- Home
- Entertainment
- Bengali Cinema
- বিদায় কলকাতা! শ্যুট শেষে প্যারামাউন্টের সরবৎ, বেলুড়ের গঙ্গা-ঘাটে প্রার্থনায় ‘চাকদা এক্সপ্রেস গার্ল’
বিদায় কলকাতা! শ্যুট শেষে প্যারামাউন্টের সরবৎ, বেলুড়ের গঙ্গা-ঘাটে প্রার্থনায় ‘চাকদা এক্সপ্রেস গার্ল’
- FB
- TW
- Linkdin
কলকাতা কী ভাবে পেল অনুষ্কাকে? প্রথম দিনের শ্যুটিং সন্ধের কলকাতায়। বিখ্যাত ইডেন গার্ডেন স্টেডিয়ামে। সেখানে পর্দার ‘ঝুলন গোস্বামী’র গায়ে ভারতের নীল জার্সি। ওই দিন ‘নকল’ ভারত-পাক ম্যাচের আয়োজন স্টেডিয়ামে। অনুষ্কাকে দেখতে গ্যালারি ভর্তি দর্শক। মাঠে দৌড়োচ্ছেন নায়িকা। করতালিতে ফেটে পড়েছে গ্যালারি। একই ভাবে শহরের যখন সবে ঘুম ভেঙেছে অভিনেত্রী আবারও পৌঁছে গিয়েছেন মাঠে। সে দিন তাঁর পরনে অনুশীলনের সাদা পোশাক। চুল ছোট করে ঘাড়ের উপরে তোলা। শরীরে বাড়তি মেদ বলতে কিচ্ছু নেই। আচরণে, কথনে, চলনে নিখুঁত ভাবে ঝুলনকে অনুসরণ করার চেষ্টা করেছেন অনুষ্কা।
শুধুই কলকাতার ইডেনে গার্ডেনে শ্যুট করেই থামেননি তিনি। টিমের সঙ্গে তিনি পৌঁছে গিয়েছেন হাওড়া আন্দুলেও। সেখানে আন্দুল রাজবাড়ির মাঠে তাঁর স্কুলবেলা ক্যামেরাবন্দি হয়েছে। সাদা শার্ট, মেরুন স্কার্ট পরা অনুষ্কা তখন স্কুল-কিশোরী। স্কুলের ফাঁকে মাঠে তাঁর বয়সী ছেলেদের জুটিয়ে চুটিয়ে ক্রিকেট খেলছেন। খেলার নেশায় শার্টের একটি দিক উঠে ঝুলছে স্কার্টের বাইরে। পর্দার ‘ঝুলন’-এর সে দিকে হুঁশই নেই! তিনি কাঁধে ব্যাট নিয়ে রাজার ভঙ্গিমায়।
এরই ফাঁকে তিনি চেখে দেখেছেন কলকাতার খাবার। যে কোনও শহর তার খাবারের জন্য প্রসিদ্ধ। কলকাতার তো কথাই নেই। সরবৎ থেকে ঝালমুড়ি হয়ে কচুরি... সবেতেই সেরা। আর তাই অনুষ্কার সকালের জলখাবারে কখনও ঝালমুড়ি। দুপুরের টিফিন পেয়ারা মাখা। বিকেলে গলা ভিজিয়ে নিয়েছেন প্যারামাউন্টের সরবতে। লস্যি, ঘোল, গোলাপের সরবৎ ছিল তালিকায়।
সন্ধেয় চা-সিঙাড়া না হলে মন ভরে? তার ফাঁকে ছোট্ট ছোট্ট আড্ডা। এই হল শহুরে মৌতাত। অনুষ্কা তাতেও মজেছেন। জাফরান, মশলা দেওয়া মাটির ভাঁড়ে চা আর চাটনি সহযোগে শালপাতায় সিঙাড়া। তাতে এক কামড় দিয়েই নায়িকার বুঝি মনে পড়েছে, ছবি তোলা হল না তো! সঙ্গে সঙ্গে টেবিলে সব সাজিয়ে নিয়েই ক্লিক ক্লিক।
কখনও সকালের জলখাবারে ধোঁয়া ওঠা হিংয়ের কচুরিও চলেছে তাঁর। ধবধবে সাদা ডিখে খান তিনেক কচুরি। সাদা বাটিতে আলুর তরকারি। খেয়দেয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে সে দিন কি বেশি ভাল শট দিয়েছিলেন নায়িকা?
কলকাতায় আসবেন আর মিষ্টি খাবেন না, হয়? নায়িকা তো! বেশি মিষ্টি খাওয়ার উপায় নেই। তাই বাড়ির জন্য পাটিসাপ্টা মিষ্টি এক বাক্স নিয়েছেন।
নিজে অবশ্য কামড় বসিয়েছেন বড় সাইজের রাজভোগে। সম্ভবত কচুরি খাওয়ার পরেই মিষ্টিমুখ করেছেন নায়িকা। পুরো বাঙালি রীতি মেনে।
আর ছিল লাল দই, সাদা দই। যা না খেলে জীবন এবং কলকাতায় আসা— দুটোই বৃথা! নায়িকার খাবার টেবিলে সে দিন রীতিমতো উৎসব। এক ভাঁড় লাল মিষ্টি দই। পাশেই সাজানো চিনি দিয়ে পাতা সাদা মিষ্টি দই। দুটো ভাঁড়ে চামচ দেওয়া। শুধু কেটে খাওয়ার অপেক্ষা।
কাজ-খাওয়ার ফাঁকেই ছিল ঈশ্বর বন্দনা। হাওড়ায় যিনি পা রাখেন তিনি বেলুড় মঠে যাবেনই। অনুষ্কাও গিয়েছিলেন ভোরবেলায়। তখনও মঠের গঙ্গার ঘাট তুলনায় ফাঁকা। সেই সুযোগে একান্তে তিনি ঘাটে দাঁড়িয়ে অনুভবের চেষ্টা করেছেন শ্রী রামকৃষ্ণ, মা সারদাকে। সে দিন তিনিও গেরুয়া বসনে সেজেছিলেন!
আর গিয়েছিলেন কালীঘাট। মেয়ে ভামিকাকে নিয়ে। পুজো দিয়ে বেড়িয়ে ছবি তুলেছেন। মেয়েকে নিজের কোলে জাপটে নিয়েছেন। সাদা পোশাকে শুচিস্নিগ্ধ অনুষ্কা। কপালে পুজোর লাল সিঁদুর। দূরে কালীঘাটের মন্দিরের চুড়ো।