- Home
- India News
- লাল ফৌজকে লক্ষ্য পূরণ করতে দেয়নি 'এস্টাব্লিশমেন্ট ২২', জানুন দেশের এই গোপন বাহিনীর বীরগাথা
লাল ফৌজকে লক্ষ্য পূরণ করতে দেয়নি 'এস্টাব্লিশমেন্ট ২২', জানুন দেশের এই গোপন বাহিনীর বীরগাথা
- FB
- TW
- Linkdin
লাদাখের সঙ্গে তিব্বতের সীমান্তকে 'সবুজ লাইন' দিয়ে চিহ্নিত করে পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)। যা প্যাংগং সো লেকের উত্তর তীরে ফিঙ্গার ৪ দিয়ে গিয়েছে। সেই লাইনের মাধ্যমে লেকের দক্ষিণ তীরে চুশুল উপত্যকার অধিকাংশ এলাকা নিজেদের বলে দাবি করে চিন।
১৯৬০ সালের মানচিত্রে সেই লাইন চিহ্নিত করেছে বেজিং। তারপর থেকেই সব চিনা শাসকরা সেই লক্ষ্য পূরণের চেষ্টা করেছেন। বর্তমান রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের ক্ষেত্রেও সেই লক্ষ্য পরিবর্তন হয়নি।
তারই অঙ্গ হিসেবে গত ২৯ ও ৩০ অগস্টের রাতে প্যাংগং সো লেকের দক্ষিণ তীরে 'সবুজ লাইনে' পৌঁছানোর জন্য সামরিক সমাবেশ বাড়াচ্ছিল চিন। অথচ সেই বেজিংই সামরিক ও কূটনৈতিক স্তরের বৈঠকে শান্তি ও স্থিতাবস্থা বজায়ের পক্ষে সওয়াল করে এসেছে ।
যদি ভারতের বিশেষ বাহিনী চিনের (গতিবিধি) আগেভাগে বুঝে দক্ষিণ তীর এবং চুশুলের গুরুত্বপূর্ণ উঁচু এলাকাগুলি দখল না করত, তাহলে চিনা সেনার হাতে উপত্যকার দখল চলে যেত। চিনের একমাত্র লক্ষ্য হল সবুজ লাইনে পৌঁছানো এবং ভারতের লক্ষ্য হল তাদের পৌঁছাতে না দেওয়া। পরিবর্তে সরকার নির্ধারিত টহলদারি সীমানায় পৌঁছানো।
এমনিতে পূর্ব লাদাখে ভারতীয় সেনাকে মাত দেওয়ার জন্য প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ভারী বন্দুক, ট্যাঙ্ক, সারফেস-টু-এযার মিসাইল মোতায়েন করেছে চিনা সেনা। কিন্তু ফিঙ্গার ৪ এবং প্যাংগং সো লেকের দক্ষিণ তীরে ভারতীয় সেনার পুর্নবিন্যাসের ফলে পরবর্তী সামরিক পদক্ষেপের আগে বেজিংকে দু'বার ভাবতে হবে।
চিনের লাদাখ জয়ের মধ্যে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ভারতের তিব্বতি সেনারা। ভারতীয় 'স্পেশ্যাল ফ্রন্টিয়ার ফোর্স' ঘুম উড়িয়ে নিয়েছে বেজিংয়ের। তাদের কোভার্ট অপারেশন ঘোল খাইয়ে দিচ্ছে লালফৌজকে।
স্পেশ্যাল ফ্রন্টিয়ার ফোর্সকে সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করে খোদ দেশের প্রধানমন্ত্রীর দফতর। দিল্লি থেকে ক্যাবিনেট সেক্রেটারিয়েট এই ফোর্সের খবর নেয়।
লাদাখে গত ২৯ অগাস্ট থেকে যা ঘটছে, তাতে ভারতের দাপুটে অবস্থানের নেপথ্যে এবার এই গোপন ফোর্স রয়েছে কী না , তা নিয়ে বহু আলোচনা শুরু হয়েছে।
কীভাবে গা ঢাকা দিয়ে এই ফোর্স নিজের কর্তব্যে অবিচল তার নমুনা একাধিক কোভার্ট অপরেশনস। এমনই দাবি বহু বিশেষজ্ঞের।
২৯ ও ৩০ আগস্টের রাতে প্যাংগং লেকের দক্ষিণে পাহাড়ি এলাকা দখল করার চেষ্টা করেছিল চিনা ফৌজ৷ মঙ্গলবার রাতে ফের উস্কানিমূলক সামরিক পদক্ষেপ করে চিনা বাহিনী৷ তাদের নিশানায় ছিল ভারতের নিয়ন্ত্রণাধীন চুসুল৷ যদিও চিনের সেই প্রচেষ্টা ভেস্তে দেয় ভারতীয় সেনা৷ এই ঘটনার পর থেকেই প্রচারের আলোকে ‘এস্টাব্লিশমেন্ট ২২’-র সম্ভাব্য ভূমিকা৷
বর্ষীয়ান এক সেনা আধিকারিক জানান, পূর্ব লাদাখ সীমান্তে পৌঁছে গিয়েছে স্পেশাল ফ্রন্টায়ার ফোর্স (এসএফএফ)৷ যদিও সেনার সঙ্গে এসএফএফ-এর যোগাযোগ ন্যূনতম৷ এক কথায় বলতে গেলে এসএফএফ ইউনিট সেনাবাহিনীর অংশ নয়৷ তবে তারা সেনাবাহিনীর অপারেশনাল নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। ইউনিটগুলির নিজস্ব পদ রয়েছে যা সেনাবাহিনীর পদমর্যাদার সমতুল্য।
এসএফএফ কমান্ডোরা উচ্চ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বিশেষ বাহিনীর সদস্য৷ এসএফএফ কমান্ডোদের প্রাথমিকভাবে প্রশিক্ষণ দেয় ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো, ‘র’ এবং সিআইএ৷ যাতে সহজেই শত্রুদের চোখে ধুলো দিতে পারে তারা৷ এসএফএফ গঠিত হওয়ার প্রথম কয়েক দশকে তাদের দায়িত্ব ছিল পরমাণু অস্ত্র নিয়ে চিনের পরিকল্পনার উপর নজর রাখা৷
১৯৬২ সালে চিন-ভারত যুদ্ধের পরেই এসএফএফ গঠিত হয়। এটি একটি গোপন দল ছিল৷ এই দলে মূলত তিব্বতি উদ্বাস্তুদের নিয়োগ করা করেছিল৷ প্রতিষ্ঠার সময় এই দলের নামকরণ করা হয়েছিল এস্টাব্লিশমেন্ট ২২৷
কোনও সেনা অফিসার বা অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্তা শনিবারের ঘটনায় এসএফএফ-এর ভূমিকা স্বীকার না করলেও, সীমান্তে তাদের উপস্থিতির কথা তাঁরা স্বীকার করে নিয়েছেন৷ একাত্তরের যুদ্ধ, অমৃতসরের স্বর্ণ মন্দিরে অপারেশন ব্লু স্টার, কারগিল যুদ্ধ এবং দেশে বিদ্রোহ বিরোধী অভিযানে অংশ নিয়েছিল এসএফএফ। এছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি অপারেশনের অংশ হয়েছিল এই বাহিনী৷
কালা টপের নীচে যুদ্ধট্যাঙ্ক সাজিয়ে বসেছে চিনের সেনা। ভারী ও হাল্কা দু’রকমের যুদ্ধট্যাঙ্কই রয়েছে তাদের সামরিক বহরে। কিন্তু ট্যাঙ্ক নিয়ে তারা এগিয়ে আসতে পারছে না কারণ কালা টপের দখল নিয়ে নিয়েছে ভারতের স্পেশাল ফ্রন্টিয়ার ফোর্স। অন্যদিকে, প্যাংগং হ্রদ বরাবর চুসুল ও স্প্যানগুর সো এলাকায় টি-৯০ ভীষ্ম ও টি-৭২ যুদ্ধট্যাঙ্ক সাজিয়ে বসে রয়েছে ভারতের বাহিনী। তাদের নিশানা চিনের ট্যাঙ্ক রেজিমেন্টের দিকে।