সোনুকে 'মণিকর্নিকা' থেকে সরে যেতে বাধ্য করেন কঙ্গনা, 'ক্যুইন'র সঙ্গে কাজ না করার সিদ্ধান্ত নেন 'রিয়েল' হিরো

বলিউডের রিল হিরো সোনু সুদ এখন রিয়েল হিরো। করোনার প্রকোপে বাড়িতে থেকে কোনও চ্যারিটি নয় বরং ময়দানে নেমে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। সাহায্য করেছেন লক্ষাধিক পরিযায়ী শ্রমিককে। লকডাউনে জেরে দূর শহরে আটকে মানুষজনকে নিজেদের বাড়ি ফিরিয়েছেন সোনু। এমনই হিরোর আশায় ছিল গোটা দেশ। অন্যদিকে সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর রিল থেকে রিয়েল হিরোইন হয়ে উঠেছেন কঙ্গনা রনাওয়াত। বরাবরের মত বলিউডের নামী ব্যক্তিত্বদের বিরুদ্ধে কথা বলে একাধিক অভিযোগ এনেছেন। সুশান্তের মৃত্যুর বিচার চাইতে মুম্বই পুলিশকেও সাহায্য করবেন বলে জানিয়েছেন সম্প্রতি। 

এই রিয়েল হিরো-হিরোইনের সম্পর্ক যে মোটেই ভাল নয় তা গত বছর প্রকাশ পায়। মণিকর্নিকা দ্য ক্যুইন অফ ঝাঁসি ছবিতে অভিনয় করতে গিয়ে তাঁদের দ্বন্দ্বে ক্ষতবিক্ষত হয় ছবির চিত্রনাট্য।

মণিকর্নিকা অর্থাৎ কঙ্গনার স্বামীর গঙ্গাধর রাওয়ের ভুমিকায় অভিনয় করার কথা ছিল সোনুর। ছবির শ্যুটিংয়ের ৪৫ দিনের মাথায় মণিকর্নিকা ছেড়ে চলে যান সোনু সুদ।

সেই সময় তোলপাড় হতে শুরু করে সংবাদমাধ্যম। ঠান্ডার মাথার এই হিরো কেন সেট ছেড়ে ছবিটি মাঝপথে নাকোচ করে বেরিয়ে আসেন। সোনুর মতে তিনি দু'জন পরিচালকের সঙ্গে কাজ করতে অনিচ্ছুক ছিলেন। 

দক্ষিণী পরিচালক কৃষ জগড়লামুড়ির পরিচালনায় তৈরি হয়েছিল কঙ্গনার এই ছবি। হঠাৎ তিনিও পরিচালকের আসন ছেড়ে বেরিয়ে গেলে তাতে চেপে বসেন কঙ্গনা। 

সোনুর বিরুদ্ধে কঙ্গনা আনে একাধিক অভিযোগ। তিনি নাকি মহিলা পরিচালকের সঙ্গে কাজ করতে চাননি। সেটে নাকি তিনি দুর্ব্যবহারও করেছিলেন। 

এতে সোনু জবাব দিয়েছিলেন, "আমার হ্যাপি নিউ ইয়ার ছবিতে ফারহা খানের মত মহিলা পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছি। এভাবে একজন পুরুষের উপর দোষ দেওয়া খুব সহজ। আমি শুধু দু'জন পরিচালকের সঙ্গে কাজ করতে নাকোচ করেছিলাম।"

সোনুর এরপরও অপমান করে কঙ্গনা বলেন, "সোনু সুদের ছবিটি নিয়ে আর কোনও মন্তব্য করার কোনও অধিকার নেই। কারণ তাঁর কনট্র্যাক্ট শেষ হয়ে গিয়েছে।"

অন্যদিকে ছবির অন্যতম পরিচালক কৃষ কঙ্গনাকে মিথ্যেবাদি বলে দাবি করে বসেন। তিনি জানিয়েছিলেন, সোনু সুদের চরিত্রটিকে ইন্টারভালের আগেই মেরে ফেলার জন্য চাপ দিয়েছিলেন কঙ্গনা। 

তাতে অবশ্যই রাজি হননি কৃষ। কৃষ রাজি না হওয়ায় তখন নিজেই পরিচালকের আসনে বসে সোনুর ১০০ মিনিটের স্ক্রিনস্পেস কেটে ৬০ মিনিটে দাঁড় করিয়েছিলেন কঙ্গনা। এবং এই কারণে ছবিটি ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন সোনু। 

কৃষ এছাড়া এও অভিযোগ জানান, "কঙ্গনা ভীষণ দুর্ব্যবাহর করেন। ছবির ওঁর থেকে বেশি কারও দৃশ্য নজরে পড়লে তাঁর দৃশ্যগুলি কেটে দিতে বলতেন বারবার। এমনকি মিথ্যে বলেছিলেন আমায় যে প্রযোজকের নাকি ছবিটির এডিটিং পছন্দ হয়নি।"

ভোজপুরী ছবির মতো দেখাচ্ছে ফিল্মটি। এই মন্তব্য শুনতেই কঙ্গনার সঙ্গে কৃষের সমস্যা সৃষ্টি হতে বেশি সময় লাগেনি। তিনি সোনুর মত ছবিটি থেকে বেরিয়ে আসেন। 

কঙ্গনার সঙ্গে ভবিষ্যতে আর কখনও কাজ না করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। অন্যদিকে সোনুও সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কঙ্গনার সঙ্গে আর কখনই কাজ করবেন না। তবে তাঁকে কঙ্গনার বিষয় কোনও প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনও বিতর্কিত উত্তর না দিয়ে চুপ থাকাই শ্রেয় মনে করেছেন।