২০১৩ সালে উত্তরাখণ্ডের সেই ভয়াবহ বিপর্যয়, কেদারনাথের সেই 'অলৌকিক ঘটনা' আজও অবাক করে
রবিবার উত্তরাখণ্ডে হিমবাহ ভাঙার কারণে চামোলি জেলা প্লাবিত হয়েছে। এর পরে হঠাৎ ধৌলিগঙ্গা নদীর জলের স্তর বেড়েছে। যার মধ্যে একশো থেকে দেড়শোও বেশি মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৭ জুন ২০১৩ সালের মতো ধ্বংসযজ্ঞের স্মারক। এতে প্রায় দশ হাজার মানুষ ভেসে গিয়েছিল। এই ঘটনাটি এত ভয়াবহ ছিল যে আজও মানুষ সেই স্মৃতি ভুলতে পারেননি। অনেক প্রত্যক্ষদর্শীর মতে তারা তাদের জীবনে এমন দৃশ্য কখনও দেখেননি। যেখানে সর্বত্র কেবল জল তাতে আবর্জনার মতো প্রবাহিত হচ্ছে মানুষ। সেই সময় প্রায় ৫ হাজার গ্রাম ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তবে এই সময়ে একটি অলৌকিক ঘটনাও লোক দেখেছে। এখানে কেবল কেদারনাথের মন্দিরই অক্ষত ছিল বাকি সব ভেসে গিয়েছিল।
| Published : Feb 07 2021, 05:24 PM IST
- FB
- TW
- Linkdin
কেদারনাথ হিমালয় পর্বত অঞ্চলে, এটি উত্তরাখণ্ডের রুদ্রপ্রয়াগ জেলায় অবস্থিত। কেদারনাথ ১২ টি জ্যোতির্লিঙ্গগুলির মধ্যে একটি এবং এটি সর্বোচ্চ উচ্চতায় অবস্থিত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে কেদারনাথের উচ্চতা ১১ হাজার ৮০০ ফুট। চারদিকে রয়েছে কেবল পর্বত এবং নদী এবং হ্রদ।
২০১৩ সালে জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে উত্তরাখণ্ডে ভারী বৃষ্টি হয়েছিল। তবে প্রথম দুই দিন রুদ্রপ্রয়াগে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হয়েছিল। তবে ১৬ জুন সন্ধ্যায়, বায়ুমণ্ডল পরিবর্তন হতে শুরু করে। কয়েক ঘন্টা পরে, কেদারনাথ মন্দিরে জলে ভরে যায়। বৈদ্যুতিক যোগাযোগ ছিন্ন হয়। ভারী বৃষ্টির কারণে ভূমিধস হতে শুরু করে। ব্রিজ-রাস্তা ভেসে গিয়েছিল।
এই ধ্বংসাত্মক ঘটনাটি ঘটেছিল কারণ ২০১৩ সালের ১৭ জুন ধারাবাহিকভাবে বৃষ্টিপাতের কারণে নদীগুলি বিপদ চিহ্নের উপরে প্রবাহিত হতে থাকে। মন্দিরের দিকে জল ঘুরিয়ে, কাদা এবং ধ্বংসাবশেষ প্রবেশ করতে শুরু করে।
উত্তরাখণ্ড সরকারের মতে, ১৪ জুন থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত ৩.৫ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছিল। এই বৃষ্টিপাত জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বর্ষাকালেও হয় না।
এই ঘটনাটির সময় কেদারনাথ মন্দিরের তীর্থ পুরুষোহিত সমাজ সমিতির সভাপতি পন্ডিত বিনোদ শুক্লাও মন্দিরে ছিলেন । তিনি বলেছিলেন যে ১৭ জুন মন্দাকিনী নদী জলমগ্ন ছিল। নদীর প্রবাহ এত দ্রুত ছিল যে বড় বড় পাথর প্রবাহিত হতে শুরু করেছিল। অল্প সময়ের মধ্যেই কেদারনাথের পুরো অঞ্চলটি ধ্বংস হয়ে যায়।
এখানকার বাড়িঘর, হোটেল এবং আশ্রয়কেন্দ্রগুলি সবই ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। তবে কয়েক হাজার বছরের পুরানো এই মন্দিরের কোনও কিছুইই নষ্ট হয়নি। লোকেরা এটিকে একটি আজও একটি মহাঅলৌকিক ঘটনা বলে মনে করে।
পন্ডিত শুক্লার মতে, বন্যায় জল মন্দিরের দিকে এগিয়ে এসেছিল। কিন্তু তখন মন্দিরের সামনে একটি বড় শিলা এসে নদীর জল দুটি ভাগে বিভক্ত করে দেয়। এটির সাহায্যে মন্দিরের আর বন্যার জল প্রবেশ না করে দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়।
লোকে একে কেদারনাথের অলৌকিক শক্তি বলে মনে করে। যাখানে এই অঞ্চলের শুধু এই মন্দির বাদে পুরো অঞ্চলটি ধ্বংস হয়ে যায়।