আর্থিক বাধা দূর হবে এবং পরীক্ষায় সফল হবেন সিঁদুরের গুণে, রইল কয়টি টোটকা
- FB
- TW
- Linkdin
মনে করা হয়, সিঁদুর পরলে দেবী লক্ষ্মী (Maa Laxmi) মাথায় বিরাজমান হন। দেবী লক্ষ্মীকের সম্মান জানাতে বিবাহিত মহিলারা সিঁথিতে সিঁদুর পরেন। লক্ষ্মীর কৃপায় স্বামী ও স্ত্রীর দাম্পত্য সুখ বজায় থাকে লক্ষ্মীর কৃপায়। সে কারণে, সিঁদুর পরলে দেবীর কৃপা পাওয়া সম্ভব। দাম্পত্য সমস্যায় অনেকেই ভুগছে। সেই সুখ বজায় রাখতে চাইলে সিঁদুর পরতে পারেন।
হিন্দু শাস্ত্র অনুসারে, সিঁদুরকে শক্তির প্রতীক (Symbol) মনে করা হয় সিঁদুরের রঙ লাল। কারণ লাল সৃষ্টির প্রতীক। লাল রঙকে প্রকৃতির সৃষ্টি কর্তা মানা হয়। নারীর কপালে সিঁদুর সন্তান ধারণের ক্ষমতাকে বর্ণনা করে থাকে। তাই সন্তানের মঙ্গলের জন্যও পরতে পারেন সিঁদুর। শাস্ত্র মতে, সিঁদুর বিবাহিত নারীর শক্তি বৃদ্ধি করে।
প্রচলিত আছে, মানব দেহের বিভিন্ন স্থানে দেবতা বিরাজমান। স্বয়ং ব্রক্ষ্মা থাকেন কপালে। সে কারণে ব্রক্ষ্মাকে সম্মান জানাতে ও তুষ্ট করতে বিবাহিত (Marriage) মহিলারা সিঁদুর পরেন। শাস্ত্র মতে, আদি দেবতা হলেন ব্রক্ষ্মা। তিনি হিন্দু ধর্মের সৃষ্টির দেবতা। ব্রক্ষ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর, এই তিনজন হলেন আদি দেবতা। তাই ব্রক্ষ্মার কৃপা পেতে বিবাহিত মহিলাদের সিঁদুর পরা শুভ বলে মনে করা হয়।
একাধিক জ্যোতিষ টোটকা রয়েছে সিঁদুর নিয়ে। বলা হয়, পরীক্ষায় সাফল্য এনে দেয় সিঁদুর। পরীক্ষায় সফল হতে চাইলে গণপতির মন্দিরে সিঁদুর দান করুন। এতে আত্মবিশ্বাস বাড়বে। আপনি কাজে সফল হবেন। পরীক্ষার দিন সকালে গণেশ মন্দিরে গিয়ে এই কাজ করতে পারেন। তেমন হলে, পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগেও সিদ্ধিদাতার মন্দিরে গিয়ে সিঁদুর দান করুন।
আর্থিক সমস্যা দূর হবে সিঁদুরের গুণে। একটি সিঁদুর রঙের লাল কাপড়ে নারকেল মুড়ে নিন। তার ওপর সিঁদুর লাগান। সেই নারকেল মা লক্ষ্মীর মূর্তির সামনে রাখুন। দেবীর আরাধনার সময় পুজো করুন এই নারকেল। এবার ঘরের কোথাও এটি রেখে দিন। এই নারকেলের গুণে সকল আর্থিক বাধা দূর হবে। এমনকী লোনের বোঝা থেকেও মুক্তি পেতে পারেন।
সিঁদুর দিয়ে ভগবান হনুমানের পুজো করুন। যে কোনও সংকট থেকে মুক্তি পেতে পারেন হনুমানের কৃপায়। প্রতি মঙ্গল ও শনি হনুমান চাল্লিশা পাঠ করুন। এই সময় দেবতার ছবি কিংবা মূর্তিতে সিঁদুরের টিপ পরান। এই টিপ নিজের কপালেও ছোঁয়ান। এতে সকল বাধা থেকে মুক্তি পাবেন। সে কোনও ইচ্ছে পূরণ হবে।
বাস্তুদোষ দূর হবে সিঁদুরের গুণে। ঘুম থেকে উঠে সিঁদুর দেখুন। এতে নেতিবাচক শক্তি দূর হবে। তাছাড়া, বাড়ির প্রবেশ দ্বারে গণপতির ছবি রাখুন। সেই ছবিতে সিঁদুরের টিপ দিন। এতে সুখ শান্তি বজায় থাকে। শাস্ত্র মতে, সিদ্ধিদাতা গণেশকে সিঁদুরের টিপ পরালে দূর হবে সকল পারিবারিক অশান্তি।
নানা কারণে আর্থিক বাধা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে ব্যবসাক্ষেত্রে আর্থিক ক্ষতি কিংবা আর্থিক বাধার সম্মুখীন হন অনেকে। এই বাধা কাটাতে মেনে চলুন সিঁদুরের টোটকা। একটি পান পাতায় সিঁদুর লাগিয়ে তা অসত্থ গাছের ডালে বেঁধে দিন। বুধবার এই কাজ করবেন। পর পর তিনটি বুধবার এই টোটকা করলে আর্থিক বাধা দূর হবে।
জ্যোতিষের পাশাপাশি বিজ্ঞানে বর্ণিত আছে সিঁদুরের শক্তি প্রসঙ্গে। বিজ্ঞান মতে, সিঁদুর মাথার নার্ভের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। মহিলারা যেখানে সিঁদুর পরেন সেখানে সম্পূর্ণ নার্ভ থাকে। তাই মাথা ঠান্ডা থাকে সিঁদুর পরলে। এর পরোক্ষ প্রভাবে শরীর সুস্থ থাকে। তাই সিঁদুর পড়া শুধু মাত্র অন্ধবিশ্বাস নয়। সিঁদুর পরলে শরীর ও মন উভয় সুস্থ থাকে।
সিঁদুরের লাল রঙের মধ্যে এমন একটি উপাদান থাকে যা মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখে। তবে, সিঁদুর পরা নিয়ে এক এক জনের এক এক রকম ধারণা। আজকাল বহু বিবাহিত মেয়েরাই সিঁদুর পরেন না। আবার অনেকে স্ব ইচ্ছায় পরেন। সে যাই হোক, এই সিদ্ধান্ত সকলের একান্ত ব্যক্তিগত। তবে, জ্যোতিষ ও বিজ্ঞান দু ক্ষেত্রেই বর্ণিত রয়েছে সিঁদুর প্রসঙ্গে একাধিক ধারণা।