- Home
- Sports
- Cricket
- T20 WC 2021 - বর্ণবিদ্বেষ নিয়ে চরম বিতর্কে কুইন্টন ডি'কক, আর হয়তো খেলা হবে না দেশের জার্সিতে
T20 WC 2021 - বর্ণবিদ্বেষ নিয়ে চরম বিতর্কে কুইন্টন ডি'কক, আর হয়তো খেলা হবে না দেশের জার্সিতে
টি২০ বিশ্বকাপ ২০২১ (T20 World Cup 2021) চলাকালীন বড় বিতর্কে জড়ালেন দক্ষিণ আফ্রিকান (South Africa) উইকেটরক্ষক-ব্যাটার কুইন্টন ডিকক (Quinton de Kock)। মঙ্গলবারই, ওয়েস্ট ইন্ডিজের (West Indies) বিরুদ্ধে টি২০ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের ম্যাচ খেলছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ম্যাচে ঠিক আগে নিজেকে প্রথম একদশ থেকে সরিয়ে নেন ডিকক। ক্রিকেট বিশ্বে অনেকেই মনে করছেন, প্রোটিয়া জার্সিতে তিনি তাঁর শেষ ম্যাচ অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধেই খেলে ফেলেছেন। আর হয়কো দক্ষিণ আফ্রিকার জার্সিতে তাঁকে দেখা যাবে না।
| Published : Oct 26 2021, 08:50 PM IST
- FB
- TW
- Linkdin
এদিন, খেলা শুরুর আগে টসের সময় প্রোটিয়া অধিনায়ক তেম্বা বাভুমা জানান, ব্যক্তিগত কারণে খেলছেন না কুইন্টন ডি'কক। তাঁর বদলে এদিন প্রথম একাদশে নেওয়া হয় রিজা হেনড্রিকস-কে। আর উইকেটরক্ষকের ভূমিকা পালন করেন হাইনরিখ ক্লাসেনকে।
পরে জানা যায়, দক্ষিণ আফ্রিকা বোর্ডের এক নির্দেশ নিয়ে আপত্তির জেরেই খেলছেন না ডি'কক। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে দক্ষিণ আফ্রিকা বোর্ডের পক্ষ থেকে দলের প্রতিটি ক্রিকেটারকে হাঁটু গেড়ে বসে বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে বার্তা দিতে বলা হয়েছিল। ম্যাচের আগে প্রত্যেক ক্রিকেটার, যাঁরা প্রথম দলে খেলছেন না তাঁদেরকেও সেই ভঙ্গিতে দেখা গেলেও সেখানে ছিলেন না ডি'কক।
বস্তুত, চলতি বিশ্বকাপে ভারত-সহ বেশ কয়েকটি দলের ক্রিকেটারদেরই জাতি বিদ্বেষ-বর্ণ বিদ্বেষের বিরোধী 'ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার' আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানাতে হাঁটু মুড়ে বসতে দেখা গিয়েছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড-সহ বেশ কয়েকটি দলকে এই উদ্যোগ নিতে দেখা গিয়েছে। পাকিস্তান দলও এই আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছে, তবে হাঁটু মুড়ে নয়, বুকে হাত রেখে।
এই বিষয়ে যখন সব দলেরই সদস্যদের মধ্যে ঐক্য দেখা যাচ্ছে, তখন দক্ষিণ আফ্রিকা দলের সদস্যরা একেকজন একেক ভঙ্গিমায় থাকছিলেন। কেউ হাঁটু মুড়ে, কেউ বা দাঁড়িয়ে। বিশেষ করে কুইন্টন ডিকককে কখনই হাঁটু মুড়ে বসতে দেখা যায়নি।
এমনিতেই দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবিদ্বেষের দীর্ঘ কালো ইতিহাস রয়েছে। যার জন্য অনেকগুলো বছর তাদের ক্রিকেট-সহ বিভিন্ন ক্রীড়াক্ষেত্রে নিষিদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। এর উপরে দলের বিভিন্ন সদস্য বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি করলে বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে বার্তা দেওয়ার এই উদ্যোগের প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকা দলে অসাম্য বা বা সমর্থনের অভাব রয়েছে বলে ধারণা তৈরি হবে বলে মনে করেছে ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা।
এরপরই দক্ষিণ আফ্রিকা বোর্ডের পক্ষ থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচের আগে এই বিষয়ে এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে। সেখানে বলা হয়, দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাসের প্রেক্ষিতে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে দলের সব খেলোয়াড়দের ঐক্যবদ্ধভাবে এবং ধারাবাহিকভাবে অবস্থান নেওয়া জরুরি। বিশ্বকাপে অন্যান্য বেশ কয়েকটি দল এই সমস্যার বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে অবস্থান গ্রহণ করেছে। দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট বোর্ডের সকল সদস্যও মনে করে তাদের সব খেলোয়াড়দেরও একই কাজ করার সময় এসেছে।
তারপরই এদিন ওয়েস্ট ইন্ডিজের সকল ক্রিকেটারের সঙ্গে ঠিক খেলা শুরু হওয়ার আগে দক্ষিণ আফ্রিকার সকল ক্রিকেটারকেও হাঁটু গেড়ে মাঠে বসে পড়তে দেখা গিয়েছে। কিন্তু, কুইন্টন ডি কক বোর্ডের এই নির্দেশ মানতে রাজি হননি বলে জানা গিয়েছে। সেইসঙ্গে তিনি বর্ণবাদের বিরুদ্ধে বার্তা দিতে হাঁটু মুড়ে বসবেন না বলেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে খেলার ঠিক আগে নিজেকে প্রথম একাদশ থেকে সরিয়ে নেন।
তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও বেশ কয়েকবার ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলনের সমর্থনে হাঁটু মুড়ে বসার বিষয়ে অনীহা প্রকাশ করেছেন ডি'কক। চলতি বছরের জুনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তাদের ম্যাচের সময়, বা আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচের সময়ও, মাঠে সকল ক্রিকেটার হাঁটু মুড়ে বসলেও, বিসদৃশভাবে ডি'কক বসেননি।
কেন এভাবে বসেন না প্রোটিয়া উইকেটরক্ষক-ব্যাটার? তিনি কি এই আন্দোলমকে সমর্থন করেন না? একটি সাংবাদিক সম্মেলনে কুইন্টন ডি'কক বলেছিলেন তিনি এর কারণ বিস্তারিতভাবে জানাতে চান না। এটা তাঁর নিজস্ব, ব্যক্তিগত মতামত। তিনি আরও বলেন কাউকে কিছু করতে বাধ্য করা উচিত নয়।
এদিকে ডিককের এই আচরণ নিয়ে তীব্র হইচই পড়ে গিয়েছে বিশ্ব ক্রিকেটে। এখনও পর্যন্ত কোনও ক্রিকেটার বর্ণবৈষম্য বিরোধি এই আন্দোলনের বিরোধিতা করেননি। এই অবস্থায় ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই বিশ্বকাপে তো বটেই, আর কোনও দিনই হয়তো দেশের জার্সিতে খেলার সুযোগ পাবেন না ডি'কক। কারণ বর্ণবৈষম্য দক্ষিণ আফ্রিকায় এমনই এক স্পর্শকাতর বিষয়, যে এই বিষয়ে তারা অত্যন্ত কড়া অবস্থান নেয়। মাইকেল ভন অবশ্য দক্ষিণ আফ্রিকা বোর্ডের নির্দেশ চাপিয়ে দেওয়ার বিরোধিতা করেছেন।