সংক্ষিপ্ত
- কিছুদিন আগেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টাইম ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে দ্য গ্রেট ডিভাইডার বলে আখ্যা দেওয়া হয় মোদীকে।
- এবার নরেন্দ্র মোদীকে আরও একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের সমালোচনায় পড়তে হল।
আবার কাঠগড়ায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এক্সিট পোলে তিনি এগিয়ে থাকলেও সমালোচনার হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। প্রশ্ন উঠছে গত পাঁচ বছরের কোনও প্রতিশ্রুতি পূরণ না করেও কীভাবে এগিয়ে যাবে মোদী! কেন মানুষ ভোট দেবে! এক্সিট পোলের ফলাফল কি তা হলে ঠিক! এ সব প্রশ্ন তুলেছেন ইংল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম 'দ্য গার্ডিয়ানের' লেখক কপিল কোমিরেড্ডি।
কিছুদিন আগেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টাইম ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে দ্য গ্রেট ডিভাইডার বলে আখ্যা দেওয়া হয় মোদীকে। সেই কভার স্টোরির লেখক আতিশ তাসিরকেও সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। এবার নরেন্দ্র মোদীকে আরও একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের সমালোচনায় পড়তে হল। এই লেখাটি মতামত বিভাগে ছাপা হয়েছে।
লেখক কপিল কোমিরেড্ডিও বলছেন, মোদী ফের ক্ষমতায় এলে ধর্ম কে অবলম্বন করে সেই ভেদাভেদের রাজনীতিই করবেন। ২০১৪-য় ক্ষমতায় আসার পরে নরেন্দ্র মোদী সারা দেশের মানুষকে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু সেগুলি অসম্পূর্ণ থেকে গিয়েছে বলেই দাবি করেছেন দ্য় গার্ডিয়ানের লেখক।
এর মধ্যে অন্যতম প্রতিশ্রুতি ছিলল কর্মসংস্থান নিয়ে। বছরে ২ কোটি কর্মসংস্থানের আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু পাঁচ বছর পরে দেখা যাচ্ছে, গত ২০ বছরের মধ্য়ে এই মোদী জমানাতেই বেকারত্বের হার সবচেয়ে বেশি।
এছাড়াও মোদী স্মার্ট সিটি তৈরি করার কথা বলেছিলেন, যার দেখা এখনও মেলেনি। বলেছিলেন গঙ্গা শোধন হবে। কিন্তু পাঁচ বছর পরেও তার কোনও পরিবর্তন হয়নি।
এবারের নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধেও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছে। সেই প্রসঙ্গেও লেখক বলছেন, ১৯৫২ থেকে স্বচ্ছ ভাবে কাজ করে এসেছে কমিশন। কিন্তু এবার যেন মোদীর ডান হাতের মতো ভূমিকা পালন করেছে তারও। এমনকী, নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে সেনা মৃত্যুকে ভোট ভিক্ষার কাজে লাগিয়েছেন মোদী।
লেখক উল্লেখ করেছেন, এই পাঁচ বছরে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থারও অবনতি হয়েছে। দেশ সংস্কৃতি, শিক্ষা সবদিক থেকে পিছিয়ে পড়েছে। গণতান্ত্রিক দেশ হয়েও সাম্প্রদায়িকতাকে বড় ইস্যু করেছেন মোদী। পুরো লেখাটিতেই বার বার মোদীর পাঁচ বছর আগের প্রতিশ্রুতি ও পাঁচ বছর পরের ব্যর্থতাকে তুলে ধরেছেন কপিল।
কিন্তু এত ব্যথ্র্তার পরেও কীভাবে এক্সিট পোলে এগিয়ে থাকছেন মোদী। কেনই বা মানুষ ভোট দিচ্ছেন তাঁকে। মানুষ কি বিকল্প পাচ্ছে না! কিন্তু তার চেয়ে বড় আর একটি কারণ হল এই ব্যর্থতাকে ছাপিয়ে মোদী অন্য আর একটি দিকে সফল। ধর্মবোধে ধুনো দিতে মোদী সফল হয়েছেন।
কপিল বলছেন, বেশ কিছু মানুষের সঙ্গে তিনি কথা বলে দেখেছেন, হিন্দুদের মধ্যে হিন্দু জাতীয়বাদকে প্ররোচণা দিয়েছে মোদী সরকার। তাঁদেরকে ধর্মের আফিম খাইয়ে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে এই গণতান্ত্রিক দেশে মুসলিমদের জায়গা কোথায়। আর তাই গত পাঁচ বছরে বার বার ধর্ম নিয়ে চলেছে রাজনীতি। কর্মসংস্থান, শিক্ষা, অর্থনীতি সব কিছুকে ছাপিয়ে যেন শীর্ষে জায়গা করে নিয়েছে ধর্মান্ধতা। আর তাই এবারও ক্ষমতায় আসা নিয়ে হয়তো আত্মবিশ্বাসী মোদী সরকার। আর মোদী ক্ষমতায় এলে আগামী পাঁচ বছরে ভারতকে তিনি অন্ধকারে নিয়ে যাবেন বলেই মনে করছেন কপিল কোমিরেড্ডি।