৩৩ এ পা লিও মেসির, দেখে নিন এলএমটেনের কেরিয়ারের সেরা ১০ পারফরমেন্স
- FB
- TW
- Linkdin
১০. বনাম ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড (২০০৯)
২০০৮-০৯ মরশুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এবং বার্সেলোনা। ম্যাচটি বার্সা জিতেছিল ২-০গোলে। গোটা ম্যাচে মেসিকে সামলাতে হিমশিম খেয়েছিল ম্যান-ইউ ডিফেন্স। দ্বিতীয়ার্ধে জাভির বাড়ানো ক্রসে অবিশ্বাস্য হেড করে দলের দ্বিতীয় গোলটি করেছিলেন মেসি। সাধারণত তিনি খুব ভালো হেডার নিতে পারেন না উচ্চতার ঘাটতির জন্য।কিন্তু সেইদিন তার করা গোলটি তার কেরিয়ারের অন্যতম সেরা গোল বলে মনে করা হয়।
৯. বনাম বায়ার্ন লেভারকুশেন (২০১২)
২০১১-১২ মরশুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলো পর্বে মুখোমুখি হয়েছিল বায়ার্ন লেভারকুশেন এবং বার্সেলোনা। প্রথম পর্বের ম্যাচে জার্মান ক্লাবের ঘরের মাঠে তাদেরকে হারিয়ে এসেছিল বার্সেলোনা। ৭ ই মার্চ দ্বিতীয় পর্বের ম্যাচে তাদের নিজেদের ঘরের মাঠে লেভারকুশেন ৭-১ গোলে উড়িয়ে দেয় তারা। একই পাঁচ পাঁচটি গোল করেন লিও মেসি। আজ পর্যন্ত তিনি বাদে অন্য কোনও ফুটবলার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের এক ম্যাচে ৫ গোল করতে পারেননি আজও।
৮. বনাম ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড (২০১১)
লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ২৮ শে মে ২০১১ তে ফিরে এসেছিল দুই বছর আগের রোমের স্মৃতি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে পুনরায় মুখোমুখি হয়েছিল ম্যান ইউ এবং বার্সা। প্রথমার্ধতে দুই দলই একটি করে গোল করে। দ্বিতীয়ার্ধে মেসির শট গোললাইন থেকে বাঁচার প্যাট্রিক এভ্রা। কিন্তু তাতে আটকানো যায়নি মেসিকে। দূরপাল্লার শটে ম্যাচের ৫৪ মিনিটে ব্যাবধান বাড়ান তিনি। ম্যাচটি বার্সা জেতে ৩-১ গোলে। ইউয়েফা এবং দর্শক উভয়ের বিচারেই ম্যাচের সেরা হয়েছিলেন লিও মেসি।
৭. বনাম রিয়াল মাদ্রিদ (২০১১)
ওয়েম্বলি তে ফাইনালে পৌঁছনোর আগে সেই বছর সেমি-ফাইনালে বার্সাকে মুখোমুখি হতে হয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদের। প্রথম পর্বের খেলায় ৭০,০০০এর বেশি দর্শক রিয়াল মাদ্রিদের ঘরের মাঠে বসে দেখেছিল মেসি ম্যাজিক। ২ গোল করে রিয়ালের স্বপ্ন চুরমার করেছিল মেসি। তার মধ্যে দ্বিতীয় গোলটি ৪ জনকে কাটিয়ে হতবাক ক্যাসিয়াসের পাস দিয়ে হালকা চিপে। নিঃসন্দেহে মেসির কেরিয়ারের অন্যতম সেরা গোল।
৬. বনাম নাইজিরিয়া (২০১৪)
২০১৪ বিশ্বকাপের গ্রূপ পর্বে মেসি আক্ষরিক অর্থে হয়ে উঠেছিলেন অতিমানব। একার দমে গ্রূপ স্টেজ থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন আর্জেন্টিনাকে। গ্রূপ পর্বের ম্যাচে নাইজেরিয়ার মুসা এবং মেসির প্রতিদ্বন্দ্বীতা আলাদা মাত্রা পেয়েছিল। ম্যাচে ৩-২ গোলে জিতেছিল আর্জেন্টিনা। ২ টি গোল করেছিলেন লিও মেসি। তারমধ্যে একটি অসাধারণ ফ্রী-কিকে নাইজিরিয়ান গোলকিপার এনইয়েমা কে হতবাক করে। নিঃসন্দেহে মেসির বিশ্বকাপের সেরা পারফরম্যান্স।
৫. বনাম রিয়াল মাদ্রিদ (২০১৭)
হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছিল লা লিগার খেতাবের। সেই অবস্থায় ২৩ এপ্রিল ২০১৭ তে এল-ক্লাসিকো তে মুখোমুখি হয়েছিল দু-পক্ষ। যুযুধান দুই পক্ষের লড়াইয়ে প্রথমে গোল করে এগিয়ে যায় রিয়াল মাদ্রিদ। এরপর চোট পান মেসি। অসাবধানতাবশত মার্সেলোর কনুই লেগে গভীর ক্ষত হয় মেসির ঠোঁটে। এর পর দুজনকে কাটিয়ে গোল করে প্রথমার্ধেই সমতা ফেরান তিনি। দ্বিতীয়ার্ধে আরও একটি করে গোল করে দুই দল। মেসিকে ট্যাকল করে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন সের্জিও রামোস। ম্যাচের একেবারে অন্তিম লগ্নে বাঁ পায়ের জোরালো শটে গোল করে বার্সাকে জয় এনে দেন সেই মেসি।
৪. বনাম আর্সেনাল (২০১১)
২০০৯-১০ মরশুমের কোয়ার্টার ফাইনালে আর্সেন ওয়েঙ্গারের আর্সেনালের মুখোমুখি হয় বার্সেলোনা। অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্স করেন লিও মেসি। আর্সেনালের ডিফেন্স টপকে চার চারটি গোল করেছিলেন তিনি। ক্যাম্প ন্যু তে একার হাতে লিখে দেন ম্যাচের ভবিষ্যৎ। আর্সেন ওয়েঙ্গার মেসির এই পারফরম্যান্সকে অবিশ্বাস্য বলে মন্তব্য করেন এবং তাকে বিশ্বের সেরা ফুটবলার আখ্যা দেন।
৩. বনাম লিভারপুল (২০১৯)
২০১৮-১৯ মরশুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিতে মুখোমুখি হয় বার্সা এবং লিভারপুল। পুরো ম্যাচে আগাগোড়া মেসিকে আটকে রাখার প্ল্যান ছিল লিভারপুলের। প্রথমার্ধে সেই লক্ষ্যে সফলও হয় তারা। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে সুযোগ সন্ধানী মেসি সুয়ারেজের মারা শট ক্রসবারে লেগে ফিরে আসতেই চকিতে জালে জড়িয়ে দেন বল। তার কিছুক্ষণ পরে গোল থেকে ৩০ গজ দূরে বিতর্কিত ফ্রি-কিক পায় বার্সা। নিখুঁত ফ্রি-কিকে অসাধারণ ভাবে লিভারপুল গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকার-কে পরাস্ত করে গোল করে যান লিও মেসি। সম্ভবত তার কেরিয়ারের সেরা ফ্রি কিক, বার্সা ম্যাচ জেতে ৩-০ গোলে, ২টি গোল লিও মেসির।
২. বনাম রিয়াল মাদ্রিদ (২০০৭)
১০ ই মার্চ ২০০৭ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়সে রিয়াল মাদ্রিদের বিরুদ্ধে অসাধারণ পারফরম্যান্স করে গোটা বিশ্বের নজর কাড়েন লিও মেসি। তখন বার্সায় চলছে রোনালদিনহো রাজ। তার মাঝে মাত্র ১৯ বছর বয়সে রিয়াল মাদ্রিদের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করে সারা বিশ্বকে বার্তা পাঠিয়ে দেন মেসি, যে বিশ্ব ফুটবলে নতুন একটি যুগের আরম্ভ হতে চলেছে।
১. বনাম ইকুয়েডর (২০১৭)
২০১৮ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার যোগ্যতা অর্জন সংশয়ের মুখে পড়ে গিয়েছিল। ইকুয়েডরের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের যোগ্যতাঅর্জন পর্বের শেষ ম্যাচে হার বা ড্র মানে ছিল সেবারের মতো বিশ্বকাপের ছাড়পত্র পাওয়া থেকে বঞ্চিত হওয়া। সেই অবস্থায় খেলা শুরু করে প্রথমে গোল করে এগিয়ে যায় ইকুয়েডর। বাকি ম্যাচে ঝলসে ওঠে মেসির বাঁ পা। একার কাঁধে আর্জেন্টিনাকে এই বিপদ থেকে বার করার দায়িত্ব নেন তিনি। হ্যাটট্রিক করে আর্জেন্টিনাকে এনে দেন রাশিয়া বিশ্বকাপের টিকিট। নিঃসন্দেহে মেসির জীবনের সেরা পারফরম্যান্স।