- Home
- India News
- করোনা ভ্যাকসিন সংগ্রহের প্রতিযোগিতায় দারুণ দৌড়চ্ছে ভারত, ইউরোপকে পিছনে ফেলে সোজা দ্বিতীয়স্থানে
করোনা ভ্যাকসিন সংগ্রহের প্রতিযোগিতায় দারুণ দৌড়চ্ছে ভারত, ইউরোপকে পিছনে ফেলে সোজা দ্বিতীয়স্থানে
- FB
- TW
- Linkdin
তারা জানিয়েছে গোটা বিশ্বের মিলিতভাবে ভ্যাকসিন তৈরির যে সক্ষমতা রয়েছে, তাতে সমগ্র বিশ্ববাসীকে কোভিড টিকা দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত পরিমাণে ভ্যাকসিন তৈরি করতে তে সম্ভবত তিন থেকে চার বছর সময় লাগবে। তবে দেখা যাচ্ছে উচ্চ-আয়ের দেশ এবং ভারতের মতো কিছু কিছু মধ্য-আয়ের দেশগুলি একটিও ভ্যাকসিন তৈরি হওয়ার আগেই ইতিমধ্যে প্রায় ৩.৮ বিলিয়ন বা ৩৮০ কোটি ভ্যাকসিন ডোজ কিনে ফেলেছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রাক-চুক্তির ফলে তাদের ডোজ পাওয়া একেবারে নিশ্চিত। বাকি ডোজগুলির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির সঙ্গে আলোচনা চলছে, কয়েকদিনের মধ্যেই নিশ্চিত হয়ে যাবে। ধনী দেশগুলি কাজে লাগাচ্ছে তাদের অর্থনীতিকে, আর ভারতের মতো মধ্য আয়ে কিছু দেশের রয়েছে ভ্যাকসিন উৎপাদনের সুবিধা, পেরুর মতো কোনও কোনও দেশ আবহার ক্লিনিকাল ট্রায়ালে অংশ নিয়ে ভ্যাকসিন পাওয়া নিশ্চিত করছে।
দেখা যাচ্ছে এখনও অবধি দেশবাসীর জন্য সবচেয়ে বেশি ভ্যাকসিন সংগ্রহ নিশ্চিত করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্বের মোট উৎপাদনযোগ্য ভ্যাকসিনের প্রায় এক চতুর্থাংশই সংগ্রহ করছে তারা। তারপরেই রয়েছে ভারত, তারপর ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। মোট ভ্যাকসিন ডোজের ক্রয়ের সংখ্যায় পিছিয়ে থাকলেও জনসংখ্যার শতকরা হিসাবে (অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার কত শতাংশক টিকা দেওয়া যাবে) ভ্যাকসিন সংগ্রহে সবার আগে রয়েছে কানাডা। 'ডিউক গ্লোবাল হেলথ ইনোভেশন সেন্টার'-এর হিসাব বলছে এর মধ্যেই উত্তর আমেরিকার এই দেশ তাদের জনসংখ্যার ৫৭৭ শতাংশকে দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত পরিমাণ ভ্যাকসিন কিনেছে। এই বিষয়ে তারপরেই রয়েছে যুক্তরাজ্য বা ব্রিটেন (জনসংখ্যার ২৭৭ শতাংশ) আর তৃতীয় স্থানে আমেরিকা (জনসংখ্যার ২৩০ শতাংশ)।
এই যে দেশগুলির মধ্যে সবার আগে টিকা সংগ্রহের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে, একে বলা হচ্ছে "ভ্যাকসিন ন্যাশনালিজম' বা 'ভ্যাকসিন জাতীয়তাবাদ'। কিন্তু, এর চরম কুপ্রভাব পড়তে চলেছে কোভিড বিশ্বে বলে সতর্ক করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে পরিস্থিতি এমন হয়েছে, যে কিছু কিছু দেশ তাদের সমগ্র জনগোষ্ঠীকে একবার কেন বেশ কয়েকবার করে টিকা দিতে পারবে, আর সাব-সাহারান আফ্রিকার দেশগুলির মতো গরীব দেশগুলির হাতে ২০২৪ সালের আগে পর্যন্ত কোভিডের বিরুদ্ধে কোনও সুরক্ষা থাকবে না। ফলে বিশ্বের এক অংশে কোভিড মহামারি চলতেই থাকবে।
এই অবস্থা প্রতিরোধ করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে 'কোভ্যাক্স' নামে একটি টিকাকরণ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় বিশ্বের বেশ কয়েকটি ধনী-দরিদ্র দেশ প্রত্যেক সদস্য দেশের জনসংখ্যার অন্তত ২০ শতাংশের ভ্যাকসিন পাওয়া নিশ্চিত করার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় এখনও পর্যন্ত মাত্র ২৫ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার মতো ডোজ সংগ্রহ করা হয়েছে। একবার করে টিকা দিতে গেলেও প্রয়োজন কমপক্ষে ১১৪ কোটি ডোজ। আর অধিকাংশ টিকার দুটি ডোজ দিতে হয় বলে আসলে লাগবে এর দ্বিগুণ পরিমাণ ডোজ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই প্রকল্পে সাক্ষর করেনি। কিন্তু যুক্তরাজ্য, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, ভারত, কানাডার মতো দেশ এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু, কার্যক্ষেত্রে এই প্রকল্পের বাইরেও এই দেশগুলি আলাদা করে বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে প্রাক-চুক্তি করছে, যাতে এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে সরাসরি মন্তব্ না করা হলেও মন্ত্রকের এক পদস্থ কর্তা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইতিমধ্যেই বলে দিয়েছেন ভারত কোভিড -১৯ এর বিরুদ্ধে বিশ্বকে রক্ষার জন্য ভ্যাকসিন সরবরাহের ক্ষেত্রে সবরকম সহায়তা করবে। কিন্তু, তার পাশাপাশি সরকার তো দেশের নাগরিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা দিতেও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নিজের নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করাটাও উচিত নয় কি? তাই ভ্যাকসিনগুলি যখন উপলব্ধ হবে তখন তা পর্যাপ্ত পরিমাণে সংগ্রহ নিশ্চিত করতে ভারত সরকার সমস্ত রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।