বিয়ের আগে কেন মেলানো হয় কুষ্ঠি, সত্যিই কী এর প্রয়োজন আছে? জেনে নিন জ্যোতিষ মত
কথায় আছে, জন্ম-মৃত্যু-বিয়ে, তিন বিধাতা নিয়ে। তাই আমাদের জীবনের এই তিন বিষয়ের ওপর আমাদের হাত নেই। ভগবান যা ঠিক করে রেখেছেন, সময় হলে তারই সম্মুখীন হতে হবে। হিন্দুদের মধ্যে প্রচলিত আছে এমন ধারণা। তবে, জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল বিবাহ। দাম্পত্য জীবন সুখের হোক তা সকলেরই কাম্য। সে কারণে বিয়ের আগেও চলে নানা রকম প্রস্তুতি। একে অন্যের মনসিকতা বোঝার জন্য দীর্ঘদিন মেলামেশা করে দুজন। আবার অনেকে মেনে চলে জ্যোতিষ মত।
- FB
- TW
- Linkdin
একটা সময় বিয়ের আগে হবু পাত্রা-পাত্রীর কুষ্ঠি মেলানোর রীতি ছিল। বর্তমানে এই রীতি কম দেখা গেলেও তা পুরোপুরি বন্ধ হয়েছে এমন নয়। বিয়ের আগে বহু পরিবার দুজনের কুষ্ঠি মেলায়। শাস্ত্র মতে, নির্দিষ্ট কিছু জিনিসের মিল থাকার অর্থ দাম্পত্য সুখ বজায় থাকবে।
শাস্ত্র মতে, কুষ্ঠিতে বর ও কনের মধ্যে যদি ১৮টির কম দিক মিলে যায় তবে বিবাহ সফল হতে পারে না। তাই বৈদিক জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, এই ধরনের ব্যক্তিদের জুটি বাঁধার পরমার্শ দেওয়া হয় না। ১৮ থেকে ২৪টা দিক মিলে গেলে বিয়ের অনুমতি দেওয়া হয়। শাস্ত্র মতে, কুষ্ঠিতে ২৫ থেকে ৩২টি দিক মিলে যাওয়ার অর্থ দাম্পত্য জীবন সুখের হবে। যদি ৩৩টির বেশি দিক মিলেয় যায়, তাহলে এই ধরনের জুটি পৃথিবীর সেরা জুটি হিসেবে বিবেচিত হবে।
জন্ম সময় অনুসারে আমদের প্রতিটি মানুষের আলাদা আলাদা রাশি। জ্যোতিষ শাস্ত্র অনুসারে, জীবনের ভলো-মন্দ নির্ভর করে আমাদের রাশির ওপর। তাই বিয়ে যেহেতু জন্ম ও মৃত্যুর মাঝে সব থেকে বড় বিষয়, তাই এটি এর ওপরও রাশির প্রভবা পড়ে এমন মনে করা হয়। সে কারণেই, বিয়ের আগে পাত্র পাত্রীর কোষ্ঠী মিলিয়ে দেখে নেওয়া হয়, তাদের জীবন সত্যিই সুখের হবে কি না।
পাত্র পাত্রীর কোষ্ঠী বিচার করার সময় নক্ষত্রের মিলন হচ্ছে কি না, তা দেখা হয়। দেখা হয় মঙ্গলের দশা কেমন রয়েছে সম্পর্ক। বিয়ের আগে দুজনের ৩৬টি দিক বিবেচনা করা হয়। যদি ৩৬-টির মধ্যে অন্তত ১৮টি মেলে তাহলে সেই পাত্র ও পাত্রীর বিয়ের অনুমতি দেওয়া হয়ে থাকে।
কোষ্ঠীতে ৩৬টি গুণ মিলিয়ে দেখার প্রক্রিয়াটি হল কুষ্টি বিচারের প্রথম ধাপ। এর পর দেখা হয় কেউ মাঙ্গলিক কি না। শাস্ত্র মতে, কেউ একজন মাঙ্গলিক হলে, সেই বিয়ের নিয়ে সমস্যা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে বিয়ের আগে সেই মাঙ্গলিক ব্যক্তির সঙ্গে গাছ অথবা নারায়নের বিয়ে দেওয়া হয়। তবে, দুজনে মাঙ্গলিক হলে এমন সমস্যা নেই।
তিনটি ধাপে কুষ্টি মেলানো হয়ে থাকে। প্রথম ধাপে গুণ বিচার। দ্বিতীয় ধাপে মাঙ্গলিক কিনা তা দেখা হয়, তা তৃতীয় ধাপে মহাদশাগুলো বিচার করা হয়। এই তিনটি ধাপের পরে পাত্র পাত্রীর বিয়ের কোষ্ঠী মিললে তবেই বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
শাস্ত্র মতে, প্রাচীন এই বিদ্যার গুরুত্ব অস্বীকার করা যায় না। গ্রহ নক্ষত্রের অবস্থানের ওপর নির্ভর করে মানুষের জীবনের অনেকটা অংশ। এই কথা বহু যুগ ধরে প্রমাণ হয়েছে। তবে, এই নিয়ে এক এক জন মানুষের এক এক রকম মানসিকতা। কারও এর ওপর বিশ্বাস, আছে তো কারও নেই।
জ্যোতিষের মোট ১২টা রাশি। এদের ৪ ভাগে ভাগ করা যায়। আগুন- মেষ, সিংহ ও ধনু রাশি। জল কর্কট, বৃশ্চিক ও মীন রাশি। পৃথিবী বৃষ, কন্যা, মকর। বায়ু হল মিথুন, তুলা ও কুম্ভ রাশি।
পুরাণ অনুসারে, রাশির মিল হলে জাতক জাতিকারা একে অপরের সঙ্গে সুখে থাকেন। কেই যদি আলাদা বিভাগের রাশির জাতক-জাতিকার সঙ্গে ঘর বাঁধেন, তাহলে বিপদ। সে কারণে জলকে আগুন অথবা বায়ুর সংস্পর্শে আনলে হতে পারে বিপদ।
জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল বিবাহ। দাম্পত্য জীবন সুখের হোক তা সকলেরই কাম্য। দাম্পত্য জীবন কতটা সুখের হবে, তা অনেকটা নির্ভর করে গ্রহ-নক্ষত্রের ওপর। গ্রহের অবস্থানের ওপর মানুষের জীবনে নানা রকম পরিবর্তন হয়। তাই বিয়ের আগে জেনে নিন কী রয়েছে আপনার কুষ্টিতে। দুজনের রাশি মিলিয়ে জেনে নিন কতটা সুখের হবে আপনাদের বিয়ে।