ড্রাগনদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেই হিমাচলের আকাশ রাফালের টহল, রাতের অন্ধকারে চলছে মহড়া
ক্রমশই উত্তেজনা বাড়ছে পূর্ব লাদাখ সীমান্তে। তার তারজন্য়েই এখন থেকেই মহড়া শুরু করেছে ফ্রান্স থেকে সদ্যো আসা ৫টি রাফাল যুদ্ধ জাহাজ। রাতের অন্ধকারে হিমাচল প্রদেশের দুর্গম পার্বত্য এলাকায় মহড় দিচ্ছে পাঁচটি রাফাল। খতিয়ে দেখা হচ্ছে এয়ার টু এয়ার মিসাইল লঞ্চের সমস্ত প্রক্রিয়া। হিমাচল প্রদেশেও চিনের সঙ্গে সীমান্ত ভাগ করে নেয়। তাই কিছুটা হলেও মহড়ার সময় সাবধানতা অবলম্বন করা হচ্ছে। চিনা সেনা যাতে রাফালের রেডারের ফ্রিকোয়েন্সি সনাক্ত করতে না পারে সেই দিকেই বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে দৌলত বেগ ওল্ডি থেকে আকসাই চিন পর্যন্ত এলাকায় চিনের পিপিলস লিবারেশন আর্মির ওপর নজর রাখছে চিনুক হেলিকপ্টার। রাতের অন্ধকারেও চলছে চিনা সেনার ওপর নজর রাখার কাজ।
- FB
- TW
- Linkdin
রাতের হিমাচাল প্রদেশের আকাশে টহল দিচ্ছে পাঁচটি রাফাল যুদ্ধ বিমান। রাতের অন্ধকারে চলছে মহড়া। এয়ার টু এয়ার মিসাইল প্রক্ষেপণ করার বিষয়ে খতিয়ে দেখছন পাইলটরা। গোল্ডন অ্যারোস স্কোয়াড্রন সব দিক থেকেই তৈরি রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।
চিনের সঙ্গে লাদাখ ইস্যুতে উত্তাপ ক্রমশই বাড়ছে। তাই চিনের পিপিলস লিবারেশন আর্মির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার জন্যই প্রস্তুত রয়েছে ভারতীয় বায়ু সেনা। সেই প্রস্তুতির মহড়ই রাফালের উড়ান।
এক সরকারি কর্তা জানিয়েছেন রাফাল যুদ্ধ বিমান গুলি কিছুটা হলেও দূরত্ব বজায় রাখছে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ সীমা রেখার সঙ্গে। কারণ এলএসি-র খুব কাছে পৌঁছে গেলে চিনা সেনা রাফালের রেডারের ফ্রিকোয়েন্সি সনাক্ত করতে পারে। আর প্রয়োজনে রাফালের রেডার জ্যামও করে দিতে পারে।
চিনা সেনার হাত থেকে রাফাল যুদ্ধ বিমানকে নিরাপদে রাখার জন্যেও কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু কোনও ভাবেই মহড়ায় ইতি টানতে নারাজ ভারতীয় বিমান বাহিনীর সদস্যরা।
২৯ জুলাই ছিল ঐতিহাসিক দিন। যে দিন ফ্রান্স থেকে এসেছিল পাঁচটি রাফাল যুদ্ধ বিমান। সেনা সূত্রের খবর চিনের আগ্রাসন প্রতিহত করতে প্রথম আসা ১৮টি রাফাল যুদ্ধ বিমান রাখা হবে আম্বালা ক্যানটনমেন্টের। পরেরর ১৮টি রাখা হবে হাসিমারায়। ফ্রান্সের প্রতিরক্ষা সংস্থা ডাসল্ট অ্যাভিয়েশেনের সঙ্গে ৩৬টি রাফাল যুদ্ধ বিমান কেনার জন্য চুক্তিবদ্ধ ভারত।
অন্যদিকে লাদাখর সঙ্গে ১৫৯৭ কিলোমিটার বিস্তীর্ণ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ সীমা রেখা নিয়ে তিন মাস ধরে চলছে বিবাদ। এলএসির বেশ কয়েকটি বিতর্কিত এলাকা থেকে সেনা সরাতে অস্বীকার করেছে চিন। দোপসাং, প্যাংগং, আকসাই চিনসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করেছে লাল ফৌজ। আর সেই কারণেই সেইসব এলাকা থেকে পিছু হাঁটতে নারাজ ভারত।
লাদাখে সেপ্টেম্বর থেকে আবহাওয়া খারাপ হতে শুরু করে। বেশ কয়েকটি এলাকায় প্রায় ২০ ফুট পুরু বরফেও ঢেকে যায়। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে সীমান্ত রক্ষার জন্য ভারত শীত কালেই লাদাখে সেনা মোতায়েন রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
শীতকালে লাদাখের বিস্তীর্ণ পার্বত্য এলাকায় সীমান্ত পাহারা দেওয়ার জন্য ভারতীয় পদাতিক বাহিনীকে রীতিমত সাহায্য করবে বিমান বাহিনী। সেই কারণে এখন থেকেই তার প্রস্তুতি শুরু হয়েগেছে।
দৌলত বেগ ওল্ডি থেকে আকসাই চিন পর্যন্ত ভারতীয় ভূখণ্ড নজরদারী বাড়াতে ইতিম্যেই ব্যবহার করা হচ্ছে চিনুক হেলিকপ্টারকে। রাতের লাদাখেও চিনা সেনার গতিবিধি নজর রাখছে চিনুক।
গত জুন মাসে লাদাখে চিনা সেনার সঙ্গের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিল ভারতীয় সেনা বাহিনী। ওই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল ২০ ভারতীয় জওয়ানের। তবে এখনও পর্যন্ত চিন নিহত সেনা জওয়ানদের তালিকা প্রকাশ করেনি। সেই থেকে এখনও পর্যন্ত পূর্ব লাদাখের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে উত্তাপ বাড়ছে। সবথেকে খারাপ পরিস্থিতির জন্য ভারতীয় সেনা বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানান হয়েছে।