- Home
- India News
- চিনকে শায়েস্তা করতে লেজার অস্ত্রে সাজছে ভারতীয় সেনা, এবার আকাশে দেখা যাবে ‘স্টার ওয়ার্স’-এর ঝলকানি
চিনকে শায়েস্তা করতে লেজার অস্ত্রে সাজছে ভারতীয় সেনা, এবার আকাশে দেখা যাবে ‘স্টার ওয়ার্স’-এর ঝলকানি
- FB
- TW
- Linkdin
হলিউডের ‘স্টার ওয়ার্স’ সিরিজের ছবিগুলি জনপ্রিয় তাদের লেজার গান, মারাত্মক রশ্মি তলোয়ার ও হাই-টেক মহাকাশযানের জন্য। সিনেমার পর্দায় ফুটে ওঠা এই মারণাস্ত্রগুলি যেন ভবিষ্যতের যুদ্ধের ছবি তুলে ধরে। এই কাল্পনিক ওই বাহিনী ও হাতিয়ারগুলির থেকেই অনুপ্রেরণা নিয়ে এবার উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন লেজার ও মাইক্রোওয়েব হাতিয়ার তৈরি করার পরিকল্পনা নিয়েছে দেশের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা ডিআরডিও।
হাই এনার্জি বা পাওয়ারের এমন অস্ত্রকে বলে ‘ডাইরেক্ট এনার্জি ওয়েপনস’। এইসব অস্ত্রকে চালনা করতে প্রচণ্ড শক্তির দরকার হয়। উচ্চ গতির লেজার অস্ত্র, হাই-পাওয়ার মাইক্রোওয়েভ এইধরনের এনার্জি ওয়েপনস।
শত্রুপক্ষের মিসাইল যদি হানা দেয় তাহলে মাঝপথেই তাকে ধ্বংস করে দেওয়ার মতো ক্ষমতা রাখে এই অস্ত্র। আকাশসীমায় যদি উড়ে আসে শত্রু সেনার সশস্ত্র ড্রোন তাহলে গোপনেই লেজার রশ্মি ছড়িয়ে তার দফারফা করে দিতে পারে নতুন প্রজন্মের যুদ্ধাস্ত্র। যে কোনও মারণাস্ত্রকে রুখে দিতে পারে অবলীলায়।
আমেরিকা, রাশিয়া, চিনও এই ধরনের মারণাস্ত্র তৈরি করছে। ইরান ও তুরস্কের সেনাবাহিনীতে ইতিমধ্যেই এমন উচ্চ শক্তির অস্ত্র রয়েছে।
করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে ভুগছে গোটা বিশ্ব। মার্কিন মুলুকেও ভয়ঙ্কর অবস্থ। সেখানে ক্রমশ বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। সে দেশে মহামারীর চেহারা নিয়েছে করোনা। করোনা আতঙ্কে যখন ভুগছে দেশের মানুষ সেই সময় অত্যাধুনিক লেজার অস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালাল আমেরিকা।
চলতি বছরেই মার্কিন নেভির একটি যুদ্ধ জাহাজ ‘ইউএসএস পোর্টল্যান্ড’ থেকে অত্যাধুনিক এই অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে আমেরিকা। সেই পরীক্ষার একটি প্রকাশ করেছে মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর। যেখানে দেখা যাচ্ছে, একটি ড্রোনকে টার্গেট করে ছোঁড়া হচ্ছে ভয়ঙ্কর লেজার রশ্মি। আর তা ছোঁড়ার মুহূর্তের মধ্যে ধ্বংস। যদিও ২০১৭ সালে পারস্য উপসাগরে মার্কিন জাহাজ ইউএসএস পোনস থেকে ৩০ কিলোওয়াট শক্তির লেজার অস্ত্র পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু এটি আরও অত্যাধুনিক বলে দাবি করা হয়েছে।
আমেরিকার কাছে ৩৩ কিলোওয়াট শক্তির লেজ়ার অস্ত্র আছে। যুদ্ধজাহাজ থেকে এই লেজ়ার রশ্মির হামলা চালাতে পারে বিপক্ষের যুদ্ধজাহাজ বা আকাশপথের ফাইটার জেটের উপরে। এখন ৩০০ থেকে ৫০০ কিলোওয়াট শক্তির ডাইরেক্ট এনার্জি ওয়েপন বানানোর পরিকল্পনা রয়েছে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের।
এবার এমনি উচ্চ শক্তি সম্পন্ন অস্ত্রশস্ত্রই বানাচ্ছে ভারতের ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গাইনেজশন। ডিআরডিও জানিয়েছে, ভারতে যেভাবে সীমান্ত সংঘাত বাড়ছে তাতে প্রতিরক্ষা আরও কয়েকগুণ শক্তিশালী করা দরকার।
একদিকে পাক সীমান্তে সন্ত্রাস, অন্যদিকে চিনের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যা বেড়েই চলেছে। কেউ কাউকে জমি ছাড়তে নারাজ। চিন ও ভারত দুই দেশের কাছেই পারমাণবিক অস্ত্র আছে। তাই যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হলে কেউ ছেড়ে কথা বলবে না। বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তাই লেজার ও উচ্চ শক্তির মারণাস্ত্র বেশি দরকার ভারতীয় বাহিনীর। গোপনে হানা দেবে, যে কোনও ধরনের মিসাইল ধ্বংস করতে পারবে এই জাতীয় অস্ত্র।
এই হাতিয়ারগুলি থেকে শত্রুপক্ষের মিসাইল, ট্যাঙ্ক বা যে কোনও হাতিয়ারে লেজারের মতো তীব্র রশ্মি ফেলে ধ্বংস করে দেওয়া সম্ভব। এছাড়া, উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন মাইক্রোওয়েব বিস্ফোরণ ঘটিয়ে শত্রুপক্ষের অত্যাধুনিক কম্পিউটার সিস্টেম খতম করে দেওয়া সম্ভব। এর ফলে যুদ্ধবিমান থেকে রাডার সিস্টেম সবই অকেজো হয়ে যাবে। এই হাতিয়ারগুলিতে বারুদ বা গোলা ব্যবহার না হওয়ায় অতিরিক্ত বোঝা বহন করার প্রয়োজন পড়ে না। এবং ধামাকা না হওয়ায় অত্যন্ত গোপনভাবে হামলা চালানো সম্ভব।
জানা গিয়েছে, মেই ইন ইন্ডিয়া প্রজেক্টে দেশীয় অস্ত্র নির্মাণকারী সংস্থাগুলির সঙ্গে মিলিতভাবে ১০০ কিলোওয়াট ক্ষমতার ‘ডাইরেক্ট এনার্জি ওয়েপনস’ হাতিয়ার তৈরি করার পরিকল্পনা করছে ডিআরডিও। সূত্রের খবর, ‘কালি’ নামের এক রহস্যময় লেজার গান ইতিমধ্যে তৈরি করছে ভারতীয় সেনা।
এছাড়াও একাধিক গোপন হাতিয়ার নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে। তবে সেগুলিকে যুদ্ধক্ষেত্রে কার্যকর করতে এখনও সময়ের প্রয়োজন।
আগামী ১০ বছরের মধ্যে বায়ুসেনার জন্য ১০টি লেজার সিস্টেম তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে ডিআরডিওর। ক্ষুদ্র ড্রোন ও বিমান ধ্বংস করতে এগুলিকে ব্যবহার করা হবে। প্রথম অবস্থায় এই হাতিয়ার ৬ থেক ৮ কিলোমিটার পর্যন্ত আঘাত হানতে সক্ষম হবে। তারপর ধাপে ধাপে সেই ক্ষমতা বাড়িয়ে ১৫ কিলোমিটার পজ্ঞযন্ত করা হবে।
ভারতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে চিনের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে পাকিস্তান। সূত্রের খবর, জৈব অস্ত্রের সম্ভার বাড়াচ্ছে দুই দেশ। এমনকি পাকিস্তানকে জৈব অস্ত্র নির্মাণে বেশ কিছু মারাত্মক ভাইরাস দিয়েছে চিন। সেগুলি মধ্যে সবথেকে ঘাতক হচ্ছে অ্যানথ্রাক্স। এই পরিস্থিতিতে তাই ভারতীয় সেনাকে দ্রুত আধুনিক করে তোলার কাজ চলছে।
ডিআরডিও-র বিশেষজ্ঞরা বলেছেন ইতিমধ্যে দু’রকমের অ্যান্টি-ড্রোন ডাইরেক্ট এনার্জি ওয়েপন তৈরি করা হয়েছে। একটি ট্রেলার-মাউন্টেড। ১০ কিলোওয়াট লেজ়ার রশ্মি ছুড়ে ২ কিলোমিটার পাল্লার মধ্যে যে কোনও এরিয়াল টার্গেটকে নষ্ট করে দিতে পারে। অন্যটা, কমপ্যাক্ট ট্রাইপড-মাউন্টেড। ২ কিলোওয়াট লেজ়ার বিম দিয়ে ১ কিলোমিটার পাল্লায় যে কোনও অস্ত্র হামলা রুখে দিতে পারে।