অজয় সিং বিস্ত থেকে কীভাবে হলেন আজকের যোগী আদিত্যনাথ - অজানা কাহিনি, অদেখা ছবি
শুক্রবার লখনউ-এ (Lucknow), উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নিলেন যোগী আদিত্যনাথ (Yogi Adityanath )। তাঁর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে একদিকে যেমন ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi) থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা ও বিজেপির (BJP) শীর্ষনেতাদের অনেকে, ছিলেন অনেক সাধু-সন্ন্যাসীও। আসলে, রাজনীতি ও ধর্ম - দুই জগতেই যোগীর সমান বিচরণ। অনেকেরই জানা নেই, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী একসময় পরিচিত ছিলেন অজয় সিং বিস্ত (Ajay Singh Bisht) নামে। অজয় সিং বিস্ত থেকে কীভাবে যোগী আদিত্যনাথ হয়ে উঠলেন তিনি? আসুন জেনে নেওয়া যাক তাঁর অজানা এই যাত্রার কাহিনি -
- FB
- TW
- Linkdin
অজয় সিং বিস্তের জন্ম হয়েছিল ১৯৭২ সালের ৫ জুন, উত্তরাখণ্ডের গাড়োয়াল জেলার পাঞ্চুর গ্রামে। এমএসসি কোর্সের পড়াশোনা করতে তিনি ঋষিকেশে এসেছিলেন। আর সেই সময়ই, ১৯৯০ সালে তাঁর সঙ্গে প্রথম দেখা হয়েছিল তাঁর গুরু মোহান্ত অবৈদ্যনাথের সঙ্গে।
সেই সময় দেশে ছড়িয়ে পড়েছে রাম জন্মভূমি আন্দোলন। অজয়ের মনও পড়াশুনা থেকে এই সমস্যার দিকেই চলে গিয়েছিল। ১৯৯৩ সালে, অজয় তিনি গোরখপুরের, গোরক্ষনাথ মন্দিরে গিয়েছিলেন। সেখানে দ্বিতীয়বার তাঁর সঙ্গে দেখা হয়েছিল মোহান্ত অবৈদ্যনাথের।
গোরক্ষনাথ মন্দিরের প্রধান সেবায়েত, অজয়কে সেইদিনই বলেছিলেন, 'তুমি একজন যোগী, একদিন এখানে তোমাকে আসতেই হবে'। অজয় ,অবৈদ্যনাথের কাছে যোগ শেখার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। মোহান্ত অবৈদ্যনাথ, তাঁকে সেখানে থেকে যাওয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু অজয় তখনও মনস্থির করতে পারেননি।
কয়েক মাস পর, মোহান্ত অবৈদ্যনাথ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। চিকিৎসার জন্য তাঁকে দিল্লির এইমস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। খবর পেয়ে অজয় সিং বিস্তও দিল্লি গিয়েছিলেন। মোহান্ত ফের তাঁকে গোরক্ষপুর মঠে আসতে বলেছিলেন।
সেই সময় অবশ্য অজয় সিং বিস্ত বাড়ি ফিরে গিয়েছিলেন। তবে, ১৯৯৩ সালের নভেম্বরে তিনি, তাঁর পড়াশোনা, পরিবার, গ্রাম - সব ছেড়ে গোরক্ষনাথ মন্দিরে চলে আসেন। তাঁর পরিবার তাঁর পরিকল্পনা সম্পর্কে কিছুই জানত না। তারা ভেবেছিল তিনি কাজ করতে যাচ্ছেন।
অজয় গোরক্ষনাথ মন্দিরে আসার প্রায় দুই মাস পর, বসন্ত পঞ্চমীর দিনে মোহান্ত অবৈদ্যনাথ তাঁকে দীক্ষা দিয়েছিলেন। সেই সময়ই তাঁর নাম বদলে হয়েছিল 'যোগী আদিত্যনাথ'। ২০১৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর, মোহান্ত অবৈদ্যনাথের মৃত্যুর পর, গোরক্ষনাথ মন্দিরের মোহান্ত হন যোগী আদিত্যনাথ।
শান্তনু গুপ্তের লেখা 'দ্য মঙ্ক হু বিকেম চিফ মিনিস্টার' বইয়ের তথ্য অনুসারে, যোগী আদিত্যনাথ প্রতিদিন ভোর ৩টেয় ঘুম থেকে ওঠেন। ভোর ৫টা পর্যন্ত চলে কিয়া ও যোগাসন। এরপর সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত পড়াশোনা করেন।
যোগীর খাদ্যাভ্যাসও ভারি অদ্ভূত। দুপুরের খাবার বলে কিছু নেই। পরিবর্তে, তিনি সকালের জলখাবারে খান ডালিয়া, বাটারমিল্ক এবং ফলের মতো হালকা খাবার। রাতের খান সিদ্ধ শাকসবজি, রুটি, ভাত এবং মসুর ডাল। খাবারে থাকে ন্যূনতম লবণ, মশলা ও তেল। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরও, তাঁর এই রুটিন বদলায়নি।