ভ্যাকসিন এলেই প্রথমে ৫০ লক্ষ ডোজ কিনবে কেন্দ্র, রোডম্যাপ প্রস্তুত করে ফেলল মোদী সরকার
- FB
- TW
- Linkdin
প্রতিদিনই রেকর্ড গড়ে বেড়ে চলেছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। ইতিমধ্যে ভারতে মোট সংক্রমণ ২৯ লক্ষ ছাড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ভ্যাকসিন ছাড়া উপায় নেই। তাই চাতক পাখির মত ভ্যাকসিনের অপেক্ষায় রয়েছেন সকলেই।
করোনার বিরুদ্ধে একেবারে সামনের সারিতে থেকে লড়াই চালাচ্ছেন চিকিৎসক, নার্স, অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ ও নিরাপত্তাবাহিনীর জওয়ানরা। জীবনের ঝুঁকি নিয়েও কর্তব্যে পালনে অবিচল তাঁরা। করোনার বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে গিয়ে অনেকসময় তাঁরাও সংক্রমিত হয়ে পড়ছেন।
ইতিমধ্যেই দেশে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে বহু স্বাস্থ্যকর্মী ও পুলিশকর্মীর। নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ানদেরও অনেকে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। বেশ কয়েকজন জওয়ান মারাও গিয়েছেন।
নিজেদের জীবনের ঝুঁকির কথা জেনেও করোনার বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছেন যাঁরা, এবার তাঁদের সুরক্ষার কথাই আগেভাগে ভেবে রাখতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার।করোনার ভ্যাকসিন বাজারে এলে প্রথম দফায় অন্তত ৫০ লক্ষ ডোজ ক্রয়ের পরিকল্পনা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার৷
মূলত চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ, নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ানদের মতো যাঁরা সামনের সারিতে থেকে করোনার বিরুদ্ধে লড়ছেন, তাঁদের জন্যই এই ভ্যাকসিন কেনা হবে৷
ভ্যাকসিন বাজারে আসার পরই দ্রুত তা কীভাবে বড় অংশের জনসংখ্যার কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়, তা নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই রূপরেখা তৈরি করছে কেন্দ্র৷ যাঁদের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা সবথেকে বেশি, প্রতিষেধক দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁদেরকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে৷
ভ্যাকসিন বাজারে বেরোলে কীভাবে তা সংগ্রহ করে সাপ্লাই চেনের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে বিলি করা হবে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা চলছে সরকারের অন্দরমহলে।
সরকারি সূত্রের খবর, স্থানীয় ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলি সরকারের কাছ থেকে নিশ্চিত মার্কেটের প্রাথমিক এস্টিমেট চেয়েছে, এক দফায় ঠিক কতগুলি শট তারা প্রস্তুত রাখবে ২০২০ সালের শেষে অথবা ২০২১ সালের শুরুর মধ্যে। সংস্থাগুলিকে কেন্দ্রের তরফে আশ্বস্ত করা হয়েছে ভ্যাকসিন ডোজের বিপুল চাহিদা থাকবে।
সোমবার ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির সঙ্গে বিশেষ বৈঠকে বসেছিল দেশের কোভিড এক্সপার্ট গ্রুপ। এই বৈঠকের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন নীতি আয়োগের সদস্য ভি কে পল এবং স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণ। সংস্থাগুলিকে বলা হয়েছে তাদের প্রোডাকশন ক্ষমতা, ভ্যাকসিন ডোজের দাম এবং সরকার কীভাবে তাদের সাহায্য করতে পারে, তার বিস্তারিত প্রোপোজাল জমা দিতে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারি আধিকারিকের মতে, এক্সপার্ট কমিটি বেশ কিছু অপশন খতিয়ে দেখছে। ভেবে দেখা হচ্ছে ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলিকে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথাও। তবে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আরও বেশ কিছু বৈঠক হবে।
চলতি বছরের শেষ দিক বা আগামী বছরের শুরুতেই কয়েক সপ্তাহের ফারাকে একাধিক ভ্যাকসিন বাজারে আসার কথা৷ এই মুহূর্তে দেশে করোনা ভাইরাসের তিনটি ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে৷
ভারতে তৈরি দুটি কোভিড ভ্যাকসিন, আইসিএমআর-এর সঙ্গে ভারত বায়োটেকের যৌথ ভাবে তৈরি কোভ্যাক্সিন এবং জাইডাস ক্যাডিলার তৈরি জাইকভ-ডি উভয়েই ট্রায়ালের প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে রয়েছে।
অক্সফোর্ডের করোনা ভ্যাকসিন অ্যাসট্রাজেনেকার দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের হিউম্যান ট্রায়াল ভারতে ইতোমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে সেরাম ইনস্টিটিউট। দেশের ১৭টি জায়গা থেকে ১৮ বছরের বেশি বয়স এমন ১৬০০ জনকে বেছে নিয়ে তাঁদের ওপরে করোনা ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ চালানো হচ্ছে।
ব্রিটেনে সাড়া জাগানো ফল মেলার পর ভারত সরকারের নজর রয়েছে অক্সফোর্ডের প্রতিষেধকের উপর। তবে পিছিয়ে নেই দেশের দুই প্রতিষেধকও।
এদিকে রাশিয়াও তাদের প্রথম করোনা ভ্যাকসি স্পুটনিক ভি তৈরির জন্য ভারতের সঙ্গে পার্টনারশিপে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। ভারতকে নিজেদের ‘প্রোডাকশন পার্টনার’হিসেবে চাইছে মস্কো।