দক্ষিণ কলকাতার সেরা দশ দুর্গা পুজো , যেগুলো না দেখলে আপনি মিস করবেন
| Published : Sep 25 2019, 02:41 PM IST
দক্ষিণ কলকাতার সেরা দশ দুর্গা পুজো , যেগুলো না দেখলে আপনি মিস করবেন
Share this Photo Gallery
- FB
- TW
- Linkdin
110
উদয়ন সংঘ - আজ সবাই কম বেশি ইন্টারনেট নির্ভর। সে গানের লিরিকই হোক কিংবা ফোন নাম্বার ,কোনও কিছুই তাই আজকাল কেউ মনে রাখতে পারেনা। সেই ইন্টারনেট এর দিকেই হাত বাড়ায়।কিন্তু এখনও কিছু স্বর্ণ যুগের গান আছে, যার গানের কথা এখনও বাঙালির মুখে মুখে এখনও ফেরে। তারই মধ্যে 'খিড়কি থেকে সিংহ দুয়ার' সর্ব কালের সেরা গান।এটি হেমন্ত মুখপাধ্যায়ের 'স্ত্রী' সিনেমার সেই বিখ্যাত গান ।আর এবার সেই গান নিয়েই এবার আসছে উদয়ন সংঘ সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি। 'খিড়কি থেকে সিংহ দুয়ার' এটাই হল এবারে তাদের পূজার থিম।
210
বেহালা বুড়ো শিবতলা জনকল্যাণ সংঘ -১৩তম বর্ষে এবার বেহালা বুড়ো শিবতলা জনকল্যাণ সংঘ। এবছর তাদের প্যান্ডেলের থিম 'যন্ত্র না যন্ত্রনা'। ধীরে ধীরে সবুজ কে ধ্বংস করে গড়ে উঠছে নতুন ইমারতের ভিড়ে ঠাসা ধুসর শহর।আর জনবসসতির সঙ্গে সঙ্গেই তৈরি হচ্ছে প্রচুর পরিমানে গ্রিন হাউজ গ্যাস।এই সব কারনের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ওজোন স্তর।যার ফলে অতি বেগুনী রশ্মি প্রবেশ করছে আর এদিকে মাইক্রো ওয়েভের জন্য এখন কোথাও আর তেমন পাখি দেখতে পাওয়াও যায়না। তাই মানব জাতির চেতনতাকে ফিরিয়ে আনার জন্যই, সেই সচেতনাকেই থিম করছে বেহালা বুড়ো শিবতলা জনকল্যাণ সংঘ।
310
বালিগঞ্জ কালচারাল অ্য়াসোসিয়েশন -এই বছর ৬৯তম বর্ষে পা দিল বালিগঞ্জ কালচারাল অ্য়াসোসিয়েশনের পুজো। প্রতি বছরই তারা চেনা পরিচিত যুগলবন্দী নতুন কল্পনায় সেজে ওঠে। এবারও তারা তাদের ঐতিজ্য মেনে চলবে। তবে যুগলবন্দী মানে কি, সেটা একটু জেনে নেওয়া যাক। যেমন ধরুন রথযাত্রা বললেই মনে আসে পাপড়, জিলিপির কথা। আবার রথের মেলার কথা শুনলেই পাপড়, জিলিপির কথা। ঠিক তেমনি ভাবে আবার আবার স্বাধীনতা দিবস বললেই মনে পড়ে পতাকা ও প্যারেডের কথা।তাই সমস্ত পরিচিত সব যুগলবন্দিতেই ধরা দেবে বালিগঞ্জ কালচারাল অ্য়াসোসিয়েশন-এ। এই বছর তাদের প্রতিমা-র দায়িত্বে রয়েছেন ভাস্কর অরুণ পাল, ও মন্ডপ সৃজনে রয়েছেন বিমান সাহা। তাদের থিম সঙ্গীতটিও জনপ্রিয়তা পেয়েছে। থিম সঙ্গীতের দায়িত্বে রয়েছেন ঋষি পান্ডা।
410
পাটুলী সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি-মেয়েরা হলেন মায়ের জাত। মা মানেই আমাদের দুগ্গা মা । এই জায়গা থেকে দাঁড়িয়েই এবার নিজেদের পুজোর থিম নির্বাচন করেছে পাটুলী সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি।এই বছর তারা ৪৪ তম বর্ষে পা দিল। তাদের এবারের পুজোর থিমের ট্যাগ লাইন "দুগ্গা থেকে দুর্গা"। দুগ্গা বলতে , আমাদের চারপাশে ঘিরে শিশু থেকে কিশোরী, যুবতী মেয়েদের কথা বলা হয়েছে। তারা প্রত্যেকেই এক এক জন দুগ্গা, কিন্তু প্রতিকূল পরিস্থিতিতে তারাই যে দুগ্গা থেকে দুর্গা হয়ে উঠবেন সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। মণ্ডপ সজ্জার দায়িত্বে আছেন অভিজিৎ বাবু এবং অরিন্দম বাবু। জানা গেছে গোলাকৃতি মণ্ডপটিতে সামনেই দেখা যাবে একটি বাচ্চা মেয়ে দুগ্গা সবাইকে অভিবাদন জানাচ্ছেন। তার সঙ্গেই দেখা যাবে অনেক দুগ্গার দুর্গা হয়ে উঠার কাহিনী। শিল্পী সনাতন পাল জানিয়েছেন যে তাদের এবারের বাজেট ১৫ লক্ষ টাকা। পুজোর মণ্ডপ ও প্রতিমা ছাড়াও পুজোর দিঙ্গুলিতে এলাকার বাসিন্দাদের ভোজন করাতেও ব্যবহৃত হবে।
510
হিন্দুস্তান পার্ক সর্বজনীন-হিন্দুস্তান পার্ক সর্বজনীনের এবারের বিষয় 'রস' । এই রস রসগোল্লার নয়, এ আমাদের মানুষের মধ্যেকার নব রস। সাহিত্য থেকে সংগীত, এমনকি ভারতীয় থেকে গ্রিক পুরাণেও এই আদি এবং একান্ত ভাবেই মৌলিক রসের উল্লেখ সর্বত্র দেখতে পাওয়া যায়। আগের বারের মতই এবারেও এই ভাবনা চিন্তার পেছনে যিনি আছেন, সেই শিল্পী অনির্বাণ দাস এক নতুন রূপে 'নব রস' তাঁর শিল্পকলার মাধ্যমে তুলে ধরছেন। প্যান্ডেলের ভেরতে নব রসের চিত্র যেমন থাকবে, সে ভাবেই শোলা এবং থার্মকলের তৈরি মূর্তিও জনসাধারণকে আকৃষ্ট করবে। সঙ্গে করে নবরসের সমন্বয়ে যে জটিল রসের সৃষ্টি হয়, তাও উপস্থাপন করা হবে চিত্রকলা এবং মূর্তির মধ্যে দিয়ে।
610
চেতলা অগ্রণী-এই বছর চেতলা অগ্রণীর শারদীয়া থিম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা 'কলিকাতা চলিয়াছে নড়িতে নড়িতে'। এই চলার পথ শিল্পী অনির্বাণ দাসের ভাবনায়, শিল্পকলায়, সজ্জায় পেয়েছে এক অনন্য মাত্রা। কলকাতার ঐতিহ্য, ইতিহাস, তার পথ চলা সবই এক সাথে করে শিল্পের মাধ্যমে তিনি তুলে ধরছেন এবারের পূজায়। হাওড়া ব্রীজ থেকে শুরু করে ভিক্টোরিয়ার মত স্থাপত্য, রাজভবন থেকে বাঙালীর গড়ের মাঠ। সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল ; এক কথায় কলকাতা যে যে কারণে তিলোত্তমা, প্রায় তার সবটাই ধরা পরতে চলেছে চেতলা অগ্রণীর এবারের শারদীয়াতে।
710
সিংহী পার্ক সর্বজনীন -এই বছর ৭৮ বর্ষে পদার্পণ করতে চলেছে সিংহী পার্ক সর্বজনীন। প্রতিবছরের এইবছরেও অসাধারন থিম ও আলোকসজ্জায় সেজে উঠবে তাদের মণ্ডপ। কলকাতায় থিম পুজোর তালিকায় তারাও কোনও অংশে কম যান না। প্রত্যেক বছরেই তাদের প্যান্ডেল জুড়ে থাকে দর্শনার্থীদের ভিড় ।এবার তাদের থিমের মূল আকর্ষণ হল 'সুন্দর পটে তব বরাভয় ও আশ্বাস আনবে শান্তি-সুখ, আমাদের বিশ্বাস'।পৃথিবীতে দেবীদুর্গার আগমন যে কতটা সুখের এবং শান্তির তারই আভাষ পাওয়া যাবে তাদের এই থিমের মাধ্যমে।
810
ঠাকুরপুকুর ক্লাব-প্রতি বছরের মত এবারও বিশেষ চমক নিয়ে আসছে ঠাকুরপুকুর ক্লাব। এবারের থিম এবার 'উমার কথকতা'। এ বছর ৭০তম বর্ষে পা দিল তাদের পুজো । প্রকৃতি আর নারী ই হল সৃষ্টির উৎস । তাই অবশ্যই এদের প্রতি আমাদের যত্নবান হওয়া উচিত। তাই ধ্বংস নয় সৃষ্টি চাই, এই বার্তা দিতেই ঠাকুরপুকুর ক্লাবের এবারের থিম 'উমার কথকতা'। প্রকৃতি আর নারী মিলেমিশে যাবে এবার তাদের মন্ডপে। সত্তর বছরের পুজোয় প্রকৃতি আর উমাকে একই সঙ্গে আহ্বান করা হচ্ছে পল্লীমঙ্গলে।শিল্পী অরিন্দম নাথের হাতেই রূপ পাচ্ছে এখানে সাবেকি দেবী । বড় তুলসীমঞ্চের মধ্যে অধিষ্ঠাত্রী দেবী। নিষ্ঠুরতার প্রতীক হিসেবে মন্ডপের সামনে থাকছে বিশাল আকারের একটা হাড়িকাঠ।কোষাধ্যক্ষ সঞ্জয় দাস জানান যে , প্যান্ডেলে নারী নির্যাতনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হচ্ছে। তাঁর চিন্তাভাবনায় কালিঘাটের পটুয়াপড়ায় মূর্তি তৈরি হয়েছে। মেদিনীপুর থেকে আনা হয়েছে ছয়টি নারী মূর্তি। পুজো কমিটির সভাপতি অসীম তালুকদার জানান, এবার তাঁদের বাজেট ১৫ লক্ষ টাকা।উমার এই রূপ দেখতে হলে আসতে হবে ঠাকুরপুকুর ক্লাব-এর পুজোতে।
910
ম্যাডাক্স স্কোয়ার-পুজো আড্ডা মানেই কলকাতার ম্যাডক্স স্কোয়ার। নতুন প্রজন্ম আসে এখানে জমিয়ে প্রেম করতে,আড্ডা মারতে। আর সেই ম্যাডক্স স্কয়ারেও এখন পুজোর প্রস্তুতির শেষ পর্যায়। এখানে পুজো থিম কিছু না থাকলেও এখানের দুর্গা-মা লাবণ্যময়ী। প্যান্ডেলের জাকজমক সহজ হলেও এখানকার প্যান্ডেল আর ঝাড়বাতিই দর্শকদের প্রধান আকর্ষণ । বলা যায় পুজোর কটা দিন ঢাকের বাদ্যি আর প্রদীপের আলোয় এক মায়াবী আবহে পরিণত হয়।
1010
ত্রিধারা সম্মিলনী-প্রতিবারের মতই এবারও বর্তমান সামাজিক প্রেক্ষাপটের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়কে তুলে ধরছেন আয়োজকেরা। আয়োজকদের অন্যতম সদস্য শুভজিৎ চক্রবর্তীকে এবারের বিষয় নিয়ে জিজ্ঞেস করা হলে, উনি বলেন বিগত বেশ কিছু সময় যাবৎ সারা দেশ জুড়ে যে সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান এবং মানুষে মানুষে যে হানাহানি, এমন গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক অস্থিরতাকে তুলে ধরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য এক উপস্থাপনা জনসাধারন দেখতে চলেছে।রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রাপ্ত শিল্পী শ্রী গৌরাঙ্গ কৈলার শিল্পকলায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা যে জনসাধারণের মনে দাগ কাটবে সে নিয়ে আয়োজকেরা বেশ আশাবাদী।