সংক্ষিপ্ত
মাত্র ৫৪ বছর বয়সে প্রয়াণ ঘটল বিশিষ্ট তবলা ওস্তাদ পণ্ডিত শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কোভিড পরবর্তী জটিলতাই কেড়ে নিল তাঁর প্রাণ।
চলে গেলেন বিশিষ্ট তবলা ওস্তাদ পণ্ডিত শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়। বয়স হয়েছিল মাত্র ৫৪ বছর। মূলত কোভিড পরবর্তী জটিলতার কারণেই এই অকাল প্রয়াণ ঘটল শিল্পীর। গত ২০ জুন থেকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। বুধবার সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। অবশ্য মাসখানেক ধরেই তাঁকে একমো সাপোর্টে রাখতে হয়েছিল।
জানা গিয়েছে, করোনা ভ্যাকসিনের দু'টি ডোজই নিয়েছিলেন তবলা মায়েস্ত্রো। কিন্তু, করোনা সংক্রমণ ততদিনে তাঁর ফুসফুসের মারাত্মক ক্ষতি করে দিয়েছিল। মাঝে কিছুটা সুস্থ হওয়ার লক্ষণ দেখা গেলেও, বুধবার সকাল থেকেF তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে ৷ শিল্পীর পরিবার জানিয়েছে এদিন দুপুর দু'টোর কিছুটা আগে তিনি চিকিৎসার বাইরে চলে যান।
ওই বেসরকারি হাসপাতালের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভর্তি হওয়ার সময় কোবিড সংক্রমণের সঙ্গে সঙ্গে সেপটিক শকে ছিলেন তবলা শিল্পী। তারপর তাঁর বাম ফুসফুসে ব্রঙ্কো-প্লিউরাল ফিস্চুলা হয়। এর জন্য শুরুর থেকেই দীর্ঘদিন তাঁর একমো সাপোর্ট লেগেছে। পরে তাঁর শরীরের কোভিড পরবর্তী বিভিন্ন জটিলতা দেখা দেয়। সেইসঙ্গে মূত্রাশয়েও সমস্যা দেখা দিয়েছিল। আর তাতেই শেষ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা ভক্তদের মন খালি করে চলে গেলেন শিল্পী।
শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের জগতে তবলা ওস্তাদ হিসাবে শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় এক বিশাল বড় নাম। একেবারে ৪ বছর বয়স থেকেই তবলা বাজিয়ে 'বিস্ময় বালক' হিসাবে পরিচিত হয়েছিলেন। বিভিন্ন ঘরানায় বাজনায় পারদর্শী শুভঙ্কর, তাঁর ধারাবাহিক ভাল পারফরম্য়ান্স এবং দক্ষতার জোরে সারা বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। ভারতের অনেক সেরা সেরা সঙ্গীতশিল্পী এবং নৃত্যশিল্পীদের অন্যতম প্রিয় সঙ্গতশিল্পী ছিলেন ওস্তাদ শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়। গত আঠাশ বছর ধরে বিশ্বের একের পর এক খ্যাতনামা মঞ্চে তাঁর বাজনা উপস্থাপন করেছেন তিনি। তাঁর অকাল প্রয়াণে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত জগতে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
চার বছর বয়সে প্রথমে পণ্ডিত মানিক দাসের কাছ থেকে কয়েক বছর বেনারস ঘরানার তালিম নিয়েছিলেন পণ্ডিত শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তারপর পঁচিশ বছর ধরে ফারুকাবাদ ঘরানার তালিম নেন পণ্ডিত স্বপন শিব-এর কাছ থেকে। পণ্ডিত রবিশঙ্কর, ওস্তাদ আমজাদ আলি খান, পণ্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া, পণ্ডিত শিবকুমার শর্মা, পণ্ডিত বিরজু মহারাজ, পণ্ডিত জসরাজ, পণ্ডিত বালমুরলিকৃষ্ণন, গিরিজা দেবী-সহ বহু গুণীজনকে সঙ্গত করেছিলেন এই দেশের অন্যতম উজ্জ্বল তবলা বাদক।