়া হয়েছে। তবে উৎসব বন্ধ না হলে, পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাবে। সেক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ফল ভুগতে হবে বয়স্ক মানুষ ও চিকিৎসকদের।
উল্লেখ্য, রবিবার দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল ৬ হাজার ১৫৩। গত ২৪ ঘণ্টাতেও সংক্রমিতের সংখ্যা ৬ হাজারের উপরেই রয়েছে। তবে রবিবারের তুলনায় সংক্রমণ সামান্য কমেছে। সোমবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের (Health Department) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬ হাজার ৭৮ জন। তার মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৮০১ জন। এর ফলে রাজ্যে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ লক্ষ ৫৫ হাজার ২২৮। পজিটিভিটি রেট ১৬ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০ শতাংশ হয়েছে।
রাজ্যে প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। চিকিৎসকদের মতে, রাজ্যে আছড়ে পড়েছে করোনার তৃতীয় ঢেউ। পাশাপাশি আবার চোখ রাঙাচ্ছে করোনার নতুন রূপ ওমিক্রন। পরিস্থিতি ক্রমশই হাতের বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে। আর এর হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না প্রথম শ্রেণির করোনা যোদ্ধা, অর্থাৎ চিকিৎসক ও পুলিশকর্মীরা। একের পর এক তাঁদের আক্রান্ত হওয়ার খবর সামনে আসছে।