- Home
- India News
- চাঁদের চারপাশে এক বছর চক্কর কেটে ফেলল চন্দ্রযান-২, এখনও মজুত ৭ বছরের জ্বালানি, গুজবের জবাব দিলেন শিবন
চাঁদের চারপাশে এক বছর চক্কর কেটে ফেলল চন্দ্রযান-২, এখনও মজুত ৭ বছরের জ্বালানি, গুজবের জবাব দিলেন শিবন
- FB
- TW
- Linkdin
২০০৮ সালে চন্দ্রযান ১ উৎক্ষেপণ করেছিল ইসরো। তার মাধ্যমে এই ব্যাপারে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায় যে চাঁদে জল রয়েছে। এছাড়া চাঁদের মাটিতে বরফেরও অস্তিত্ব দেখা যায়। সেই সাফল্য থেকে উদ্বুদ্ধ হয়েই দ্বিতীয় মিশনে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নামার পরিকল্পনা করে ইসরো।
২০১৯-এর ২২ জুলাই লঞ্চ করেছিল চন্দ্রযান-২। আর ২০ আগস্ট চাঁদের কক্ষপথে চন্দ্রযান-২ প্রবেশ করে।
যদিও চন্দ্রযান-২ এর বিক্রম ল্যান্ডার চাঁদের বুকে সফট ল্যান্ডিং করতে ব্যর্থ হয়, তবে এর অরবিটার চাঁদের কক্ষপথে সফল প্রতিস্থাপিত হয়েছিল। এই অরবিটারের মধ্যে আটটি ভিন্ন ভিন্ন বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি রয়েছে। এই এক বছরে চাঁদের চারপাশে ৪,৪০০ বারেরও বেশি প্রদক্ষিণ করেছে অরবিটার। এর সবকটি যন্ত্রপাতিও একদম যথাযথ কাজ করছে।
ইসরোর তরফে একটি বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছে, “চাঁদে অবতরণের চেষ্টা ব্যর্থ হলেও চাঁদের কক্ষপথে ঠিকভাবে পৌঁছে গিয়েছিল চন্দ্রযান ২। চাঁদের চারপাশে এক বছর পূর্ণ করেছে এই চন্দ্রযান এবং এর সব যন্ত্রপাতি ঠিকমতো কাজ করছে। নিজের নির্দিষ্ট কক্ষপথ ধরেই ঘুরছে এই চন্দ্রযান। এই মুহূর্তে এই যানে যে পরিমাণ জ্বালানি রয়েছে, তাতে আরও সাত বছর সহজেই এই যান চাঁদের কক্ষপথে ঘুরতে পারবে।”
চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণের জন্য পাঠানো হয়েছিল চন্দ্রযান ২। এখনও পর্যন্ত কোনও দেশ চাঁদের দক্ষিণ মেরু অর্থাৎ অন্ধকার দিকে অবতরণে সক্ষম হয়নি। ইতিহাস তৈরি করার চেষ্টা করেছিল ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। সবকিছুই ঠিক ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ল্যান্ডার বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। চাঁদের উপর হার্ড ল্যান্ডিং হয় বিক্রমের।
ল্যান্ডার বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হলেও চন্দ্রযান ২-এ যে হাই রেজোলিউশন ক্যামেরা লাগানো রয়েছে, তা থেকে চন্দ্রপৃষ্ঠের ছবি তুলে পাঠান হচ্ছে ইসরোকে। সায়েন্টিফিক পেলোডস, হাই রেজোলিউশন ক্যামেরা তার কাজ করে যাচ্ছে। তার সাহায্যে অনেক গবেষণা চালাচ্ছে ইসরো।
চন্দ্রযান ২-এ পাঠানো তথ্য এই বছরের শেষ দিকে ইসরোর প্রকাশ করার কথা আছে। চাঁদের টপোগ্রাফি, মিনারেলজি, সারফেস কেমিক্যাল কম্পোজিশন এবং থার্মো-ফিজিক্যাল বৈশিষ্ট্য নিয়েই গবেষণা মূল উদ্দেশ্য চন্দ্রযান-২ এর। এর ফলে চাঁদ নিয়ে মানুষের মধ্যে আরও আগ্রহ তৈরি হবে বলেই জানাচ্ছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।
ইসরোর তরফে জানানো হয়েছে, এই এক বছরে চন্দ্রযান থেকে যে পরিমাণ ছবি তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে, তাতে চাঁদ সম্পর্কে গবেষণার এক নতুন দিক খুলে গিয়েছে। তাই আগামী সাত বছরে চন্দ্রযানের মাধ্যমে আরও অনেক তথ্য জানা যাবে বলেই দাবি করেছে ইসরো।
চন্দ্রযান ২-কে ভারতের মহাকাশ গবেষণার ইতিহাসে বড় সাফল্য হিসেবেই দেখছে ইসরো। এই তথ্যের উপর ভিত্তি করে আগামী দিনে আরও সাফল্যের সঙ্গে চাঁদে নামার পরিকল্পনা করা যাবে বলেই জানিয়েছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।
এদিকে করোনা আবহে দেশের বেহাল আর্থিক পরিস্থিতির কারণে বেসরকারিকরণের দিকে ঝুঁকছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই তালিকায় রেল, কয়লা খাদানের পাশাপাশি উঠে এসেছিল মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর নামও।
তবে এই নিয়ে যাবতীয় দ্বন্দ্ব এবার দূর করে দিলেন ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান কে. শিবন। তিনি স্পষ্ট জানান, ইসরোর বেসরকারিকরণ করা হচ্ছে না। উনি বলেন, "ইসরোকে কে নিয়ে দেশে অনেক বিভ্রান্তিমূলক খবর ছড়ানো হচ্ছে। আমি পরিস্কার জানিয়ে দিতে চাই যে, ইসরোর বেসরকারিকরণ হয় নি।"
তবে গোটা ব্যবস্থায় বেসরকারি সংস্থাকে অংশীদারিত্বে সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে বলে জানান শিবন। আর এই কাজ মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর মাধ্যমেই করা হচ্ছে। উনি এও বলেন, সরকার দ্বারা স্পেস সেক্টরে করা সংশোধন ভবিষ্যতে গেম চেঞ্জার প্রমাণ হবে।