- Home
- Entertainment
- Bengali Cinema
- শাড়িতে আগুন লেগে এভাবে কারও মৃ্ত্যু হতে পারে, মহুয়ার চলে যাওয়া আজও টেনে আনে একগুচ্ছ রহস্য
শাড়িতে আগুন লেগে এভাবে কারও মৃ্ত্যু হতে পারে, মহুয়ার চলে যাওয়া আজও টেনে আনে একগুচ্ছ রহস্য
দমদমের নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে ছিলেন শিপ্রা রায়চৌধুরি। অর্থাভাবের কারণে নিজের পড়াশুনাটাও শেষ করে উঠতে পারেননি তিনি। তবে তাঁর জন্য অপেক্ষা করছিল এক অন্য জগৎ। লাইট, ক্যামেরা, অ্যাকশনের পৃথিবীতে পদার্পণ শিপ্রা। সঙ্গে সঙ্গে নাম বদলে হয়ে গেল মহুয়া। ঘরোয়া মেয়ের মতো সাধারণ চেহারা, তবে প্রতিভা নেহাতই সাধারণ নয়। বাবা যেহেতু নাচ জানতেন, বাবার থেকেই তালিম নিয়ে মহুয়ার নাচের প্রতি অগাদ ভালবাসা জন্মায়। সেই নাচের প্রতিভা নিয়েই যে কেবল বাংলা চলচ্চিত্র জগতে জনপ্রিয়তা লাভ করেছেন তাই নয়। অভিনয় দক্ষতায়, প্রত্যেক চরিত্রে নিজেকে ভেঙে গড়ে তৈরি করে নেওয়া, পরিচালকের মতই ছবির চিত্রনাট্যের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে যাওয়া, এইভাবেই দক্ষ অভিনেত্রী হয়ে উঠেছিলেন মহুয়া।
- FB
- TW
- Linkdin
তবে মহুয়ার প্রসঙ্গ উঠলেই তাঁর আকস্মিক মৃত্যু যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ে না। স্টোভ ফেটে আগুনে মারা গিয়েছিলেন। এ পর্যন্তই খবর এসেছিল।
মৃত্যুর কারণ হিসেবে এই স্টোভা বার্স্ট করার কথা বললেও, বিশ্বাস করতে রাজি ছিল না বহু মানুষ। মহুয়ার মৃত্যুর কারণ আজও অজানা।
সে সময় তাঁর মৃত্যুর খবরে যেন বাজ পড়েছিল টলিউডে। সিনেপ্রেমীরা মহুয়ার আশি শতাংশ শরীরের পুড়ে যাওয়ার খবর শুনে আঁতকে উঠেছিল।
এই দুর্ঘটনার সময় এক হোটেলে ছিলেন মহুয়া। সেখানেই রান্না করতে গিয়ে স্টোভ জ্বালাতে যান তিনি। সেখান থেকেই এই অঘটন ঘটে বলে জানা যায়।
কলকাতা হাসপাতালে দশ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন মহুয়া। মৃত্যুর আগে বারবার সকলকে একটাই অনুরোধ করে গিয়েছিলেন মহুয়া। তাঁর ছোট ছেলেটার যেন দেখভাল করে কেউ।
তাঁর মৃত্যুর কারণ হিসেবে অনেকেই অভিনেত্রীর জীবনযাপনকে দোষারোপ করে। তিনি দীর্ঘদিন অধিক রাতে বাড়ি ফিরতেন মদ্যপ অবস্থায়। যার জেরে স্বামীর সঙ্গে নিত্যদিন সমস্যা লেগেই থাকত।
স্বামী তিলকের কথায়, সেদিন রাতে স্টোভ জ্বালাতে গিয়ে তাঁর শাড়িতে আগুন করে। তবে অধিকাংশ মানুষের মতে এভাবে শাড়িতে আগুন লেগে কারও মৃত্যু হতে পারে না। তাই এটা দুর্ঘটনাজনিত মৃ্ত্যু নয়, খুন।
অভিনেত্রীর সঙ্গে অঞ্জন চৌধুরির সম্পর্ক নিয়ে নানা কানাঘুষো আসত সেই সময়। অন্যদিকে মহুয়া সে সময়ের অন্যতম সফল অভিনেত্রীদের মধ্যে একজন।
মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল মাত্র ২৬। এই বয়সের মধ্যেই তাঁর কাঁধে সেই সময় ছিল প্রায় ১৫-১৬ টি ছবির দায়িত্ব। এতগুলি ছবি সাইন করেছিলেন তিনি।
কিন্তু সেসব ছবি আর হল কই। দাদার কীর্তির সেই সরস্বতীর বিনোদনের সফর যেন চোখের পাতা ফেলতেই সব আকাশে মিলিয়ে গেল।
তাঁর মৃত্যু খুন ভাবার কারণ ছিল সেই স্টোভ। পুলিশ নাকি সেই স্টোভ একেবারে আস্ত খুঁজে পেয়েছিল হোটেল ঘরে। স্টোভ ফাটলে এমন আস্ত অবস্থায় থাকে কীকরে।
অন্যদিকে মহুয়াকে যখন হাসপাতালে আনা হয়, তখন তাঁর শরীর কেরসিনের গন্ধে ভরে গিয়েছিল। অথচ স্টোভে বিন্দুমাত্র কেরসিনের লেগে ছিল না।
মহুয়া জীবনের সঙ্গে সেই দশদিন লড়তে লড়তেও নিজের স্বামীর বিরুদ্ধে একটা কথাও বলেননি।
ছেলে তমালের চিন্তাই যেন গিলে খাচ্ছিল তাঁকে। এভাবেই কি শেষ হয়ে যায় সফল অভিনেত্রীদের জীবন। বলিউডের দিব্যা ভারতীও কেরিয়ারের পিকে ছিলেন যখন তাঁর মৃত্যু হয়।
মহুয়া খুব অল্প সময়ের জন্যই ছিল আমাদের সঙ্গে। তবে তাঁর সেই অবদান আজও ভোলেনি সিনেপ্রেমীরা। তাঁর কাজের মধ্যে দিয়েও প্রতিভার নয়া সংজ্ঞা পেয়েছিল বাংলা চলচ্চিত্র জগৎ।