করোনা আবহে সংসদের বাদল অধিবেশনে বাতিল হল 'প্রশ্নোত্তর পর্ব', ছুটিও পাবেন না সাংসদরা
- FB
- TW
- Linkdin
করোনা আবহেই আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হতে চলেছে সংসদের বাদল অধিবেশন। চলবে ১ অক্টোবর পর্যন্ত।
বাদল অধিবেশনের প্রস্তুতি ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে। করোনা সংক্রমণ যাতে না হয় সেকারণে তৎপরতা তুঙ্গে সংসদে। গোটা এলাকা ডিসইনফেক্ট করা হচ্ছে। সংসদ কক্ষের ভেততেও চলছে জীবাণুনাশক স্প্রে। কীভাবে অধিবেশন পরিচালনা করা হবে তা নিয়ে রূপরেখা তৈরি করছে মোদী সরকার।
কোভিডের মধ্যে অধিবেশন যাতে নিরাপদে চালানো যায়, তার জন্য এখন পুরোদস্তুর প্রস্তুতি চলছে লোকসভায়। সংসদ ভবনের মধ্যেই হবে কোভিড টেস্ট, বসে বক্তব্য দেওয়া যাবে, কিছু সদস্য গ্যালারিতে বসবেন, ভবনের মধ্যে চলাচলের কিছু বিধিনিষেধ থাকবে। একই নিয়ম রাজ্যসভাতেও মেনে চলা হবে।
মাত্র দুই সপ্তাহ হবে এই অধিবেশনের মেয়াদ। তাই এর মধ্যে যত সম্ভব কাজ যাতে হয় তার জন্য রোজই খোলা থাকবে লোকসভা। সব মিলিয়ে ১১টি অধ্যাদেশ সংসদে আইন হিসাবে পাশ করার পরিকল্পনা রয়েছে কেন্দ্রের।
১৪ তারিখ লোকসভা চালু হবে সকাল ৯ টায়, চলবে দুপুরে ১ টা অবধি। এরপর দুই ঘণ্টা বাদে রাজ্যসভা শুরু হবে তিনটের সময়, শেষ হবে সন্ধ্যা ৭ টার সময়। তবে বাকি দিনগুলি কিন্তু ঠিক উলটো নিয়ম মানা হবে। আগে বসবে রাজ্যসভা তারপরে লোকসভা।
করোনা আবহে বাতিল করা হয়েছে সংসদের আসন্ন বাদল অধিবেশনের প্রশ্নোত্তর পর্ব। সংসদের সচিবালয়ের জারি করা নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয়েছে, করোনা পরিস্থিতিতে বাদল অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্ব থাকবে না। তবে জিরো আওয়ার ও অন্যান্য নিয়ম মেনেই বসবে সংসদের অধিবেশন।
একই সঙ্গে প্রাইভেট মেম্বার বিল আনা যাবে না এই অধিবেশনে। এই থেকে যা সময় বাঁচবে সেই দিয়ে আইন পাশ করা ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করা হবে।
সরকার যেমন একদিকে এগারোটি অর্ডিন্যান্স এখানে পাশ করাতে চায় অন্যদিকে পাঁচটি ইস্যুতে কেন্দ্রকে বিঁধতে প্রস্তুত বিরোধীরা। তাই, প্রশ্নোত্তর পর্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘিরে তুঙ্গে রাজনৈতিক বিতর্ক।
প্রশ্নোত্তর পর্ব সংসদ অধিবেশনে না রাখার জন্য ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন বিরোধীরা। তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন এই নিয়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে বলেছেন, গণতন্ত্রের হনন করছে কেন্দ্র। বিরোধীদের কথা বলার অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। কারণ প্রশ্নোত্তর পর্বই একমাত্র সময়, যেখানে সরকারের কাজ নিয়ে প্রশ্ন করতে পারেন বিরোধীরা।
সংখ্যাগরিষ্ঠতাকে কাজে লাগিয়ে মোদী সরকার নিজেদের মর্জি মতো চলছে বলে অভিযোগ করেন কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুর। তিনি বলেন, ‘‘চার মাস আগেই বলেছিলাম, অতিমারিকে অজুহাত বানিয়ে গণতন্ত্র ও বিরোধী কণ্ঠস্বর রোধ করবেন শক্তিশালী নেতারা। এমনিতেই দেরিতে অধিবেশন শুরু হচ্ছে। তার উপর বিনয়ের সঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হল, প্রশ্নোত্তর পর্বই থাকবে না। নিরাপত্তার দোহাই দিলেও এটা কখনও যুক্তিসঙ্গত হতে পারে না।’’
প্রশ্নোত্তর পর্বে কোপ পড়তে পারে এই আশঙ্কা করে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে আগেই চিঠি দিয়েছিলেন লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা অধীর চৌধুরী। তিনি হলেন, জিরো আওয়ার ও প্রশ্নোত্তর পর্বের মাধ্যমেই জাতীয় ও দেশের মানুষের সমস্যা সংসদে তুলে ধরার সুযোগ পান সাংসদেরা। তাই তাঁদের ওই অধিকার যেন কেড়ে না নেওয়া হয়।