সংক্ষিপ্ত
এই নিয়ে তিন তিন বার মেয়েটা যমের দুয়ার থেকে ফিরে এল। ওকে একটু সময় দে। সেই ফাঁকে নিজেরও একটু যত্ন নে। কথা রাখবি তো, বাবু?
স্নেহের বাবু--- কেমন আছিস? বোকার মতো এই প্রশ্নটা করব না। যদিও চিঠির শুরুটা সবাই এ ভাবেই করেন। কিন্তু এখন সবাই এটাও জানেন, তুই কেমন আছিস! আমি তো জানিই। সবাই তোর মুখাপেক্ষী। অদ্ভুত ভাবে একটা ধারণা বা বিশ্বাস তৈরি হয়ে গিয়েছে, ঐন্দ্রিলা শর্মাকে এক মাত্র সব্যসাচী চৌধুরীই ফিরিয়ে আনতে পারবে। আমিও তা-ই বিশ্বাস করি। পাশাপাশি এটাও বিশ্বাস করি, তার জন্য তোকে যে করে হোক সুস্থ থাকতে হবে। তুই কি সেটা বুঝতে পারছিস?
তোর সঙ্গে কথা বলে এবং সংবাদমাধ্যম থেকে জেনেছি, গত সাত দিন ধরে হাওড়ার প্রথম সারির বেসরকারি হাসপাতালে পড়ে আছিস তুই। তোর দিন শুরু হচ্ছে ওখানেই। তোর রাত গভীর হচ্ছে ভেন্টিলেশন রুমের বাইরে বসে। দিনে তিন বার তুই ঐন্দ্রিলার সঙ্গে কথা বলছিস। ওর ঘুম ভাঙাতে। নিজের মুখেই এও বলেছিস, তোর বন্ধু-অভিনেতা সৌরভ দাস, দিব্য তোর জন্য খাবার আনছে। কিন্তু তোর রুচি নেই। না থাকাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বাবু এটাও তো তোকে মনে রাখতে হবে, ঐন্দ্রিলার মেরুদণ্ড যে তুই বাবা! তার জন্য তোকে যে করেই হোক সোজা থাকতে হবে।
তুই সবাইকে আশ্বাস দিচ্ছিস। তুই কেন বিশ্বাস করছিস না, ঘরে ফিরবে বলেই ঐন্দ্রিলা ভেন্টিলেশন থেকে বেরিয়েছে! এ বার তোর দিকে তাকা। শুধু খাওয়া নয়। তাল মিলিয়ে জল খাওয়া, প্রাত্যঃকৃত্য এবং স্নান, তোকেও যে করতে হবে! ফোনে বলছিলি, তোর পাখির চোখ ঐন্দ্রিলা। আমাদের পাখির চোখ কিন্তু ঐন্দ্রিলার সঙ্গে তুইও। আমরা জানি, তুই হারতে পারিস না। ঐন্দ্রিলা তোকে হারতে দেবে না। বরাবরের বামপন্থী। তাই জোড়-হাতে ঈশ্বরের কাছে যেতে পারি না। কিন্তু মন থেকে আশীর্বাদ, শুভেচ্ছা সবটাই জানাতে পারি। সেই জায়গা থেকেই বলছি, তোদের জোট ভাঙার সাধ্য কারওর নেই। তোর কথাই সত্যি হবে। তুইই ওকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাবি। ইতিমধ্যেই জ্বর কমেছে। শ্বাসকষ্ট সেরেছে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে। এক্ষুণি এক্ষুণি আর কী চাই?
বরং ধীরেসুস্থে সুস্থ হলে ঐন্দ্রিলার সুস্থতা দীর্ঘস্থায়ী হবে। এই নিয়ে তিন তিন বার মেয়েটা যমের দুয়ার থেকে ফিরে এল। ওকে একটু সময় দে। সেই ফাঁকে নিজেরও একটু যত্ন নে। ছোট থেকে তুই খুব বাধ্য। যত শান্ত ততই জেদি। তবু আমার কথা ফেলিসনি কোনও দিন। এ বারেও কথা শুনবি, এই আশা নিয়েই তোকে খোলা চিঠি লেখা। কথা রাখবি তো, বাবু?
তোর-মামা দাদু
আরও পড়ুন---
‘এত আনন্দ আয়োজন সবই বৃথা আমায় ছাড়া’! নাচে মুগ্ধ সৌরভ বুকে টেনে নিয়েছিলেন ঐন্দ্রিলাকে
দিনে তিন বার গল্প করি ঐন্দ্রিলার সঙ্গে, গলা চিনতে পারে, আমার হাত ধরার চেষ্টা করে, জানালেন সব্যসাচী
তৃতীয় বার মিব়্যাকল! কমছে ভেন্টিলেশন সাপোর্ট, চিকিৎসায় ধীরে ধীরে সাড়া দিচ্ছেন ঐন্দ্রিলা