২০০ বছরের ইংরেজ শাসনের থেকে মুক্তি, স্বাধীনতা দিবসে ফিরে দেখা সেই রক্তক্ষয়ি ইতিহাস
১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা লাভ করেছিল আমাদের দেশ। ২০০ বছর ইংরেজ শাসনের অধীনে থাকার পর ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তির স্বাদ পেয়েছিল এদেশের মানুষ। শনিবার দেশজু়ড়ে পালিত হবে ৭৪তম স্বাধীনতা দিবস।করোনা অতিমারীর কারণে এই বছর স্বাধীনতা দিবস উদযাপনেও কোথাও জমায়েত করা যাবে না। এমনকি কাটছাঁট করা হয়েছে দিল্লির লালকেল্লায় স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানেও। চলুন এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক বহু শহিদের রঙে রাঙানো সেই স্বাধীনতার ইতিহাস।
- FB
- TW
- Linkdin
২০০ বছর ইংরেজ শাসনের অধীনে থাকার পর ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা লাভ করে ভারত। ওইদিন ভারতীয়দের হাতেই দেশের শাসনভার তুলে দেন তত্কালীন ভাইসরয় লর্ড মাউন্টব্যাটেন।
১৭৫৭ সালে পলাশির যুদ্ধে জয়লাভ থেকেই ভারতে ইংরেজ শাসনের শুরু বলে ধরা হয়।
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নেতৃত্বে অহিংস, অসহযোগ ও আইন অমান্য আন্দোলন এবং বিভিন্ন চরমপন্থী গুপ্ত রাজনৈতিক সমিতির সহিংস আন্দোলনের পথে পরিচালিত এক দীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামের পর ভারত স্বাধীনতা অর্জন করেছিল।
তবে স্বাধীনতার জন্য অনেক বড় মূল্য চোকাতে হয়েছিল এদেশের মানুষকে। স্বাধীনতার ঠিক পূর্ব-মুহূর্তে ব্রিটিশ ভারতীয় সাম্রাজ্য ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজিত হয় এবং তার ফলে ভারত ও পাকিস্তান আলাদা রাষ্ট্রের জন্ম ঘটে।
ব্রিটিশ সরকারের ডিভাইড অ্যান্ড রুল পলিসির জেরে দেশভাগের পাশাপাশি দেখা দেয় প্রাণঘাতী সংঘর্ষ। মৃত্যু হয় হাজার হাজার মানুষের। দেশভাগের ফলে উদ্বাস্তুতে পরিণত হন অন্তত ১৫০ লক্ষ মানুষ।
তবে শেষপর্যন্ত ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট জওহরলাল নেহেরু ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ গ্রহণের পর দিল্লির লাল কেল্লার লাহোরি গেটের উপর ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। সেই থেকেই প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী লাল কেল্লায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন এবং জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন।
জাতীয় পতাকা উত্তোলন, কুচকাওয়াজ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সারা দেশে স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয়।
১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট দেশ আনুষ্ঠানিক ভাবে স্বাধীন হয়েছিল। কিন্তু তার আগে একই বছর ১8 জুলাই অনানুষ্ঠানিক ভাবে ভারত স্বাধীনতা লাভ করেছিল।
মাউন্টব্যাটেন ১৫ আগস্টকে ভারতের স্বাধীনতা দিবস হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন। কারণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই দিনই জাপান মিত্রশক্তির কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল। তারই স্মৃতিতে এই দিনকে বেছে নিয়েছিলেন তিনি।
স্বাধীনতার আগে ভারতে ৫৫০ জন রাজার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্য ছিল। সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল তাঁদের একত্রিত হতে অনুরোধ করেছিলেন। তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন। তাঁরা ভারতের সঙ্গে যুক্ত হতে রাজি হয়েছিলেন এবং অবশেষে যুক্তও হয়েছিলেন।
স্বাধীনতা লাভের পর মহাত্মা গান্ধী জাতীয় কংগ্রেসকে ভেঙে দিতে চেয়েছিলেন। তিনি তাঁর মৃত্যুর এক দিন আগে লেখা একটি খসড়ায় বলেছিলেন, জাতীয় কংগ্রেস তার লক্ষ্য পূরণ করেছে। এটির প্রয়োজন ফুরিয়েছে।
দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু – এটি আমরা সবাই জানি। কিন্তু তিনিই সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে জিতে প্রধানমন্ত্রী হননি। সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে জিতেছিলেন সর্দার বল্লভভাই পটেল। কিন্তু মহাত্মা গান্ধীর প্রিয় পাত্র ছিলেন নেহরু। গান্ধীজি সর্দার বল্লভভাই পটেলকে পদত্যাগ করতে অনুরোধ করেছিলেন।