- Home
- Sports
- Cricket
- T20 World Cup 2021 - সমস্যা আর অনিশ্চয়তায় ঘেরা, কেমন হল এবারের বিশ্বকাপের পাকিস্তান দল, দেখুন
T20 World Cup 2021 - সমস্যা আর অনিশ্চয়তায় ঘেরা, কেমন হল এবারের বিশ্বকাপের পাকিস্তান দল, দেখুন
- FB
- TW
- Linkdin
দলের প্রধান কোচ এবং বোলিং কোচ পদত্যাগ করেছেন। টি২০ বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নিউজিল্যান্ড এবং ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১২ টি টি২০ খেলার কথা ছিল, হয়েছে মাত্র ১টি। বিশ্বকাপের আগে দলের মধ্যে এই ধরণের বিশৃঙ্খলা যে কোনও দলকে সমস্যায় ফেলতে পারত। কিন্তু, মনে রাখতে হবে, দলটির নাম পাকিস্তান। শ্রীলঙ্কা দলের উপর সন্ত্রাসবাদী হামলার তিন মাস পরই তারা টি২০ বিশ্বকাপ জিতেছিল। বিশৃঙ্খলার মধ্য দিয়েই এগিয়ে চলে পাকিস্তান। প্রথমে একেবারে তরুণ দল বেছে নিলেও, পরে তারা সরফরাজ আহমেদ, শোয়েব মালিক এবং মহম্মদ হাফিজের মতো অভিজ্ঞদেরই শরণাপন্ন হয়েছে। তবে তারা রয়েছে ভারত, নিউজিল্যান্ড এবং আফগানিস্তানের সঙ্গে কঠিন গ্রুপে।
সিরিজের পর সিরিজ বাতিল হওয়ায়, পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ফর্ম বিচার করা কঠিন। তবে, চলতি বছরে তাদের খেলার মান বরাবরের মতোই ওঠানামা করেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে একটি মাত্র সমাপ্ত হওয়া ম্যাচে জিতেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার তুলনামূলক দুর্বল দলের বিরুদ্ধে ঘরে-বাইরে জিতেছে। আবার জিম্বাবোয়ের বিপক্ষে ২টি ম্যাচে জিতলেও শেষ ম্যাচে মাত্র ১১৯ রান তাড়া করতে গিয়ে ৯৯ রানে গুটিয়ে গিয়ে হেরেছে। এরপর ইংল্যান্ডে গিয়েও ২-১'এ সিরিজ হেরেছে।
পাকিস্তানের টপ অর্ডার এই মুহূর্তে খুবই শক্তিশালী। মহম্মদ রিজওয়ান দুরন্ত ফর্মে আছেন। তিনি বা বাবর আজম প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই পাকিস্তানের ইনিংসের ভিত গড়ে দেন। তবে তাদের পরের ব্যাটাররা সেই দারুণ শুরুকে এগিয়ে নিয়ে যেতে ব্যর্থ হচ্ছেন। মাঝের ওভারে এবং ডেথ ওভারে বেশ কয়েকজন পাওয়ার হিটারকে রেখেছে পাকিস্তান, তবে তারা এখনও ভরসা দিতে পারেননি। শেষ মুহূর্তে স্কোয়াডে শোয়েব মালিক এবং সরফরাজকে রাখা হয়েছে সম্ভবত এই জায়গার ফাটল মেরামতে। তবে তাদের সঙ্গেই আবার ডাক পেয়েছেন অতিআক্রমণাত্মক হায়দার আলিও। কাজেই পাকিস্তান সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে বলে মনে করা হচ্ছে।
শাহিন আফ্রিদি, হাসান আলি এবং হ্যারিস রউফ - পাকিস্তানের পেস বোলিং আক্রমণ রীতিমতো ভয় ধরানো। তবে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির মন্থর পিচে তাদের জোরে বোলিং কতটা কার্যকর হবে সেই নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। আইপিএল দেখিয়েছে এই পিচে জোরে বোলারদের সফল হতে গেলে নির্ভর করতে হবে তাদের বৈচিত্র্যের উপর। সঙ্গে প্রয়োজন স্পিনারদের সহায়তা। স্পিন বিভাগে পাকিস্তানের হাতে বিকল্পের অভাব নেই। বেশিরভাগ ম্যাচেই বোলিং ওপেন করতে পরেন ইমাদ ওয়াসিম। তার সঙ্গে আছেন শাদাব খান, মহম্মদ নওয়াজ, মহম্মদ হাফিজ এমনকী শোয়েব মালিকও। তবে সংখ্যায় তার আনেক বেশি হলেও, তদের মধ্যে সত্যিকারের বিশ্বমানের কোনও স্পিনার নেই। কাজেই এই বোলারদের মধ্য থেকেই কেউ নিজের খেলা অন্য স্তরে নিয়ে যাবেন, এই আশা করা ছাড়া উপায় নেই পাকিস্তানের।
আজম খান এবং সোহাইব মাকসুদের মতো পাওয়ার হিটারদের ব্যাটিং লাইন-আপ থেকে ছেঁটে ফেলেছে পাকিস্তান। তাঁদের অনুপস্থিতিতে নিজের জাত চেনাতে পারেন হায়দার আলি। তুলনামূলকভাবে ছোটখাটো চেহারার হলেও, দুর্দান্ত টাইমিং-এর জোরে সহজেই বলতে মাঠের বাইরে পাছঠাতে পারেন তিনি। গত বছর পিএসএলে দুর্দান্ত ফর্ম তাঁকে জাতীয় দলে সুযোগ করে দিয়েছিল। তবে আন্তর্জাতিক মঞ্চকে কাজে লাগাতে পরেননি, দল থেকে বাদ হয়ে যান। তবে সদ্য সমাপ্ত পাকিস্তানের জাতীয় টি২০ কাপে প্রায় ১৫০-র কাছাকাছি স্ট্রাইক রেটে পঞ্চম সর্বোচ্চ রান করে তিনি আবার দলে ফিরে এসেছেন। নজর রাখতে হবে তাঁর দিকে।
সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে শেষ ১১ টি টি২০আই ম্যাচেই জয় পেয়েছে পাকিস্তান। তবে সেই একই সময়ে পাকিস্তান দুবার তাদের প্রধান কোচ পরিবর্তন করেছে এবং অনেকেই এখন তাদের সেরা ফর্মে নেই। তাছাড়া আইপিএল-এ দেখা গিয়েছে মরুদেশের পিচ বেশ ধীর গতির। এখানে তাদের জোরে বোলার সম্বৃদ্ধ বোলিং আক্রমণ কতট সফল হয়, তার উফর অনেকটই নির্ভর করছে পাকিস্তানের ভবিষ্যত। তাছাড়া তাদের দলে ভয়ঙ্কর পাওয়ার হিটারদেরও অভাব রয়েছে। কাজেই, বাবর এবং রিজওয়ানের মতো ব্যাটারদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। সেইসঙ্গে দলের সঙ্গে খুব বেশিদিন যুক্ত হননি প্রধান কোচ ম্যাথু হেডেন। সব মিলিয়ে প্রচুর অনিশ্চয়তা, প্রচুর ধাঁধায় ঘেরা পাকিস্তান দল। তবে এসব ছাড়া আবার পাকিস্তান দল হয় নাকি?
মহম্মদ রিজওয়ান (উইকেটরক্ষক), বাবর আজম (অধিনায়ক), ফখর জামান, হায়দার আলি, মহম্মদ হাফিজ, মহম্মদ নওয়াজ বা আসিফ আলি, শাদাব খান, হাসান আলি, ইমাদ ওয়াসিম, মহম্মদ ওয়াসিম বা হ্যারিস রউফ, শাহিন আফ্রিদি।