রাজনীতিতে নাকি আসতেই চাননি শচীন পাইলট, বাবার রাজেশের মৃত্যুই ঘুরিয়ে দিয়েছিল জীবনের ছক
গত কয়েকদিন ধরেই সংবাদ শিরোনামে শচীন পাইলট। একদা রাহুল গান্ধী ব্রিগেডের সদস্য এই তরুণ নেতাকে ঘিরে রাজনেতিক মহলে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছে। কংগ্রেস পরিবারের ছেলে হলেও এখন নিজের পুরনো দল থেকেই অনেকটা দূরে তিনি। কেউ বলছেন শচীন বিজেপির সঙ্গে যোগ রাকছেন। আবার শচীন ঘনিষ্ঠদের দাবি, নতুন পার্টি তৈরির দিতে এগোচ্ছেন তিনি। তবে শচীনের এই পদক্ষেপ বারবার তাঁর বাবা রাজেশ পাইলটের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে।
- FB
- TW
- Linkdin
উত্তরপ্রদেশের সাহরাণপুরে জন্ম শচীন পাইলটের। বাবা ছিলেন কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজেশ পাইলট, মা রমা পাইলট। দিল্লিতে এয়ার ফোর্স বাল ভারতী স্কুলে পড়াশোনা শেষ করে স্নাতক হন সেন্ট স্টিফেন্স কলেজ থেকে।
গাজিয়াদাবাদ আইএমটি থেকে মার্কেটিংয়ে ডিপ্লোমা করার পর এমবিএ করেন ফিলাদেলফিয়ার ‘হোয়ারটন স্কুল অফ দ্য ইউনিভার্সিটি অফ পেনসিলভেনিয়া’ থেকে।
পাশ করার পর চাকরিও করেছেন তিনি। প্রথমে ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন ও পরে মার্কিন সংস্থা জেনারেল মোটরসে ২ বছর চাকরি করেন তিনি।
জানা যায় শচীন কখনই রাজনীতিতে প্রবেশ করতে চাননি। তবে রাজেশ পাইলটের মৃত্যুর পরে তাঁকে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে হয়েছিল। ২০০৪-এ প্রথম লোকসভা নির্বাচনে লড়েন শচীন। মাত্র ২৬ বছর বয়সেই সাংসদ হন। তিনিই ছিলেন দেশের কনিষ্ঠতম সাংসদ।
জানা যায় শচীন কখনই রাজনীতিতে প্রবেশ করতে চাননি। তবে রাজেশ পাইলটের মৃত্যুর পরে তাঁকে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে হয়েছিল। ২০০৪-এ প্রথম লোকসভা নির্বাচনে লড়েন শচীন। মাত্র ২৬ বছর বয়সেই সাংসদ হন। তিনিই ছিলেন দেশের কনিষ্ঠতম সাংসদ।
তবে ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হতে পারেননি তিনি। সেই বছরই রাজস্থান প্রদেশে কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট হন। ২০১৮-তে বিধানসভা নির্বাচনে রাজস্থানের টংক থেকে জেতেন । অনেকেই ভেবেছিলেন এই তরুণ, মেধাবী নেতাকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ দেওয়া হবে। কিন্তু বর্ষীয়ান নেতা গেহলটকেই সেই পদ দেয় হাইকমান্ড। পাইলট হন উপমুখ্যমন্ত্রী।
আর এখান থেকেই ক্ষোভ দানা বাঁধতে শুরু করে শচীন পাইলটের মধ্যে। যেই বিষয়ে বাবা রাজেশ পাইলটের সঙ্গেও অবাক করা মিল রয়েছে তাঁর রাজনৈতিক জীবনের।
রাজনৈতিক কেরিয়ারের ১৬ তম বর্ষে রাজেশ পাইলট কংগ্রেস হাইকমান্ডের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। ঠিক একই রকমভাবে ২০০৪ সালে সাংসদ হওয়ার পর ২০২০ সালে বাবার মতো করেই কংগ্রেস হাইকমান্ডের বিরুদ্ধে আঙুল তুলেছেন শচীন।
দুধওয়ালার ছেলে থেকে প্রতিরক্ষাবিভাগের পাইলট। রাজেশ পাইলট রাজনীতিতি প্রবেশ করেই কংগ্রেস পার্টির ভিতরের গণতন্ত্র রক্ষার জন্য বারবার সরব হয়েছেন। ৪০ বছর মন্ত্রী হয়েছেন, ততদিনে দু'বার লোকসভা ভোট জয় হয়ে গিয়েছে তাঁর। ছেলে সচিনও সেই পন্থায় বিশ্বাসী। তবে বাবা যা ৪০ এ পেয়েছিলেন , সচিন তা ৩৫ করে দেখান।
এখন যেভাবে গান্ধী পরিবারের দিকে পরোক্ষে আঙুল তুলেছেন শচীন পাইলট, সেভাবেই এককালে নরসিমহা রাওয়ের বিরুদ্ধে সরব হন রাজেশ পাইলট। বারবার নরসিমহা বিরোধিতা, সেই সময় রহস্যময় ধর্মগুরু চন্দ্রস্বামীর তিহার জেলে বন্দি হওয়া রাজেশকে অনেকেরই চক্ষুশূল করেছিল।
রাজেশ পাইলট বহু সময়েই মুখ ফস্কে বহু মন্তব্য এমন করেছেন যা কংগ্রেসকে অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে। কিন্তু ছেলে শচীন অনেকটাই বুঝে শুনে চলা ব্যক্তিত্ব। বিদেশ থেকে পড়ে আসা শচীন নিজের রাজনৈতিক সিঁড়ি পোক্ত করেছেন রাজস্থানের মাটিতে তৃণমূল স্তরে কাজ করে। ২০১৮ সালে রাজস্থান বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের জয় রাজেশপুত্রর জন্যই।
অশোক গেহলট আর শচীনের বাবা রাজেশ পাইলট বহু আগে রাজস্থানে একসঙ্গে রাজনীতি শুরু করেন।কালের করুণ গ্রাসে রাজেশ পাইলট দুর্ঘটনায় মারা যান। এদিকে, আজ অশোক গেহলোট সেরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। আর তাঁরই বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেছেন শচীন।