England vs Italy Euro 2020 Final, জেনে নিন দুই দলের শক্তি-দুর্বলতা ও রণনীতি
- FB
- TW
- Linkdin
কেমন ছিল ইংল্যান্ডের ফাইনালের পথ-
গ্রুপ স্টেজের প্রথম ম্যাচে ক্রোয়শিার বিরুদ্ধে ১-০ গোলে জয় পায় ইংল্যান্ড। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচেই স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে গোলশূন্য ড্র করে হ্যারি কেনরা। তৃতীয় ম্যাচে চেক রিপাবলিকের বিরুদ্ধে ১-০ গোলে জিতে নক আউটে যায় ব্রিটিশ লায়ন্সরা। কিন্তু ইংল্যান্ডের খেলা মন ভরাতে পারেনি সমর্থকদের। হয় সমালোচনাও। কিন্তু নক আউটে উঠে রং পাল্টায় ইংল্যান্ড। প্রি কোয়ার্টারে জার্মানিকে ২-০ গোলে হারিয়ে ছন্দে ফেরে গ্যারেথ সাউথ গেটের দল। কোয়ার্টার ফাইনালে ইউক্রেনকে ৪-০ গোল উড়িয়ে দেয় ইংল্যান্ড। সেমিতে ডেনমার্কের বিরুদ্ধে জয় পায় ২-১গোলে। এবার ফাইনালে সামনে ইতালি। ঘরের মাঠ ওয়েম্বলিতে ট্রফি জিততে মরিয়া ব্রিটিশরা।
প্রধান শক্তি হ্যারি কেন-
প্রতিযোগিতার প্রথম তিন ম্যাচে গোল না পাওয়ায় অধিনায়ক হ্যারি কেনের পারফরমেন্স নিয়ে উঠতে শুরু করে প্রশ্ন। কিন্তু নকআউটে গোল ফেরে হ্যারি কেন। শেষ তিন ম্যাচে ৪ গোল করে ফেলেছেন তিনি। হ্যারি কেন গোলের মধ্যে থাকলে ইংল্যান্ড দলের শক্তি বহুগুণ বেড়ে যায়। ফাইনালে দলের অধিনায়কত্বের পাশাপাশি গোল করার ক্ষেত্রেও অন্যতম দায়িত্ব থাকছে কেনের উপর।
ইংল্যান্ড দলের অন্যান্য তারকারা-
এই ইংল্যান্ড দলের তারুণ্য প্রধান শক্তি। ক্লাব লেভেলে চুটিয়ে খেলেন এই ফুটবলাররা। দেশের জার্সিতে এবার ইতিহাস তৈরি করতে মরিয়া সকলেই। আক্রমণে হ্যারি কেন ছাড়াও গোলের মধ্যে রয়েছেন রাহিম স্টারলিং। ছন্দে রয়েছে সাকা, ফিলিপস, রাইসরা। রক্ষণে দলকে ভরসা দিচ্ছে ওয়ালকার, লুক শ, ম্যাগুইরে, স্টোনসরা।
ইংল্যান্ড দলের দুর্বলতা দুর্বলতা-
গোলের জন্য দল সবতেকে বেশি নির্ভরশীল হ্যারি কেন ও রাহিম স্টারলিংয়ের উপর. এই দুই তারকা বাদেও অন্যান্য প্লেয়ারদের ফাইনালে জ্বলে উঠতে হবে। কারণ ইতালি দলে রয়েছে চিলেনি, বুনোচ্চিদের মত ডিফেন্ডাররা। এছাড়াও বড় ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতার অভাব সমস্যায় ফেলতে পারে ইংল্যান্ড দলকে।
কী হতে চলেছে রণনীতি-
রক্ষণাত্মক ফুটবলে খুব একটা বিশ্বাসী নন, ইংল্য়ান্ডের কোচ গ্যারেথ সাউথগেট। তাই মাঝমাঠের রক্ষণ নিজেদেরে দলে রেখে আক্রমণেই যেতে চাইবেন তিনি। প্রথমে গোল তুলে নেওয়াই লক্ষ্য সাউথগেটের। তবে পরিস্থিতি অনুযায়ী কোন কোন রণনীতি তৈরি করেছেন তা নিয়ে খোলাসা করেননি সাউথগেট।
বিপক্ষকে সমীহ ইংল্যান্ড কোচের-
মেগা ফাইনালের আগে বিপক্ষকে সমীহ করছেন সাউথগেট। বলেছেন,'ওরা দারুণ উদ্যম এবং এনার্জি নিয়ে নিজেদের ফুটবলটা খেলে। পরিকল্পনার দিক থেকে দেখতে গেলে ইতালিয়ান দল বরাবরই খুব ভাল। তবে ওরা বর্তমানে যে ধরনের ফুটবল খেলে, তা বাকি সকল ইতালিয়ান দলের থেকে আলাদা, অনেক বেশি আধুনিক।' তবে তার দলও যে তৈরি সেই কথা সাফ জানিয়েছেন সাউথগেট।
কেমন ছিল ইতালির ফাইনালের পথ-
ইউরোর প্রথম থেকেই দারুণ ছন্দে রয়েছে ইতালি দল। প্রথম ম্যাচেই তুরস্ককে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দেয় মানচিনির দল। দ্বিতীয় ম্য়াচে সুইজারল্যান্ডকে ৩-০ গোলে হারায় ইতালি। তৃতীয় ম্যাচে তুরস্কের বিরুদ্ধে জয় পায় ১-০ গোলে। প্রি কোয়ার্টার ফাইনালে অস্ট্রিয়াকে হারায় ২-১ গোলে। কোয়ার্টার পাইনালে বেলজিয়ামকে হারায় ২-১ গোলে। সেমি ফাইনালে স্পেনের বিরুদ্ধে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়। নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ে খেলা শেষ হয় ১-১ গোলে। টাই ব্রেকারে মানচিনির দল জয় পায় ৪-২ ব্যবধানে।
প্রধান শক্তি আক্রমণ বিভাগে একাধিক তারকা-
কোনও ব্যক্তি বিশেষের উপর নির্ভর নয় এই ইতালি দল। ইতালির দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ঘরানাটাই পালটে দিয়েছেন মানচিনি। রক্ষণাত্মক নয়, নতুন ইতালি মানে আক্রমণ আক্রমণে বিপক্ষকে ঝাঝরা করে দেওয়া। তাই আক্রমণ বিভাগ এই দলের প্রদান শক্তি। দুরন্ত ছন্দে ও বোঝাপড়ার সঙ্গে খেলছেন ইমোবাইল, ইনসিগনে, বারেল্লা, ভেরাত্তি, জোর্গিনহো, চিয়েসিরা। তাই কোনও ম্য়াচেই গোল পেতে খুব একটা সমস্য়া হয়নি ইতালির। ফাইনালে আরও একবার নিজেদের প্রমাণ করতে মরিয়া ইতালি।
ইতালি দলের রক্ষণে অভিজ্ঞতা-
আক্রণের পাশাপাশি ইতালি দল যে তাদের রক্ষণাত্মক শৈলিকে একেবারে ভুলে যায়নি, তা প্রমাণ করে দিয়েছে বেলজিয়াম ম্য়াচে। প্রথমার্ধে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে থাকার পর দ্বিতীয়ার্ধে রক্ষণকে শিল্পের পর্যায় নিয়ে গিয়েছিল ইতালির ডিফেন্স লাইন। যার প্রধান শক্তি হল অভিজ্ঞ চিয়েলিনি ও বুনোচ্চি। এছাড়া তাদের যোগ্য সঙ্গত দিচ্ছেন লরেঞ্জো ও এমারসন।
ইতালি দলের দুর্বলতা-
এই ইতালি দলের দুর্বলতা বার করা সত্যিই খুব কঠিন। কারণ রক্ষণ, মাঝমাঠ থেকে আক্রমণ সব বিভাগেই খুবই শক্তিশালী ও সামঞ্জস্যপূর্ণ। রিজার্ভ বেঞ্চও শক্তিশালী। তবে প্রতিযোগিতায় এখনও পর্যন্ত গোল ডিফেন্ড করেনি ইতালি। প্রথম গোল হজম করলে কেমন কেলে মানচিনির দল সেটাই দেখার।
ফাইনালে কী হতে চলেছে রণনীতি-
প্রতিযোগিতার শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে বিপক্ষকে কুপকাত করে আসছে ইতালি। রবিবারও ওয়েম্বলিতে ব্রিটিশ ঘরের মাঠে সেই একই পদ্ধতিতে বধ করতে চাইবে মানচিনির দল। গোল করে এগিয়ে যেতে পারলে ইতালির সেই পুরোনো ঝাপ ফেলে দেওয়া রক্ষমাত্মক ফুটবলও দেখা মিলতে পারে। ব মিলিয়ে ট্রফি জিততে তৈরি ইতালি।
বিপক্ষকে সমীহ তবে আত্মবিশ্বাসী মানচিনি-
মেগা ফাইনালে যোগ্য দল হিসেবেই ইংল্য়ান্ড উঠেছে বলে মনে করেন ইতালি কোচ মানচিনি। তাই কোনওভাবেই প্রতিপক্ষকে হাল্কাভাবে নিতে নারাজ মানচিনি। নিজেদের স্বাভাবিক ফুটবল খেলেই ফাইাল জয়ের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী ইতালি। এখন দেখার ফাইনালে কোন মাস্টার স্ট্রোক দেন মানচিনি।
ম্যাচ প্রেডিকশন-
প্রতিযোগিতায় দুরন্ত ছন্দে রয়েছে দুই দল। তবে ইংল্যান্ড ও ইতালি দলের সামগ্রিক শক্তির বিচার করলে কিছুটা এগিয়ে মানচিনির দল। তবে ঘরের মাঠ ওয়েম্বলিতে দর্শক সমর্থন পাবে ইংল্যান্ড। ওয়েম্বলিতে অপ্রতিরোধ্য ইংল্যান্ড দলও। ফলে মেগা ফাইনালে যেই দল প্রথম গোল করবে তাদেরকেই এগিয়ে রাখছে ফুটবল বিশেষজ্ঞরা।