ভারতরে মধু-চক্রেও জড়িয়ে রয়েছে চিনের হাত, তদন্তে নেমে চোখ কপালে উঠেছে আধিকারিকদের
এবার জাল মধু-চক্রেও জড়িয়ে পড়ল চিনের নাম। পরিবেশ পর্যক্ষেণ কেন্দ্র সিএসইর একটি সমীক্ষায় ধরা পড়েছে দেশের ১৩টি শীর্ষস্থানীয় মধু বিক্রেতা সংস্থার মধুতে রয়েছে ভেজাল। তালিকায় নাম রয়েছে ডাবর থেকে শুরু করে বৈদ্যনাথ , পতঞ্জলির মত সংস্থার। আর এই সংস্থাগুলি চিন থেকে আমদানি করা জাল চিনের সিরাপ মধুতে মেশাচ্ছিল বলেও দাবি করা হয়েছে। একটি জাল মধু তৈরির কারখানারও সন্ধান পাওয়া গেছে।
| Published : Dec 04 2020, 12:20 AM IST
- FB
- TW
- Linkdin
ডাবর, পতঞ্জলি, জান্দু, বৈদ্যনাথ কেউই পাশ করতে পালনা পরিবেশ পর্যবেক্ষণ সংস্থা সিএসই পরীক্ষা। এই সংস্থাগুলি ছাড়াও ১৩টি শীর্ষ স্থানীয় সংস্থার মধুতে ভেজাল রয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে সাফোলা, মার্কফেড সোহনা, নেচারস নেট্রা। সিএসই তদন্তে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ভারতে বিক্রি হওয়া প্যাকেটজাত মধুর অধিকাংশই জাল। আর এই বেজাল চক্রে জড়িয়ে রয়েছে চিনের হাত।
সিএসই জানিয়েছে মধুতে ভেজালের জন্য ব্যবহার করা হয় চিনির সিরাপ, ভাতের সিরাপ, গোল্ডেন সিরাপ। কিন্তু দেশের মধুতে জাল হিসেবে ব্যবহার করা হয় চিনির সিপার। আর সেগুলি অধিকাংশ আমদানি করা হয় চিন থেকে। যদিও গতবছরই ফুড সেপটি অ্যান্ড স্ট্যার্ন্ডাড অর্থারিটি অব ইন্ডিয়া এই বিষয়ে প্রত্যেকটি রাজ্যকে সচেতন করেছিল। কিন্তু দেখা যাচ্ছে তারপরেও পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হয়নি। এফএসএশএআই দাবি করছে যে চিনের অধিকাংশ সংস্থাই ভারতে রফতামি করা চিনির সিরাপটিকে ফ্রুটোজ হিসেবে দেখাচ্ছে। ফলে মিশানোর জন্য চিনির সিপার এই নামেই পরিচিত। খাদ্য নিয়ন্ত্রণ সংস্থা এই বিষয় কতটা জানে সেসম্পর্কে এখনও স্পষ্ট কোনও ধারনা নেই।
সিএসই দাবি করছে আলিবারের মত চিনা বাণিজ্য পোর্টালগুলির মাধ্যমে এই ফ্রুটোজ সিরাপ পরীক্ষা পদ্ধতি এড়িয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। পাশাপাশি চিনা সংস্থাগুলি ফ্রুটোজ সিরাপের বিজ্ঞাপণে বলেছে এটি সি ৩ বা সি৪ পরীক্ষায় পাশ করেতে পারে।
এগুলি ভারতে রফতানি করা হয় বলেও জানান হয়েছে। এই সিরাপের গুণমান পরীক্ষার জন্য চিনা সংস্থাগুলিকে ইমেল পাঠান হয়েছিল তার উত্তরে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলি জানিয়ে তাদের পরীক্ষা দিতে কোনও সমস্যা নেই। পাশাপাশি চিনা সংস্থাগুলি জানিয়েছে ৫০-৮০ শতাংশ সিরাপ মধুতে মেশালে তা ভেজাল হিসেবে গ্রাহ্য করা হয় না।
সিএসই তদন্তে নেমে উত্তরাখণ্ডে একটি জাল সিরাপ তৈরির কারখানার সন্ধান পেয়েছে। সেখান থেকেও নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
অবাক করে দেওয়ার মত বিষয় হল ২৫-৫০ শতাংশ চিনির সিরাপের সঙ্গে ভেজাল নমুনাগুলি বিশুদ্ধতার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিল। এর পরই এফএসএসএআই কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে চিন থেকে চিনির সিরাপ আমদানি বন্ধ করতে ও পাবলিক টেস্টিংএর মাধ্যমে ভয়ারতে প্রয়োগকরণ জোরদার করার আবেদন জানিয়েছেন। ভেজালের হাত থেকে দূরে থাকতে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে নমুনা পরীক্ষা করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
সিএসই পক্ষ থেকে বলা হয়েছে সি ৩ ও সি৪ পরীক্ষায় সুগার মিশ্রিত মধু পাশ করে গেলেও ট্রেস মার্কারে ধরা পড়ে যাচ্ছে। তবে পরীক্ষায় ভেজাল ধরা গেলেও ভেজালের পরিমাণ নির্ণয় করা সম্ভব নয়।