সংক্ষিপ্ত
শনিবার আইপিএল ২০২২-এর দশম ম্যাচে গুজরাট টাইটান্সের বিরুদ্ধে পরাজিত হল দিল্লি ক্যাপিটালস। ঋষভ পন্থের একা লড়লেন, দুর্দান্ত বল করল টাইটান্সের পেসাররা।
দুরন্ত গতিতে এগিয়ে চলেছে আইপিএল-এর অন্যতম শিশু ফ্র্যাঞ্চাইজি গুজরাট টাইটান্সের বিজয় রথ। শনিবার আইপিএল ২০২২-এর দশম ম্যাচে দিল্লি ক্যাপিটালস-কে ১৪ রানে পরাজিত করল হার্দিক পাণ্ডিয়ার দল। টাইটান্স পেসারদের, বিশেষ করে প্রাক্তন নাইট জোরে বোলার লকি ফার্গুসনের আগুনে বোলিং-এর সামনেই আত্মসমর্পণ করলেন দিল্লি ক্যাপিটালস-এর ব্যাটাররা। ২৮ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিলেন তিনি। প্রশংসা করতে হবে, হার্দিক পাণ্ডিয়ার অধিনায়কত্বেরও। দিল্লির হয়ে একমাত্র কিছুটা লড়াই করলেন অধিনায়ক ঋষভ পন্থ। ২৯ বলে ৪টি চার মেরে ৪৩ রান করলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৫৭ রানেই আটকে গেল ক্যাপিটালস।
এদিন রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা দারুণ করেছিলেন দিল্লির ওপেনার পৃথ্বী শ। তবে, দিল্লিকে প্রথম ধাক্কা দিয়েছিলেন হার্দিক। নিজেই দ্বিতীয় ওভার বল করতে আসেন টাইটান্স অধিনায়ক। সেইফার্ট (৩) ফেরার পর ক্রিজে এসেছিলেন মনদীপ সিং। পৃথ্বীর মতো তাঁরও বেশ ব্যাটে বলে হচ্ছিল। কিন্তু, চতুর্থ ওভারে লকি ফার্গুসন বল করতে এসেই পৃথ্বীর (১০) গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নেন। একই ওভারে মনদীপকেও (১৮) ফিরিয়ে দেন তিনি। মাত্র ৩৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়েছিল ক্যাপিটালস।
এখান থেকে দুর্দান্ত জুটি গড়েছিলেন অধিনায়ক ঋষভ পন্থ এবং ললিত যাদব। ১১ ওভারে তারা দুজনে দলকে ৮৬-৩ স্কোরে পৌঁছে দিয়েছিলেন। ছন্দপতন হল দ্বাদশ ওভারে ললিত (২৫) রানআউট হওয়ায়। লেগ সাইডে ঠেলে দুটি রান নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু ললিত সময় মতো ক্রিজে পৌঁছতে পারেননি।
ক্রিজে এসেছিলেন রোভম্যান পাওয়েল। পাওয়েল-পন্থ জুটি রান তোলার গতি বাড়াতে শুরু করেছিলেন। ১৪ ওভারের শেষে ১১৮-৪ স্কোরে পৌঁছে গিয়েছিল দিল্লি ক্যাপিটাল্স। ধীরে ধীরে ম্যাচ ঢলে পড়তে শুরু করেছিল দিল্লির দিকে। আর এই সময়েই দেখা গেল হার্দিকের ক্ষুরধার ক্রিকেট মস্তিষ্কের পরিচয়। ১৫তম ওভারে তিনি আক্রমণে আনলেন, এই ম্যাচে দুরন্ত ছন্দে থাকা লকি ফার্গুসনকে। তিনি এসে প্রথম বলেই ফেরালেন পন্থকে। আর তারপর তিন বল পরই ফিরিয়ে দিলেন, দিল্লির হয়ে আগের ম্যাচেই দুর্দান্ত খেলা অক্ষর প্যাটেলকে (৮)। তার আগের দুটি বলেই কিন্তু পরপর দুটি চার মেরেছিলেন অক্ষর।
ওই একটি ওভারই ঘুরিয়ে দিল খেলা। পরের ওভারে রশিদ খানের বলে এলবিডব্লু হল শার্দুল ঠাকুর (২)। তখনও ক্রিজে ছিলেন পাওয়েল, শুরুও করেছিলেন তাঁর ক্যারিবিয়ান মাসেল পাওয়ার দেখাতে। তবে, আন্দ্রে রাসেল বা শিনরন হেতমায়ার হতে পারলেন না তিনি। ক্ষুধার্ত মহম্মদ শামি, ১৮তম ওভারে পরপর দুই বলে পাওয়েল (২০) এবং খলিল আহমেদকে (০) ফিরিয়ে দিলেন।
এরপর ক্রিজে ছিলেন কুলদীপ যাদব এবং মুস্তাফিজুর রহমান। কুলদীপ করলেন ১৪, ফিজ ৩। ব্যাট হাতে তারা কিছু করতে না পারলেও, এদিন বল হাতে দুজনেই সফল হয়েছেন। কুলদীপ ৩২ রান দিয়ে নিলেন একটি উইকেট, আর ফিজ নিয়েছেন ২৩ রানে ৩টি। দিল্লির বোলারদের মধ্যে সফল খলিল আহমেদও, ৩৪ রান দিয়ে দুই উইকেট নিয়েছেন।
তবে, প্রথম ইনিংস ছিল শুভমান গিল-ময়। ৪টি ছয় ও ৬টি চারের সহায়তায় তিনি মাত্র ৪৬ বলে ৮৪ রানের ইনিংস খেললেন। চার-ছয়ের পাশাপাশি গোটা ইনিংস জুড়ে দৌড়ে রান নিয়ে স্কোরবোর্ড সচল রেখেছিলেন তিনি। মাত্র ৬টি ডট বল খেলেছেন। তিনিই গুজরাট টাইটান্সের ইনিংস অ্যাঙ্কর করেন। প্রসঙ্গত এটাই তাঁর সর্বোচ্চ টি২০ স্কোর। এছাড়া হার্দিক পাণ্ডিয়া ৩১, এবং মিলার অপরাজিত ২০ রান করেন।
এই জয়ের ফলে ২টি ম্যাচ খেলে দুটিতেই জয় পেল গুজরাত টাইটান্স। অন্যদিকে প্রথম ম্যাচে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে পরাজিত করে এবারের মরসুম শুরু করলেও, দ্বিতীয় ম্যাচেই আটকে গেল পন্থের দিল্লি ক্যাপিটাল্স।