আইপিএলে তারকা হতে পারেন বাংলার এই ক্রিকেটাররা, দেখে নিন তালিকা
- FB
- TW
- Linkdin
ঈশান পোরেল-
অনুর্দ্ধ ১৯ বিশ্বকাপ ২০১৮ তে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে পাদ-প্রদীপের আলোয় এসেছিলেন। তারপর ভারতীয় 'এ' দল এবং ঘরোয়া ক্রিকেটে বাংলার হয়ে ভালো পারফরম্যান্স করার পর শেষ নিলামে তাকে দলে নিয়েছে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব। সেখানে তিনি সিনিয়র হিসাবে পাবেন বাংলারই আর এক পেসার মহম্মদ সামি-কে। চন্দননগরের এই পেসারের স্বপ্ন প্রথম মরশুমেই আইপিএলে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করা। এমনিতে ঘরোয়া ক্রিকেটে ১৪ টি টি-টোয়েন্টি খেলে ৬ এর কাছাকাছি ইকোনমি রেটে ১৬ টি উইকেট পেয়েছেন তিনি। এখন দেখার এই মুহুর্তে বাংলার সবথেকে প্রতিভাবান পেসার কিভাবে নিজেকে মেলে ধরেন বড়মঞ্চে।
শ্রীবৎস গোস্বামী-
বাংলার হয়ে গত মরশুমে ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো ফর্মে ছিলেন। ২০০৮ অনুর্দ্ধ ১৯ বিশ্বকাপ জয়ী ভারতীয় দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য আইপিএলের শুরুর বছরেই ডাক পেয়েছিলেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর শিবিরে। সেখানে সামান্য সুযোগের মধ্যেই ২০০৮ সালে তিনি টুর্নামেন্টের ইমার্জিং তরুণ ফুটবলারের পুরস্কার জিতে নেন। এরপর কলকাতা, রাজস্থান ফ্রাঞ্চাইজির মধ্যে এলেও বেশি খেলার সুযোগ পাননি। ২০১৮ তে সানরাইজার্স হায়দরাবাদে সুযোগ পেয়ে কিছু ভালো ইনিংস খেলেন। এই বছরও তিনি রয়েছেন হায়দরাবাদে। মোট ২৯ টি ম্যাচের ১৯ টি ইনিংসে ব্যাট করে তিনি একটি অর্ধশতরানসহ ২৯৩ রান করেছেন। এই বছর সুযোগ পেলে ভালো পারফরম্যান্স করতে তৈরি তিনি।
সায়ন ঘোষ-
নেট বোলার হিসাবে বেস-প্রাইসের অর্ধেক দামে আইপিএল এর অংশ হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন চাকদহের মালিঙ্গা, সায়ন ঘোষ। চলতি মরশুমে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের নেট বোলার হিসাবে দুবাইয়ে উড়ে গিয়েছেন বাংলার হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলা এই পেসার যিনি টি-টোয়েন্টি স্পেশালিস্ট হিসাবে পরিচিত। পাঞ্জাবের অনুশীলনেও রীতিমতো ঘাম ঝড়াতে দেখা গিয়েছে তাকে। বাংলার হয়ে ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে মোট ৩৩ টি ম্যাচ খেলে ৪৬ টি উইকেট নিয়েছেন তিনি। তার মধ্যে এক বার এক ম্যাচে পাঁচ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব আছে তার। বাংলার এই প্রতিশ্রুতিমান তরুণের বোলিংয়ের প্রধান ইউএসপি হল তার আনঅর্থোডস্ক বোলিং অ্যাকশন, যা সমস্যায় ফেলে প্রথমবার তার সামনে দাঁড়ানো কোনও ব্যাটসম্যানকে।
মহম্মদ সামি-
বাংলার হয়ে দীর্ঘদিন ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলেছেন উত্তরপ্রদেশ জাত এই পেসার। অনেকদিন ধরেই ভারতীয় ক্রিকেটে নামজাদা মুখ তিনি কিন্তু আইপিএলে কোনোভাবেই খুব একটা সুবিধা করে উঠতে পারছিলেন না তিনি। কলকাতা এবং দিল্লি দুই জায়গাতে ব্যর্থ হওয়ার পর কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের হয়ে খেলার সুযোগ পান তিনি। গত আইপিএলে নিজের ব্যর্থতার ধারা ঘুচিয়ে ১৪ ম্যাচে ১৯ উইকেট তুলেছেন তিনি। যদিও তার ইকোনমি রেট প্রায় ৯ এর কাছাকাছি। রান আটকানোর ব্যাপারে আইপিএলে এখনও অনেকটা উন্নতি করার জায়গা রয়েছে বাংলার হয়ে দীর্ঘদিন ঘরোয়া ক্রিকেট খেলা স্পিড স্টারের। আর এই মরশুমে পাঞ্জাবের হয়ে ঠিক সেই কাজটাই করতে চান তিনি।
আমির গনি-
সানরাইজার্স হায়দরাবাদের নেট বোলার হিসাবে দুবাইয়ে উড়ে গিয়েছেন বাংলার তরুণ অফ-স্পিনার আমির গনি। ঘরোয়া ক্রিকেটে বাংলার হয়ে শেষ মরশুমে মোটের ওপর ভালোই পারফরম্যান্স করেছিলেন তরুণ এই অফ-স্পিনার। ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতাগুলিতে ১৮ টি ম্যাচ খেলে মোট ৭ এরও কম ইকোনমি রেটে ২৩ টি উইকেট নিয়েছেন তিনি।
শাহবাজ আহমেদ-
দুই মরশুম হলো ঘরোয়া ক্রিকেটে বাংলার হয়ে খেলছেন হরিয়ানা জাত অলরাউন্ডার। গত রঞ্জি মরশুমে ব্যাট এবং বল দুই হাতেই দুর্ধর্ষ ফর্মে ছিলেন এই অলরাউন্ডার। কয়েকটি ম্যাচ বাংলাকে প্রায় একার হাতে জিতিয়েছেন তিনি। ঘরোয়া ক্রিকেটে তার দুর্ধর্ষ পারফরম্যান্স দেখে তাকে দলে নিয়েছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর। ইতিমধ্যেই রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্সের নেটে তার পারফরম্যান্স, বিশেষ করে তার স্পিন বোলিং নজর কেড়েছে কোহলির। আবু ধাবির বড়ো মাঠে দু-একটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেতেও পারেন তিনি।
আকাশ দীপ-
পাঁচ মাস আগে বাংলার হয়ে ৩৫ টি উইকেট নিয়ে অসাধারণ রঞ্জি মরশুম সম্পূর্ণ করেছিলেন জন্মসূত্রে বিহারের পেসার আকাশ দীপ। তারপর থেকে বিহারে নিজের গ্রামেই অনুশীলন করছিলেন। আইপিএলে দল পাননি। কিন্তু আচমকাই তার সঙ্গে যোগাযোগ করে রাজস্থান রয়েলস কর্তৃপক্ষ। বেস প্রাইজের অর্ধেক দরে নেট বোলার হিসাবে তাদের শিবিরে যোগদানের কথা বলা হয় তাকে। কেউ চোট পেয়ে বেরিয়ে গেল সেই জায়গায় তাকে নেওয়ার কথাও জানায় কর্তৃপক্ষ। জোফ্রা আর্চারের সাথে নেট শেয়ার করার সুযোগ পেয়ে আর দ্বিতীয়বার ভাবেননি আকাশ দীপ। এখন দেখার শেষ পর্যন্ত মাঠে নামার সুযোগ তিনি পান কিনা।
ঋদ্ধিমান সাহা-
আইপিএলে সবচেয়ে সফল বাঙালি ক্রিকেটার ধরে রয়েছেন হায়দরাবাদে। হায়দরাবাদের হয়ে অবশ্য ব্যাটের চেয়ে উইকেটের পেছনে গ্লাভস হাতেই বেশি সফল তিনি। ৩৫ বছর বয়সী বঙ্গ উইকেটরক্ষকের ব্যাটিং নিয়েও আলাদা করে কিছু বলার নেই। নারিন-মর্কেলদের বিরুদ্ধে তার শতরান, মালিঙ্গা-বুমরাদের বিরুদ্ধে তার ৯৩, স্টেইনের বিরুদ্ধে ঝোড়ো ৬২ রানের ইনিংসগুলোই প্রমান করে ব্যাটসম্যান হিসাবে তার গ্রহণযোগ্যতা। আইপিএলে ১২০ টি ম্যাচ খেলে ১৩০ এর ওপরের স্ট্রাইক রেটে ১৭৬৫ রান করা এই ক্রিকেটার সানরাইজার্সের হয়ে ভালো ব্যাটিং পারফরম্যান্স করে নিজেকে আরও একবার প্রমাণ করতে মরিয়া এই মরশুমে।