সংক্ষিপ্ত

  • এই মুর্হুতে তিনি অভিনয় করছেন  নেতাজি ধারাবাহিকে
  • সংসার, সন্তান এই সবকিছুর সঙ্গে সমানভাবে চলছে সানন্দার অভিনয়ও
  • কেমন চলছে তাঁর অভিনয়ের পাশাপাশি বুটিক-এর কাজ
  • সবকিছু নিয়ে খোলামেলা আড্ডায় অভিনেত্রী সানন্দা বসাক

এই মুর্হুতে সানন্দা অভিনয় করছেন নেতাজি ধারাবাহিকে। সংসার, সন্তান এই সবকিছুর সঙ্গে সমানভাবে চলছে তাঁর অভিনয়ও। কেমন চলছে তাঁর অভিনয়ের পাশাপাশি বুটিক-এর কাজ। এই সবকিছু নিয়ে এশিয়ানেট নিউজ বাংলার প্রতিনিধি পিয়ালি মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে খোলামেলা আড্ডায় অভিনেত্রী সানন্দা বসাক।

প্রশ্ন- তোমার হাতে এই মুহুর্তে কী কী কাজ রয়েছে?

সানন্দা- এতোদিন কাজ করেছি জয়ীতেও। তবে আমি এই মুহুর্তে নেতাজি ধারাবাহিক নিয়েই ব্যস্ত। 

প্রশ্ন- সিরিয়ালের পাশাপাশি সিনেমাতে কাজ করার কি কোনও ইচ্ছা আছে?

সানন্দা- না, এই মুহুর্তে সিনেমায় কাজ করার ইচ্ছে নেই। একটি টেলিফিল্মে আমি মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছি। টেলিফিল্ম তো প্রায় উঠেই যেতে বসেছে, তবে একটি চ্যানেলে এই টেলিফিল্মের ধারাটা এখনও এই টেলিফিল্মটিতে কাজ করার একটা অন্যরকম অভিজ্ঞতা ছিল, ফলে কাজটা বেশ ভাল লেগেছিল করতে। যেহেতু চরিত্রটার প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আমি জানি কি হতে চলেছে তাই বেশ ভাল লাগে। যদি অন্যরকমের কিছু সিনেমা পাই, যেমন সেমি-কমার্শিয়াল সিনেমা বা অন্য ধরণের কোনও গল্প, তাহলে আমি সেই সিনেমাতে কাজ করতে ইচ্ছুক।

প্রশ্ন- হাতে কি এই মুহুর্তে কোনও লিড রোলের অফার রয়েছে?

সানন্দা- টেলিফিল্মটিতে আমি মুখ্য চরিত্রেই অভিনয় করেছি। আর এই মুহুর্তে কিছু ওয়েব প্ল্যাটফর্মে কিছু কাজ করার কথা হয়ে আছে। ওয়েবে হয়ত আমার চরিত্রটা মুখ্য নয়, তবে চরিত্রটা খুব ইন্টারেস্টিং। আমি বরাবরই সেই চরিত্রগুলোই পছন্দ করি যেগুলো খুব ইন্টারেস্টিং। মুখ্য চরিত্রগুলো বইয়ের মলাটের মত, মলাটের ওপরের ছবি। আর বইয়ের ভিতরেও তো বেশ কিছু ইন্টারেস্টিং চরিত্র থাকে, সেই চরিত্রগুলো অনেক সময় নায়ক নায়িকাকেও ছাপিয়ে যায় তাই আমি সেই ধরনের চরিত্রগুলোতেই বেশি আগ্রহী। 

প্রশ্ন- অভিনয়ের পাশাপাশি তোমার একটি বুটিকও আছে, এক সঙ্গে ব্যালেন্স কর কিভাবে? 

সানন্দা- না, পাশাপাশি দুটো কাজকে একসঙ্গে করতে তেমন কোনও অসুবিধা হয়না। রোজ সকালে উঠে শুটিংয়ে যাওয়া, মেকআপ করা এগুলোতে কিছুটা একঘেঁয়েমি এসে গিয়েছিল। মনে হচ্ছিল জীবনে কিছু একটা নেই, তাই এই বুটিকের ভাবনা। ছোটবেলা থেকেই আমি হ্যান্ডক্রাফটের কাজ করি এবং কাজটা করতেও আমার বেশ ভালো লাগত। প্রায় তিন বছর হয়ে গেল আমার এই বুটিক চলছে। কিন্তু আমি ভাবতে পারিনি এই বুটিকটা এত ভালোভাবে চলবে। যদি বুটিককে আমি এটাকে ফার্স্ট প্রায়োরিটি দিই তবে এটাই হয়ত মুখ্য পেশা হয়ে দাঁড়াবে, কারণ আমি বিজনেস ম্যানেজমেন্টের ছাত্রী। প্রায় সাড়ে চার বছর চাকরিও করেছি। চাকরি জীবনের সেই অনুভুতিটা আমি আমার বুটিকের মধ্যে দিয়ে ফিরে পাই। মেগা সিরিয়াল সব সময় তো থাকেনা তাই এর পাশাপাশি এই বুটিকের কাজটা করতে বেশ ভালো লাগে।

প্রশ্ন- পারিবারিক জীবন এবং কেরিয়ার এই দুটো একসঙ্গে কি করে সামলাও, অসুবিধা হয়না?

সানন্দা- না, সেরকম কোনও অসুবিধা হয়না। এখন বাচ্চাটাও অনেকটা বড় হয়েছে, সাড়ে চার বছর হল ওর। মাঝে মাঝে হয়তো একটু অসুবিধা হয়, কিন্তু এই কাজগুলো একদিন না একদিনতো করতেই হত। যেহেতু আমার কেরিয়ার রয়েছে তাই অনেক ক্ষেত্রে আমাকে কাজের লোক বা বাড়ির লোকের ওপর নির্ভরশীল হতে হয়। তাও আমি আমার সাধ্যমত আমার মেয়েকে সময় দিই।

প্রশ্ন- মানুষ হিসাবে সানন্দা কেমন? 

সানন্দা- দেখো আমার কাজের জায়গায় চরম শত্রু বলে কেউ নেই। আমার ব্যক্তিগতভাবে যাকে পোষায় না আমি সরে আসি সেখান থেকে। আর একটা জিনিস আমি খুব অপছন্দ করি সেটা হল আমার পিছনে কথা বলা। আমার বাড়িতে কী রান্না হল সেটা তো পাশের বাড়ির লোকের না জানলেও চলবে। এছাড়া আমি কাওকে নিয়ে অকারণে কথা বলাও পছন্দ করি না। খুব যদি কাছের কেউ হয় সেক্ষেত্রে আমি হয়ত তাকে বলি। কোনও ভুল সিদ্ধান্ত নিলে। আমি লোকের বেডরুমে গিয়ে সত্যি করে কথা বলা পছন্দ করি না। আর আমার বেডরুমে ঢুকে কেউ কথা বলুক এটাও পছন্দ করি না আমি।

প্রশ্ন- সামনে তো পুজো, পুজোর সময় কি প্ল্যান রয়েছে?

সানন্দা- যেহেতু আমার বুটিক রয়েছে তাই ওটার জন্য একটা চাপ থাকে। পুজোর আগে থেকেই চাপটা শুরু হয়ে যায়। পুজোর সময় যেহেতু শ্যুটিং বন্ধ থাকে তাই তাই পুজোর আগে শ্যুটিং-এর প্রেশারটা অনেকটা থাকে। তাই পুজোর প্রথম এক-দুটো দিন ঘুমিয়ে, সিনেমা দেখেই কেটে যায়। তাছাড়া প্যান্ডেল হপিং বিষয়টা আমি খুব একটা পছন্দ করি না। আমি খুব একটা পার্টি ফ্রিক নই। পার্টি করি কিন্তু খুব কাছের লোকজনের সঙ্গে। এছাড়া বাচ্চার সঙ্গে সময় কাটাই। পুজোর সময় কিছু কিছু মেলা হয় সেখানে বেশ কিছু রাইডস আসে ওগুলোতে আমার মেয়ে চড়তে খুব ভালেবাসে। তাই ওকে নিয়ে সেই সমস্ত মেলাতে আমাকে যেতে হয়। 

প্রশ্ন- শ্যুটিং-এর চাপে বাইরে ঘুরতে যাওয়া হয়?

সানন্দা- হ্যাঁ, সেটা আমি যাই। কিছুদিন আগেই দার্জিলিং থেকে ঘুরে এলাম। বছরে দুবার চেষ্টা করি যাওয়ার, সেটা না হলেও একবার তো যাইই। সবমসয় তো হয়ত সমান চাপ থাকে না, তাই সেই সুযোগ বুঝে যাই।