১১৪ টি অ্যাডভান্সড মাল্টিরোল যুদ্ধবিমানের সন্ধানে ভারত, 'এরো ইন্ডিয়া শো'-তে মিলবে কি দিশা
First Published Feb 2, 2021, 12:09 PM IST
২০২০ সালের পর ভারতকে ভাবতে হচ্ছে দ্বিমুখী যুদ্ধের কথা। যুদ্ধবিমানের ঘাটতিতে ভুগছে ভারত। এরই মধ্যে বেঙ্গালুরুতে শুরু হচ্ছে এরো ইন্ডিয়া শো। নিজেদের সামরিক সরঞ্জামের প্রদর্শন করবে বিশ্বের তাবড় প্রতিরক্ষা সংস্থা।

এক বছরে বদলে গিয়েছে চিত্র
২০২০ সালের আগে পর্যন্ত ভারতের যুদ্ধের আশঙ্কা ছিল সীমান্তের এক দিক থেকে। কিন্তু, গত বছর পূর্ব লাদাখে চিনা আগ্রাসন চিত্রটাই পাল্টে দিয়েছে। ভারতকে এখন ভাবতে হচ্ছে, চিন ও পাকিস্তান- এই দ্বি-মুখী যুদ্ধের কথা। এমন পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য কমপক্ষে ৪২ টি যুদ্ধবিমানের স্কোয়াড্রন দরকার। কিন্তু, বর্তমানে এই স্কোয়াড্রনের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ২৮ থেকে ৩০টিতে। প্রতিটি স্কোয়াড্রনে ১৬ থেকে ১৮টি যুদ্ধবিমান থাকে।

যুদ্ধবিমানের ব্যাপক ঘাটতি
পূর্ব লাদাখে চিনের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান সীমান্ত উত্তেজনার মধ্যে ভারত জরুরি ভিত্তিতে ৩৩টি যুদ্ধবিমান কিনেছিল। এর মধ্যে রয়েছে ২১টি মিগ-৯৯। এছাড়া ১৮,১৪৮ কোটি টাকা ব্যয়ে, ১২টি সুখোই এবং ৫৯টি মিগ-২৯ বিমান আপগ্রেড করা হয়েছে। দু'সপ্তাহ আগে প্রতিরক্ষা বিষয়ক ক্যাবিনেট কমিটি হিন্দুস্তান অ্যারোনটিকস লিমিটেড থেকে ৮৩টি তেজস হালকা যুদ্ধবিমান ক্রয়ের বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছে। কিন্তু, তারপরও যুদ্ধবিমানের ঘাটতি থেকে যাবে। কারণ ২০৩২ সালের মধ্যে, পর্যায়ক্রমে বসিয়ে দিতে হবে মিগ-২১ বিমানগুলিকে। ফলে আইএএফের স্কোয়াড্রনের সংখ্য়া দাঁড়াবে মাত্র ২২-এ।

ভারতের পরিকল্পনা
এই ঘাটতি মেটাতে ভারতীয় বায়ুসেনা ১১৪ টি উন্নতমানের মাল্টি-রোল এয়ারক্র্যাফ্ট সংগ্রহ করার পরিকল্পনা করেছে। একে বিশ্বের বৃহত্তম সামরিক চুক্তি হিসাবে মনে করা হচ্ছে। এই চুক্তির মূল্য ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি বলে অনুমান। এর মধ্যে ফ্রান্সে তৈরি ৩৬টি রাফাল জেট রয়েছে। ২০২২ সালের মধ্যেই যার সবগুলি আইএএফ-এর হাতে চলে আসবে। তার পাশাপাশি এখনও পর্যন্ত, তিনটি ভাগে আইএএফ আরও ১১টি জেট বিমান পেয়েছে।

নতুন খেলোয়াড়
২০১৮ সালে, আইএএফ প্রথম বিদেশি বিক্রেতাদের কাছে যুদ্ধবিমান ক্রয়ের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল। তারপর থেকে মার্কিন এফ-১৫ এবং এফ-২১, ফরাসি রাফাল, সুইডেনের গ্রিপেন এবং রাশিয়ান সুখোই-৩৫ - ভারতীয় বায়ুসেনার সঙ্গে চুক্তি পাকা করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। সম্প্রতি, মার্কিন প্রশাসন বোয়িং সংস্থাকে এফ-২৫ইএক্স যুদ্ধবিমান-কে বিপণনের লাইসেন্স দিয়েছে। কাজেই তারাও আইএএফ-র সঙ্গে চুক্তির জন্য ঝাঁপাতে পারে।

দিশা দেখাবে এরো ইন্ডিয়া
৩ ফেব্রুয়ারি থেকে বেঙ্গালুরুতে শুরু হচ্ছে 'এরো ইন্ডিয়া শো'। সেখানে বেশ কয়েকটি প্রতিরক্ষা সংস্থা তাদের পণ্য, অস্ত্র এবং সরঞ্জামাদি প্রদর্শন করবে। সেখানে অন্যান্য সংস্থাগুলির সঙ্গে ভারতীয় বিমানবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধবিমানের বিষয়ে চুক্তি পাকা করার জন্য বোয়িং সংস্থাও এফ-১৫ ইএক্স নিয়ে ঝাঁপাবে বলে মনে করা হচ্ছে। গত বছর, এই প্রদর্শনীতে এই বরাত পাওয়ার জন্য ভারতেই এফ -১৬ জেট বিমান উত্পাদনের প্রস্তাব দিয়েছিল মার্কিন বিমান প্রস্তুতকারী সংস্থা লকহিড মার্টিন।

দেশি না বিদেশি
তবে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে, চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াত বলেছিলেন, প্রতিরক্ষা বাহিনী বিদেশি যুদ্ধবিমানের বদলে তেজস-এর মতো দেশি যুদ্ধবিমানই ব্যবহার করার দিকে ঝুঁকছে। এর জন্য আদেশ-ও বদল করার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তিনি। তবে, ভারত ও ফ্রান্সের বায়ুসেনার 'ডেজার্ট নাইট-২১' অনুশীলন চলাকালীন আইএএফ প্রধান এসিএম আরকেএস ভাদৌরিয়া অবশ্য এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন ১১৪টি যুদ্ধবিমান কেনার পরিকল্পনায়, অন্যতম সেরা প্রতিযোগী রাফাল।
Today's Poll
অভিভাবক হিসাবে আপনার সন্তানের জন্য অনলাইনে কোন ক্লাসের এডুকেশনাল কনটেন্ট পেতে চান ?