করোনা বাড়বাড়ন্তের মধ্যেই ফুঁসে চলেছে ব্রহ্মপুত্র, অসমের পর এবার বন্যায় ভাসছে সিকিমও
দেশে লাফিয় লাফিয় বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। এর মাঝেই ক্রমশ ভয়াবহ আকার ধারণ করছে অসমের বন্যা পরিস্থিতি। যার জেরে এখনও পর্যন্ত মারা গিয়েছেন ৪০জন। দেশের উত্তর পূর্বের এই রাজ্যে ৩৩টি জেলার মধ্যে বন্যা কবলিত ২৫টি। ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যের ৩ লক্ষেরও বেশি মানুষ। এদিকে সিকিম জুড়েও শুরু হয়েছে বৃষ্টি। যার ফলে রঙ্গিত, তিস্তা ও ডানায়া নদীর জলস্তর বেড়ে গিয়েছে। তিস্তার অসংরক্ষিত এলাকায় লাল সতর্কতা জারি করতে হয়েছে। বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলাতেও। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, এই পরিস্থিতিতে উত্তরের বিভিন্ন জেলায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে ।
| Published : Jul 11 2020, 12:48 PM IST / Updated: Jul 11 2020, 12:53 PM IST
- FB
- TW
- Linkdin
একদিকে করোনার আতঙ্ক, অন্যদিকে দু-দুবার ভয়াল বন্যার কবলে অসম। রাজ্যের ৩৩টি জেলার মধ্যে বন্যা কবলিত হয়েছে ২৫টি ।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ধেমাজি, লক্ষ্মীপুর, বিশ্বনাথ, উদালগুড়ি, দারাং, লনবাড়ি, বরপেটা, কোকরাঝাড়, ধুবড়ি, নগাঁও, গোলাঘাট, জোরহাট, মাজুলি, শিবাসাগর, ডিব্রুগড়, বনগাইগাঁও, দক্ষিণ সালমারা, গোলপারা, কামরূপ, মরিগাঁও, হজাই, পশ্চিম করবি আংলং ও তিনসুকিয়া জেলার।
তবে সম্প্রতি রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর থেকে জানানো হয়েছে অবস্থার উন্নতি ঘটেছে শিবাসাগর, বনগাইগাঁওহজাই, উডালগুডি, মাজুলি, পশ্চিম করবি আংলং, দারাং, কোকরাঝাড়, ধুবরি, জোরহাট, ডিব্রুগড়, দক্ষিণ সালমারা, কামরূপ ও মকামরূপ মেট্রো জেলাগুলিতে।
অসমের বিপর্যয় মোকাবিলা দফত দাবি করছে ১১টি জেলায় বন্যার জল অনেকটাই নেমে গিয়েছে।
তবে রাজ্যের এখনও ১২টি জেলায় বন্যার গ্রাসে বিধ্বস্ত। বন্যার জলের তলায় রয়েছে নলবাড়ি, বরপেটা, গোয়ালপাড়া, মোরিগাঁও, নগাঁও, গোলাঘাট, লক্ষ্মীপুর, বিশ্বনাথ, ছিরাং ও তিনসুকিয়ার বিস্তৃণ এলাকা। এই এলাকাগুলিতে প্রায় ২ লক্ষেরও বেশি মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত।
প্রশাসন জানিয়েছে, বর্ষার মরসুমের এই ভয়াবহ বন্যায় ৩৮৪ টি গ্রামের প্রায় ২ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। বন্যার জলের তলায় নষ্ট হয়ে গিয়েছে মোট ২৬, ৯১০ হেক্টর চাষের জমি। বর্তমানে, মোট ৩৫টি ত্রাণ শিবিরে মহিলা ও শিশু-সহ ১০৯৫জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।
বিভিন্ন বন্যাকবলিত এলাকায় উদ্ধারকাজ চলছে। অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন। বন্যা কবলিত এলাকায় করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হচ্ছে কি না সেদিকেও খেয়াল রাখার জন্য ডেপুটি কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
বন্যার কারণে ১.২১ লক্ষ গৃহপালিত পশু এবং ১.২৭ লক্ষ পোলট্রি ক্ষতিগ্রস্ত৷
বন্যায় আশ্রয়হীন কাজিরাঙা অভয়ারণ্যের একাংশ বন্য প্রাণীরাও।
সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, শুধু অসম নয়, ভারী বৃষ্টি হচ্ছে উত্তর-পূর্বের মেঘালয়, অরুণাচল প্রদেশেও। ব্রহ্মপুত্র সহ অন্য কয়েকটি নদীতেও জলের স্তর বাড়ছে। প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকায় জল ঢুকছে।
সিকিমেও ফুঁসছে বিভিন্ন নদী। ভাসার অপেক্ষায় উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি অঞ্চল। উত্তরবঙ্গের চেয়ে আরও অনেক বেশি বৃষ্টি হচ্ছে সিকিমের পাহাড়ে। এতেই বাড়ছে নদীর জল।
সিকিমেও ফুঁসছে বিভিন্ন নদী। ভাসার অপেক্ষায় উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি অঞ্চল। উত্তরবঙ্গের চেয়ে আরও অনেক বেশি বৃষ্টি হচ্ছে সিকিমের পাহাড়ে। এতেই বাড়ছে নদীর জল।
টানা বৃষ্টির জেরে জল বাড়ছে তিস্তা এবং ডায়নাতেও। তিস্তার অসংরক্ষিত এলাকায় লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। গত চব্বিশ ঘণ্টায় সামসিংয়ে বৃষ্টি হয়েছে ২১৩ মিলিমিটার। ঝালংয়ে বৃষ্টি হয়েছে ২৪৫ মিলিমিটার। আর এতেই বাড়ছে বন্যা ও ভূমি ধ্বসের আশঙ্কা। শুক্রবার দুপুরের পর থেকে ভালোই বৃষ্টি হচ্ছে সমগ্র উত্তরবঙ্গেই।