সংক্ষিপ্ত
স্বাধীনতার ৭৫ তম বর্ষ উপলক্ষ্যে পালিত হচ্ছে ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’ ( Azadi Ka Amrit Mahotsav)। কুর্নিশ জানানো হচ্ছে দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের কৃতিদের। স্বাধীনতার ৭৫ তম বর্ষপূর্তি (75 years Independence) উপলক্ষ্যে জেনে নিন 'ক্রিকেট ঈশ্বর' (God Of Cricket), কিংবদন্ত (Lgend), মাস্টার ব্লাস্টার (Master Blaster)সচিন তেন্ডুলকরের (Sachin Tendulkar) জীবন সংগ্রামের কাহিনি।
স্বাধীনতা দিবসের ৭৫ তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে পালিত হচ্ছে ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’ ( Azadi Ka Amrit Mahotsav)। স্বাধীনতা সংগ্রামীদের শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কৃতিদের কুর্নিশ জানানো হচ্ছে। তুলে ধরা হচ্ছে তাদের জীবন সংগ্রামের কাহিনি। ক্রীড়া ক্ষেত্রে যে সকল ব্য়ক্তিত্বরা দেশের নাম গর্বের শিখরে পৌছে দিয়েছেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন সচিন তেন্ডুলকর (Sachin Tendulkar)। মাত্র ১৫ বছর বয়সে রঞ্জিতে অভিষেকে সেঞ্চুরি থেকে যে সাফল্যের বীরগাথা শুরু হয়েছে তারপর আড়াই দশকের আন্তর্জাতিক কেরিয়ারে সেই ছোট্ট ছেলেটি হয়ে উঠেছেন ক্রিকেট ঈশ্বর (God Of Cricket)। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রান, সর্বোচ্চ ম্য়াচ, সর্বোচ্চ সেঞ্চুরি, বিশ্বকাপ জয় থেকে শুরু 'ভারত রত্ন' সম্মান পাওয়া, সচিন তেন্ডুলকরের জীবন সত্যিই অনুপ্রেরণামূলক।
১৯৭৩ সালের ২৪ এপ্রিল মুম্বইয়ের নির্মল নার্সিং হোমে জন্মগ্রহণ করেন সচিন তেন্ডুলকর। মাত্র ১০ বছর বয়সে দাদা অজিত তেন্ডুলকর ছোট্ট সচিনকে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করিয়ে দিয়েছিলেন কোচ রমাকান্ত আচরেকরের কোচিংয়ে। সেখান থেকেই কঠোর পরিশ্রম ও রমাকান্ত আচরেকরের সান্নিধ্যে প্রস্তুত হয়েছিলেন আগামির বিশ্ব তারকা। ১৫ বছর বয়সেই মুম্বইয়ের হয়ে রঞ্জিতে অভিষেক হয় সচিনের। আর প্রথম ম্যাচেই সেঞ্চুরি করে নির্বাচকদের নজরে চলে এসেছিলেন সচিন। তারপর বিনোদ কাম্বলির সঙ্গে স্কুল ক্রিকেটে রেকর্ড পার্টনারশিপ, অসংখ্য ভালো ইনিংস সচিনের জাতীয় দলের পথটা প্রশস্ত করে। তারপর ১৬ বছর বয়য়ে করাচিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় সচিনের।
১৯৮৯ সালের ১৫ নভেম্বর। করাচিতে ভারত-পাকিস্তান (India vs Pakistan) টেস্ট। বল হাতে আগুন ঝড়াচ্ছেন ইমরান খান, ওয়াসিম আক্রম , ওয়াকার ইউনিস। সঙ্গে রয়েছে আবদুল কাদিরের স্পিনের ছোঁবল। ৪১ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপাকে ভারতীয় দল (Idnain team)। সেই পরিস্থিতিতে ব্যাট হাতে নামেন ১৬ বছরের এক বিষ্ময় বালক। নাম সচিন রমেশ তেন্ডুলকর। প্রথমে দেখে কিছুটা অবাকই হয়েছিলে পাক পেস ব্যাটারি। ঠাট্টাও করেছিলেন তারা। অভিষেক ইনিংসে খুব একটা সফলও হননি সচিন। মাত্র ১৫ রানের ইনিংস খেললেও, কয়েকটি বাউন্ডারি মেরে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন বিশ্ব ক্রিকেটে আবির্ভাব হয়ে গিয়েছে আগামি 'ভগবানের'। সিরিজে চারটি টেস্ট ম্যাচে দুটি হাফ সেঞ্চুরি করে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, আগামিতে বিশ্ব ক্রিকেটকে শাসন করবেন তিনি।
এরপর ২৪ বছরের ক্রিকেট কেরিয়ারে বাকিটা রূপকথার কাহিনির মত। লম্বা কেরিয়ারে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০০ সেঞ্চুরি করেছেন সচিন। তার মধ্যে টেস্টে শতরানের সংখ্যা ৫১। ওয়ানডে ফরম্যাটে শতরানের সংখ্যা ৪৯। টেস্ট ও একদিনের ক্রিকেটে তাঁর মোট রান যথাক্রমে ১৫৯২১ ও ১৮৪২৬। কেরিয়ারে মোট ৬টি বিশ্বকাপ খেলেছেন মাস্টার ব্লাস্টার। ২০১১ সালে তিনি বিশ্বকাপও জিতেছেন। কেরিয়ারের শেষ বিশ্বকাপে বিশ্বকাপ জেতার স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় খুশি ছিলেন মাস্টার ব্লাস্টার। ২০১০ সালে প্রথম পুরুষ ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডে ফরম্যাটে ডাবল সেঞ্চুরি করেন মুম্বইকর। ২০১৩ সালে ১৫ নভেম্বর নিজের কেরিয়ারের শেষ ম্যাচও খেলেছিলেন সচিন তেন্ডুলকর। মুম্বইতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে শেষ টেস্ট ৭৪ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। সচিনের সেষ স্পিচ মন ছুঁয়ে গিয়েছিল ক্রিকেট বিশ্বের। ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৬শে জানুয়ারি ভারতের সর্বোচ্চ পুরস্কার ভারতরত্ন হিসেবে সচিনের নাম ঘোষণা করা হয়। স্বীধনতার ৭৫ তম বর্ষপূর্তিতে ভারতীয় ক্রিকেটকে বিশ্বের দরবারে সিংহাসনে প্রতিষ্ঠা করার পাশাপাশি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ব্যাটসম্য়ান হয়ে ওঠার সচিনের লড়াইকে অসংখ্য কুর্নিশ।